রোববার   ১৯ অক্টোবর ২০২৫   কার্তিক ৪ ১৪৩২   ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১২

বিএনপিতে পিতা-পুত্র, জামায়াত-এনসিপিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০২৫  

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জমজমাট ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ-সাভারের একাংশ) আসনের প্রচার-প্রচারণা। মাঠে বেশি সরব বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থী। তারা গণসংযোগ-প্রচার চালাচ্ছেন বিভিন্ন কৌশলে। বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত না হলেও জামায়াত এক্ষেত্রে এগিয়ে। এনসিপিসহ অন্য দলগুলোর বিশেষ কর্মযজ্ঞ নেই।

সরেজমিনে ঢাকার এ আসনটির বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড, তোরণে ছেয়ে গেছে। ভোটারদের মধ্যেও দীর্ঘদিন পর ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রবল। আসনজুড়ে আপাতত আলোচনায় বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমানের ছেলে ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি ও জামায়াতের চূড়ান্ত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক হাসান।

 

 

ছেলে আলোচনায় থাকলেও আমানউল্লাহ আমানের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এলাকার সন্তান, সাবেক মন্ত্রী হওয়ায় ব্যক্তি হিসেবেও তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে, নবগঠিত দল এনসিপি থেকে প্রার্থী হতে পারেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এনসিপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন আরও দুজন। সবমিলিয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে এ আসনে।

বিএনপিতে পিতা-পুত্র, জামায়াত-এনসিপিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী

 

 

আমানপুত্র অমি ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা-২ আসনজুড়ে যেদিকে চোখ যায় তার বড় ব্যানার, ছবি ও পোস্টার চোখে পড়ার মতো।

জামায়াতের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক হাসান বুয়েটের সাবেক ছাত্র। এলজিইডির উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। তিনিও বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তোরণ, ফেস্টুন, ব্যানার তারও কম নেই। পাশাপাশি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক। নারীদের নিয়ে উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিতরণসহ কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াত।

জামায়াতের মূলনীতি আপনারা জানেন। আমরা জয়ী হলে দেশ থেকে চাঁদাবাজি-দুর্নীতি চিরতরে মুছে ফেলবো। গ্যাস এলাকার মূল সমস্যা, এটা নিরসন করবো। আমি নিজেই ইঞ্জিনিয়ার। সুতরাং, সড়ক অবকাঠামো ও সেতু নির্মাণ করবে।- জামায়াতের প্রার্থী তৌফিক হাসান

এনসিপির প্রচারণা সেভাবে না থাকলেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ যদি শেষ পর্যন্ত এ আসন থেকে নির্বাচন করেন তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও জমে উঠবে।

 

 

 

 

বিএনপিতে পিতা-পুত্র, জামায়াত-এনসিপিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী

আমানউল্লাহ আমানের চেয়ে পুত্র অমির সম্ভাবনা বেশি

এ আসনে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা ধরেই নিয়েছেন অমি বিএনপির টিকিট পাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি ফেসবুকে বিএনপির একটি খসড়া প্রার্থী তালিকা ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে আমানউল্লাহ আমানের নাম রয়েছে। এরপর থেকেই নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে কে প্রার্থী হবেন- পিতা আমান না পুত্র অমি।

প্রার্থী হবেন বলে এলাকায় ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন অমি। আসনটিতে বিএনপি বেশ তৎপর। বড় বড় ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে এলাকা। প্রচারণায় আমানউল্লাহ আমানের ছবি থাকলেও প্রার্থী হিসেবে অমিকেই সামনে রাখা হয়েছে।

 বিএনপিতে এখানে যে যাই বলুক আমানউল্লাহ আমানের কথাই শেষ কথা বলে মনে করেন কর্মী-সমর্থকরা। কলাতিয়া বাজারের ব্যবসায়ী ফয়সাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার এলাকায় আধুনিক উন্নয়ন মানেই মন্ত্রী সাহেব। বিএনপি মানেই মন্ত্রী সাহেব, মন্ত্রী সাহেব মানেই বিএনপি।’

বিএনপিতে পিতা-পুত্র, জামায়াত-এনসিপিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী

ইরফান অমি কেরানীগঞ্জ বটিয়াকান্দি হজরতপুরের বাসিন্দা। এলাকাটি বিএনপি অধ্যুষিত হিসেবে পরিচিত। আমানউল্লাহ আমান যাকে সমর্থন দেবেন তার পক্ষেই কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন সমর্থকরা। মো. জুলহাস বাবুর্চি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মন্ত্রী সাহেব (আমানউল্লাহ আমান) যা বলবেন তাই এ এলাকায় হবে। তবে শুনেছি ওনার ছেলে দাঁড়াবে। আবার শুনছি ফেসবুকে মন্ত্রী সাহেব টিকিট পেয়েছেন। তবে মন্ত্রী সাহেব এলাকার ছেলে। তিনি যাকে বলবেন ওনার পক্ষেই সবাই কাজ করবেন।’

 

কম বয়সে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হয়ে অনেকটা আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তরুণ এ আইনজীবী। এর আগে নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি আমানপুত্র। বিতর্কিত ওই ভোটে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী মো. কামরুল ইসলামের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। সেই নির্বাচনে কামরুল ইসলাম পান তিন লাখ ৩৯ হাজার ৫৮১ ভোট। আর অমি পান মাত্র ৪৭ হাজার ১৯৫ ভোট। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করা হয়েছিল।

আমরা এখানে সবাই কাজ করছি। আমাদের এখানে হাসনাত আব্দুল্লাহসহ তিনজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে সবাই তার পক্ষে কাজ করবো। জনগণের চাহিদা অনুসারে আমরা কাজ করছি।- এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য মো. ইমরান হোসেন

পরবর্তী প্রজন্মকে রাজনীতিতে সক্রিয় করতে আগেভাবেই ছেলেকে সামনে আনতে শুরু করেন আমানউল্লাহ আমান। ঢাকা জেলা বিএনপির কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়ে আমানপুত্রকে। ধীরে ধীরে ছেলেকে রাজনীতির লাইমলাইটে আনতে আইনজীবী পুত্রকে দলের পদ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

 

 

বিএনপিতে পিতা-পুত্র, জামায়াত-এনসিপিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী

সম্প্রতি অমিকে দলের সব কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে কেরানীগঞ্জের নেতাকর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। কর্মীর আহত হওয়ার খবরে ছুটে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। কেউ মারা গেলে তাদের বাড়িতেও ছুটে যেতে দেখা গেছে অমিকে। কোথাও আবার বাবার সঙ্গে একযোগে কর্মসূচি, নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর নিতে দেখা গেছে তরুণ এই রাজনীতিককে।

গণসংযোগ ছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য আলাদা কমিটি করেছে বিএনপি। সে অনুযায়ী দলটি কাজ করছে। এছাড়া প্রতিদিনই গণসংযোগ-কর্মিসভাসহ নানা ধরনের কর্মসূচি করছে দলটি। ইউনিয়ন-ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা ঢাকা-২ আসন পুনরুদ্ধারে কাজ করছেন। বিএনপির ইউনিয়ন-ওয়ার্ড অফিসগুলো নতুন করে সাজানো হয়েছে। নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বারবার ফোন করেও অমিকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

 

জামায়াত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকের প্রচারণায় সংস্কার-উন্নয়ন

এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ব্যবসায়ী, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ তৌফিক হাসান। তিনি বুয়েট ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা জামায়াতের রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক। এছাড়া ঢাকা জেলা জামায়াতের মজলিসে শুরার সদস্য। আঁটি ভাওয়ালের বাসিন্দা। বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীর বাসাও প্রায় কাছাকাছি।

বিএনপিতে পিতা-পুত্র, জামায়াত-এনসিপিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী

দুর্নীতি-চাঁদাবাজমুক্ত সমাজ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও গ্যাস সংকট নিরসনের কথা বলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াত। যোগাযোগ করা হলে জামায়াতের প্রার্থী তৌফিক হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা গণসংযোগ করছি। নারী ভোটারদের টানতে বৈঠক করছি। তবে সড়কে আমাদের পোস্টার ব্যানার কম। বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিতরণ করছি। আমাদের খরচ কম, অঢেল টাকা আমাদের নেই। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছি। ভোটারদের কাছ থেকে অনেক সাড়া পাচ্ছি। আমরা জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতের মূলনীতি আপনারা জানেন। আমরা জয়ী হলে দেশ থেকে চাঁদাবাজি-দুর্নীতি চিরতরে মুছে ফেলবো। গ্যাস এলাকার মূল সমস্যা, এটা নিরসন করবো। আমি নিজেই ইঞ্জিনিয়ার। সুতরাং, সড়ক অবকাঠামো ও সেতু নির্মাণ করব। ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ করতে বছিলাসহ তিনটি সেতু নির্মাণ করবো।’

এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ
ঢাকা-২ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এছাড়া এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য মো. ইমরান হোসেন, কেরানীগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. জাবেদও এনসিপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশাী। সবাই আলাদাভাবে কাজ করছেন। কেরানীগঞ্জে এলাকায় পথযাত্রা করা হচ্ছে ভোটারদের মনের কথা জানতে। এছাড়া বৃক্ষরোপণ, সুলভ মূল্যে পণ্য বিতরণ, বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনমূলক কাজ, রক্তদান কর্মসূচি, মেডিকেল ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে দলটি।

এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য মো. ইমরান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা এখানে সবাই কাজ করছি। আমাদের এখানে হাসনাত আব্দুল্লাহসহ তিনজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে সবাই তার পক্ষে কাজ করবো। জনগণের চাহিদা অনুসারে আমরা কাজ করছি।’

এলাকাবাসীর চাওয়া

নতুন করে সীমানা নির্ধারণের ফলে ঢাকা-২ আসনে রয়েছে কেরানীগঞ্জ উপজেলার তারানগর, কলাতিয়া, হজরতপুর, রুহিতপুর, শাক্তা, কালিন্দি ও ভাস্তা ইউনিয়ন। পাশাপাশি সাভার উপজেলার আমিনবাজার, তেঁতুলঝোড়া ও ভার্কুতা ইউনিয়ন। এ আসনের প্রধান সমস্যা গ্যাস সংযোগ থাকলেও দিনে গ্যাস থাকে না। সড়কের অবস্থাও বেহাল। অধিকাংশ মানুষ ঢাকায় আসেন নানান কারণে। সারাদিন অফিস করে পুনরায় ফিরে যান। কিন্তু ঢাকার প্রবেশদ্বার, বিশেষ করে বছিলা ব্রিজ থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা জটলায় আটকে থাকেন। তাই ঢাকার প্রবেশদ্বার জটলামুক্ত চান ঢাকা-২ আসনের বাসিন্দারা।

আঁটিবাজারের ফল ব্যবসায়ী জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন ব্যবসায়িক কাজে ঢাকার মিরপুরে যেতে হয়। কিন্তু বছিলা ব্রিজ থেকে মোহাম্মদপুর সড়কে ভয় লাগে। যেই জয়ী হোক আমরা চাইবো এই রাস্তাটা যেন ঠিক হয়।’

তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ সময় গ্যাস থাকে না। দিনে একেবারেই থাকে না। ফলে আমরা সিলিন্ডার দিয়ে রান্না করি, অন্যদিকে গ্যাসের মিটার খরচও দিতে হয়। আমরা এখন কোথায় যাবো।’

এলাকার মানুষ চাঁদাবাজ-দুর্নীতিমুক্ত সমাজ চান। ঘাটারচরের বাসিন্দা আবু আব্দুল্লাহ বলেন, ‘জামায়াতের লোক গোপনে কাজ করছে, বিএনপি ওপেনে। বিএনপি-জামায়াতের একটা ফাটাফাটি লড়াই হবে। আমরা চাঁদাবাজি-দুর্নীতি দেখতে চাই না।’

অনেকের দাবি, আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মগোপনে থাকলেও তাদের ভোটাররা রয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের ভোটাররা গোপনে কাকে ভোট দেন সেটাও একটা ফ্যাক্টর।

বিএনপিতে পিতা-পুত্র, জামায়াত-এনসিপিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী

ভোটের হিসাব-নিকাশ

১৯৯১ সাল থেকে চারটি নির্বাচনে অবিভক্ত কেরানীগঞ্জ আসনটি ছিল ধানের শীষের দখলে। এ আসনে প্রতিবারই বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতা আমানউল্লাহ আমান। আইনি জটিলতার কারণে তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুরু থেকে তিনিই একমাত্র বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। তবে কোনো কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে পরিবারের কেউ বিকল্প হিসেবে থাকবেন, তেমনটাই আলোচনা ছিল। সেক্ষেত্রে স্ত্রীর চেয়ে ছেলেকে এগিয়ে রাখেন সাবেক তুখোড় এই ছাত্রনেতা।

শেষ পর্যন্ত বাবা-ছেলে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও আইনি জটিলতায় আমানউল্লাহ আমানের মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। আপিল করেও তিনি তা ফেরত পাননি। পরে ছেলে অমি ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেন।

আমান ১৯৬২ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার কেরাণীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। এটি ঢাকা-২ আসনের অন্তর্গত। বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নানকে ছেড়ে দিয়ে তিনি ঢাকা-৩ আসনে নির্বাচন করেছেন এর আগে। এবার ঢাকা-৩ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তার ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের মতে, কঠিন সময়ে তিনি দলকে সংগঠিত রেখেছেন, হামলা-মামলার ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে থেকেছেন এবং কেরানীগঞ্জে বিএনপির ঘাঁটি ধরে রেখেছেন।

ফলে এবার ঢাকা-৩ ছাড়তে হবে আমানকে। লড়তে হবে ঢাকা-২ আসন থেকে। তার ছেলে অমি যদি মনোনয়ন পান তাকে এ আসন থেকেই লড়তে হবে।

১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমানউল্লাহ আমান বিএনপির মনোনয়নে ঢাকা-৩ আসন থেকে নির্বাচন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে পরাজিত করে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একদলীয় নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসনে ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৬ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের শাহজাহানকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নসরুল হামিদকে পরাজিত করেন।

 

 

মোট ভোটার
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ খসড়া ভোটার তালিকা অনুসারে ঢাকা-২ নির্বাচনী এলাকায় মোট ভোটার ৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৫ হাজার ২০৫ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯ জন।

এই বিভাগের আরো খবর