শনিবার   ১৭ মে ২০২৫   জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩২   ১৯ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪১০

রাজধানীর মাইন্ড এইড হাসপাতালে তালা, পরিচালক গ্রেপ্তার

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২০  

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া হাসপাতালের পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এনিয়ে মোট ১১ জনকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হলো। তাদের মধ্যে হাসপাতালের ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

 মঙ্গলবার বিকেলে আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অবস্থিত হাসপাতালটি পরিদর্শনে আসেন তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ। এ সময় তার নির্দেশে পুলিশ হাসপাতালটির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। অপরদিকে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এডিসি মৃত্যুঞ্জয় দে সজল জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর নিউরো সাইন্স হাসপাতাল এলাকা থেকে নিয়াজ মোর্শেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। 
প্রসঙ্গত, সোমবার রাজধানী আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপনকে ভর্তির কিছু সময় পরই তার মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, ওই হাসপাতালে ভর্তির পরই সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সেই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর নীল পোশাক পরা আরও দুজন কর্মচারী তার পা চেপে ধরেন। এসময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই তার শরীর নিস্তেজ ছিল। একজন কর্মচারী তখন তার মুখে পানি ছিটান। তাতেও আনিসুল করিম নড়াচড়া করছিলেন না। তখন কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পরিষ্কার করেন। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তার বুকে পাম্প করেন, সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন তিনি। পারিবারিক জটিলতায় কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। রাতে ওই হাসপাতালে গেলে কোনও কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরে তার নিজ বাসভবনে আনিসুল করিমকে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর