ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম উদ্যাপন প্রাসঙ্গিকতা
ড. আবদুল আলীম তালুকদার
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২১

‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ বলতে রবিউস সানি মাসের এগারো তারিখের ফাতেহা শরীফকে বোঝায়। হিজরী ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানির এই দিনে তিনি ওফাত লাভ করেন। এই পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম শরীফ ইমামুল আউলিয়া পীরানে পীর গাউসুল আযম দস্তগীর হযরত মুহিউদ্দিন আবদুল কাদির জিলানীর (রহ.) স্মরণে পালিত হয়ে থাকে।
দিনটি মুসলিম বিশ্ব অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে পালন করে থাকেন। মুসলমানদের ধর্মীয় জীবনে বড়পীর (রহ.)এর আদর্শ ও আধ্যাত্মিক সাধনা চিরকাল অনুকরণীয়-অনুস্মরণীয়। তাঁর জীবনী ও কীর্তিগাথা মুসলমানদের হৃদয়ে চিরদিন জীবন্ত হয়ে থাকবে। একজন আদর্শ পুরুষ হিসেবে বিশ্ব জগতে মুসলমানদের কাছে গাউসুল আযম হযরত বড়পীর আবদুল কাদির জিলানী (রহ.)-কে পরম ভক্তি, শ্রদ্ধার সাথে চিরকাল স্মরণ করবে।
হিজরী ৫ম শতক মুসলিম জাহানের চরম দুর্দিনের যুগ। সমকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইসলামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে ধর্মীয় আলোচনা, বুদ্ধিবাদী ভাবধারার কারণে ধর্মীয় প্রেরণার ক্রমশ: নমনীয় ভাব, সম্পদের দ্রুত বৃদ্ধির ফলে উচ্চতর মহলের নৈতিক ও ধর্মীয় জীবনে ঔদাসীন্য, ইসলামি বুদ্ধিবাদের সংশয়াত্মক ভাবধারা খ্রিষ্টান সন্ন্যাসীদের মধ্যে শান্ত জীবনের অনুপস্থিতি মুসলিম জগতকে বিপর্যস্ত করে তুলে। জাতির এই চরম দুর্দিনের সময়ে জন্মগ্রহণ করেন মহিউদ্দিন আবদুল কাদির জিলানী (রহ.)। তিনি মুসলিম মিল্লাতের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধঃপতন রোধে কঠোর সংগ্রাম করেন। গ্রিক ও ভারতীয় অনৈসলামিক পরিবেশ থেকে ইসলামি ও তাসাউফকে উদ্ধার করে স্বকীয় মহিমায় ভাস্বর করে তুলেছিলেন। শরীয়তকে পুণরোজ্জীবিত করে তরিকত, হাকিকত, মায়ারিফাতের সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছিলেন। শতধা বিচ্ছিন্ন জাতির মধ্যে জাগিয়ে তুলেছিলেন ঐক্যের চেতনা।
মানব জাতিকে হেদায়েতের জন্য আল্লাহ্ পাক এ পৃথিবীতে যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। অন্যদিকে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অসংখ্য কামেল পীর, ওলী, দরবেশ, ফকীরও এ জগতে কত এসেছেন তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু সব পীর, ফকীর, দরবেশ, ওলীর সেরা ছিলেন হযরত আবদুল কাদির জিলানী (রহ.)।
আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর ওফাতের প্রায় পাঁচশত বছর পর ৪৭০ হিজরী সনে কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণ তীরবর্তী ইরানের পর্বত ঘেরা ‘জিলান’ শহরে হযরত আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সময়ে ইসলামের খুব নাজুক পরিস্থিতি চলছিল। মানুষ আল্লাহকে ভুলে বিভিন্ন কুসংস্কারে জড়িয়ে পড়েছিল। ঠিক সে সময়েই বড় পীর আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) মানুষকে এক আল্লাহর পথে আহবান করেন। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে তিনি সাধারণ মানুষকে আল্লাহওয়ালাতে পরিণত করেন।
এই মহান ব্যক্তির পিতা শায়েখ সাইয়্যেদ আবু সালেহ্ মুসা ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক ব্যক্তি এবং মাতা উম্মুল খায়ির ফাতেমাও ছিলেন পর্দানশীন পবিত্রা নারী।
শিশুকাল থেকেই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন আবদুল কাদির জিলানী (রহ.)। রমযানের ১ তারিখে জন্মগ্রহণ করায় ঐদিন হতেই তিনি রোযা পালন করেছেন বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। কথিত আছে, মায়ের কোলে থেকে শুনে শুনেই তিনি পবিত্র কুরআনের ১৮ পারা পর্যন্ত মুখস্ত করেছিলেন। অপর এক বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, তিনি মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় ১৮ পারা কুরআন মুখস্ত করেছিলেন। তবে প্রখর ধীশক্তি ও আল্লাহ প্রদত্ত প্রজ্ঞার ফলে তিনি খুব অল্প বয়সেই পূর্ণ কুরআন হিফ্জ করেন। সাত বছর বয়সকাল থেকেই নিয়মিতভাবে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন। একটা শান্ত-স্নিগ্ধ পবিত্রভাবে সর্বদা তিনি আচ্ছন্ন থাকতেন।
ছোটবেলা থেকে আবদুল কাদির জিলানীর (রহ.) মধ্যে সচ্চরিত্রতা ও খোদা প্রেমের গুণাবলী ফুটে ওঠে। তাঁর শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি হয়েছিল জ্ঞানবান পিতা ও পূণ্যবতী মাতার কাছে। তাঁদের মাধ্যমেই তিনি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা সমাপ্ত করেন। উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশে তিনি ১৮ বছর বয়সে বাগদাদ শরীফে গমন করেন। বাগদাদ গমনকালে তাঁর মা তাঁকে ৪০টি দিনার বগলের নীচে জামার কাপড়ে সেলাই করে দেন এবং উপদেশ দিয়ে বললেন, প্রিয় বৎস ! কখনও মিথ্যা কথা বলবে না। সর্বদা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করবে। মায়ের উপদেশ পালনের ওয়াদা করে তিনি বাগদাদের পথ ধরলেন; এ পথেই এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে।
বাগদাদ যাওয়ার পথে তাঁর কাফেলা হামাদান নামক স্থানে ডাকাতের কবলে পড়ে। দস্যুরা যাত্রীদের সবকিছু লুটে নিয়ে যায়। ডাকাতদের একজন তার কাছে কিছু আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি দৃঢ় কণ্ঠে জানান তার কাছে ৪০টি দিনার আছে। লুকানো মুদ্রা দেখে ডাকাতরা বলল, তুমি তো এর কথা স্বীকার না করলেও পারতে। তিনি ডাকাত দলের কথার উত্তরে বললেন, মা আমাকে মিথ্যা বলতে নিষেধ করেছেন, তাই আমি সত্য বলেছি। ডাকাত দল তার সত্যবাদিতায় মুগ্ধ হয়ে সব রকম অন্যায় কাজ ছেড়ে দিয়ে পরবর্তীতে খাঁটি মুসলমান হয়ে যায়।
তারপর বাগদাদ শরীফে শায়েখ আবু সায়ীদ ইবনে মুবারকের (রহ.) কাছে উপস্থিত হয়ে তার কাছে তিনি ইলমে হাদীসের উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। বাগদাদের প্রখ্যাত শায়েখ আবু যাকারিয়া তাবরেজীর (রহ.) নিকট তিনি সাহিত্যের উচ্চতর পাঠ গ্রহণ করেন। তার বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানচর্চার গুরু শায়েখ আবু সায়ীদ (রহ.) শিষ্যের যোগ্যতা ও প্রতিভা দেখে তাঁকে নিজের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার পরিচালক নিয়োগ করেন। আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) দীর্ঘদিন ইলমে হাদীস, ইলমে ফিক্হ ও ইলমে তাফসীর বিষয়ে অধ্যাপনা করেন। তাঁর কাছ থেকে কুরআন, হাদীস, ফিক্হ শিক্ষা গ্রহন করে সে সময় বহু আলেম তৈরী হয় এবং তাঁর সান্নিধ্যে থেকে বহু লোক আধ্যাত্মিকতা হাসিল করেন।
বড়পীর (রহ.) একাধিক্রমে ২৫ বছরকাল বাগদাদের গভীর অরণ্যে নির্জনে মুরাকাবা-মুশাহাদা ও কঠোর আধ্যাত্মিক সাধনায় কাটিয়েছেন। নিষিদ্ধ দিনগুলো ছাড়া সারা বছর তিনি সিয়াম (রোযা) পালন করতেন। এভাবে তিনি নিজ ইচ্ছা শক্তি, কর্মশক্তি ও চিন্তাশক্তিকে আল্লাহতে সমর্পণ করে তারই ইচ্ছায় সিদ্ধিতে নিজেকে বিলীন করে দিয়েছিলেন।
শরীয়ত ও মায়ারিফাতের পূর্ণতা অর্জন করার পর আবদুল কাদির জিলানী (রহ.) ইসলাম প্রচারের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। প্রথমে তিনি জনসভার আয়োজন করে ইসলামের বাণী প্রচার করতেন। ওয়াজ-নসীহতের পাশাপাশি তিনি জাহিরি ও বাতিনি তালিম দিয়ে গড়ে তোলেছিলেন শক্তিশালী মুবাল্লিগদল। ইসলামের সুমহান বাণী নিয়ে এদের প্রেরণ করতেন বিভিন্ন দেশে। তিনি ফুতুহুল গায়ব, গুনিয়াতুত্তালিবিন, কাসিদা-ই-গাউসিয়া, ফাতহুর রাব্বানী নামক গ্রন্থ রচনা করে ইসলামের ফিকহ ও তাসাউফের দু’ধারার সম্মিলন ঘটিয়েছিলেন। গ্রিক ও ভারতীয় প্রভাবমুক্ত করে তরিকতকে তিনি কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তির উপর সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
যাবতীয় ইসলামী আখলাকের অপূর্ব সমাবেশ ও বিকাশ ঘটেছিল তাঁর জীবনে। তাঁর মধ্যে মানুষে মানুষে কোন পার্থক্য ছিল না। আর্ত, পীড়িত ও দুর্গত মানুষের সেবা ছিল তাঁর চরিত্রের ভূষণ। তিনি বন্ধুবৎসল, বিনয়ী, মিষ্টভাষী ও অমায়িক চরিত্রের লোক ছিলেন। তিনি অত্যন্ত সরল জীবন যাপন করতেন, বিলাসিতা ও শান-শওকতকে কখনও পছন্দ করতেন না। ইসলামের খিদমতের জন্য তিনি যেসব কাজ করেছেন, সারা দুনিয়ার মুসলমানদের জন্য অনাগতকাল ধরে তা প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
- আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
- চট্টগ্রাম বন্দরে পুরোদমে চলছে পণ্য খালাস
- এনবিআরে পুরোদমে কাজ শুরু, স্বাভাবিক হচ্ছে দফতরের কার্যক্রম
- ইরান যুদ্ধ গাজায় জিম্মি মুক্তির পথ খুলে দিয়েছে: নেতানিয়াহু
- তুরস্কে দ্বিতীয় দিনে ভয়াবহ দাবানল
- রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
- কুমিল্লা ২ হোমনা মেঘনার যোগ্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আঃ মতিন খান
- সাবেক প্যানেল মেয়র মোঃ বাহার উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ দোয়া কামনা
- হবিগঞ্জে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন ক্যাম্পিং উদ্বোধন
- লিগ্যাল কনস্যুলেট ল`ফার্মের উদ্বোধন
- সচিবালয়ে কর্মচারীদের এক ঘণ্টার কর্মবিরতি
- গাছের সাথে ট্রেনের ধাক্কা বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচল যাত্রীরা
- প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে আজ বাংলাদেশে আসছে ভুটান দল
- ৬ অঞ্চলে নদীবন্দরে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত
- ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
- মুখের ব্রণ দূর করুন ঈদের আগেই যে চারটি কাজ করবেন
- প্রধান উপদেষ্টাকে জানানোর পর সিদ্ধান্ত: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
- বাংলাদেশের ম্যাচসহ আজকের খেলা টিভিতে
- চাঁদ দেখা গেছে : আমিরাতে ঈদ ৬ জুন
- জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোঃ হাশেম চৌধুরী
- জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোঃ হাশেম চৌধুরী
- চিতোষী ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষের জোরপূর্বক যোগদানের চেষ্টা
- সিলেটে বিষ্ফোরক আইনে ২৮৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- সিলেটে সাবেক মেয়র কাউন্সিলরসহ ১২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- ইত্যাদি এবার দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত ঝিনাইদহে
- মুন্সিগঞ্জ সদরে মার্কেটে হামলা ও অর্থ লুটপাটের অভিযোগ
- জুলাই আগস্ট হত্যা মামলায় পলাতক আসামি আশরাফুলকে খুঁজছে পুলিশ
- গোয়াইনঘাট প্রবাসী সমাজকল্যাণের অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগ
- একাধিক মামলার পলাতক আসামি সেলিম আহমদকে খুঁজছে পুলিশ
- জমি জমার বিরোধের জেরে হামলা আহত ৪
- সাবেক প্যানেল মেয়র মোঃ বাহার উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ দোয়া কামনা
- কুমিল্লা ২ হোমনা মেঘনার যোগ্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আঃ মতিন খান
- তুরস্কে দ্বিতীয় দিনে ভয়াবহ দাবানল
- রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
- ইরান যুদ্ধ গাজায় জিম্মি মুক্তির পথ খুলে দিয়েছে: নেতানিয়াহু
- এনবিআরে পুরোদমে কাজ শুরু, স্বাভাবিক হচ্ছে দফতরের কার্যক্রম
- চট্টগ্রাম বন্দরে পুরোদমে চলছে পণ্য খালাস
- আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
- ইসলামে যে ১৪ নারীর সঙ্গে বিবাহ হারাম!
- আরবি মাসের নাম এবং তার অর্থ
- জেনে নিন কোরআনে চুমু দেয়া কি জায়েজ?
- মদের বোতলে রাখা পানি পানের বিধান কী?
- মোনাজাতে কান্না করলে কি গুনাহ হবে?
- নারীর গোপন ভিডিও বা ছবি নিয়ে ইসলাম যা বলে
- প্রাকৃতিক দুর্যোগে করণীয় আমল
- তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ
- দ্বন্দ্বের অবসান, ফেব্রুয়ারিতে একসঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা
- যেভাবে কবর জিয়ারত করবেন
- মদিনা শরিফের ইমাম শায়খ আব্দুল কাদিরের ইন্তেকাল
- ঝুলন্ত মসজিদ হবে কাবার পাশে
- আজ খুলছে রাসূলুল্লাহ (সা.) রওজা মোবারক
- শরীরে ট্যাটু আঁকা হারাম
- মসজিদে নববীর আদর্শ ও আমাদের মসজিদ