মঙ্গলবার   ১৪ মে ২০২৪   বৈশাখ ৩১ ১৪৩১   ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৭০২

পাসপোর্ট বিড়ন্বনায় খোকা পরিবার, খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০১৯  


দেশে ফেরা প্রসঙ্গে ছেলে ইশরাক হোসেন খোকা বলেন, আমরা খুবই বিভ্রান্তি ও হতাশার মধ্যে আছি। আব্বু-আম্মু কারোর পাসপোর্ট নেই। আব্বু আমাদের বলেছেন, দেশে ফেরার ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা করবেন না। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অথবা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো পদক্ষেপ নেবেন না।

খোকাকে নিয়ে অপাসপোর্ট বিড়ন্বনায় খোকা পরিবার, খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত পেলে পদক্ষেপ নেকেই ফেসবুকে মৃত্যু তার সংবাদ প্রচার করছে। কিন্তু খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন খোকা তার বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন। শনিবার সকালে তার নিজস্ব ফেসবুকে লিখেছেন, মরুণব্যাধি ক্যন্সারে আক্রান্ত আমার বাবা সাবেক সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন আছেন। দেশবাসীর কাছে ওনার সুস্থতা কামনা করে দেয়া চাচ্ছি। হায়াত মউত আল্লাহর হাতে। মৃত্যু নিয়ে লুকানোর কিছু নেই।

জানা গেছে, অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র খোকা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তারা সুস্থ হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হচ্ছে তাকে। চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

সংকটাপন্ন অবস্থায় খোকাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। কিন্তু খোকার পাসপোর্ট না থাকায় এই অবস্থায় দেশে আনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে তার পরিবার সদস্যরা জানিয়েছেন।

খোকার পরিবারের বরাত দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ঢাকার সাবেক মেয়রের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। খোকা ও তার স্ত্রীর পাসপোর্ট না থাকায় মৃত্যুর পর তার লাশ আনা নিয়ে দু:শ্চিন্তায় আছেন পরিবার।

খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন জানান, পুরো ফুসফুসে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে। অক্সিজেন দিয়ে তার বাবাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। লোকজন এলে কাউকে কখনও কখনও তিনি চিনতে পারছেন বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কিছুই বলতে পারছেন না। গত কয়েক দিন থেকে তার চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে।

তিনি জানান, তার বাবা চিকিৎসা নিচ্ছিলেন কিডনি ক্যানসারের। হঠাৎ করেই ফুসফুস আক্রান্ত হলে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। ইশরাক বলেন, আমরা খুবই বিভ্রান্তি ও হতাশার মধ্যে আছি। আব্বু-আম্মু কারো পাসপোর্ট নেই। এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।

জানা গেছে, ক্যানসার চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ৪মে ভিজিটর হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্রের যান সাবেক এই মেয়র।

নিউ ইয়র্কে চিকিৎসা শুরুর পর প্রতি সপ্তাহে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ধরনের থেরাপি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তাকে চিকিৎসকের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়েছে। সে কারণে লম্বা সময়ের জন্য নিউইয়র্ক ছেড়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ ছিলো না। কিন্তু ভিজিটর ভিসার নিয়মানুযায়ী প্রতি ছয় মাসের মধ্যে দু’চার দিনের জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যেতে হতো। কিন্তু ২০১৭ সালের শেষদিকে তার নিজের এবং সার্বক্ষণিক সঙ্গী স্ত্রী ইসমত হোসেনের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ওই অবস্থায় তারা নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেটে প্রয়োজনীয় ফি জমা দিয়ে পাসপোর্ট নবায়ন বা নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তাদেরকে পাসপোর্ট না দেওয়ায় এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে খোকা যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। তার সেই আবেদন এখনও নিস্পত্তি হয়নি। সর্বশেষ ৬মাস আগে ইসমত হোসেন সশরীরে কনস্যুলেটে গিয়ে পাসপোর্টের দায়িত্বে থাকা প্রথম সচিব শামীম হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তিনি পাসপোর্টের বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।

হাসপাতালে খোকার পাশে আছেন তার স্ত্রী ইসমত হোসেন, বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, মেয়ে সারিকা সাদেক, ছোট ছেলে ইশফাক হোসেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ১৮ অক্টোবর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৮ অক্টোবর তার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।

এই বিভাগের আরো খবর