মঙ্গলবার   ০৪ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ২০ ১৪৩২   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৯

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অনড় বিএনপি-জামায়াত, অস্পষ্ট অবস্থানে এনসিপি

তরুণ কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২৫  

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের সময়সূচি নিয়ে দেশের রাজনীতি এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ দলগুলোর মধ্যে দ্রুত আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।

 

সোমবার উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে দলগুলোকে এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। সময়সীমার মধ্যেও ঐকমত্য না হলে সরকার নিজস্বভাবে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে।

 

বিএনপি ও জামায়াত বলেছে, সরকার বা প্রধান উপদেষ্টা রেফারির ভূমিকা পালন করলে তারা আলোচনায় বসতে রাজি। অপরদিকে এনসিপি বলছে, সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ দিতে হবে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও রাজনৈতিক সমঝোতাই এখন সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ।

 

এর আগে ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে ৮৪ দফা প্রস্তাবের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি হয়। ২৫টি দল এতে স্বাক্ষর করলেও, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ভিন্নমত দেখা দেয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ প্রকাশের পর। কমিশন ৪৮টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধনের কথা বলেছে এবং গণভোটে একটিমাত্র প্রশ্ন রাখার সুপারিশ করেছে।

 

জামায়াত ও এনসিপি এ সুপারিশকে ইতিবাচক দেখলেও, বিএনপি একে ‘জাতির সঙ্গে প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছে। বিএনপির দাবি, এত বড় সাংবিধানিক সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া অনুচিত।

 

অন্যদিকে জামায়াত নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন এবং সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এ দাবিতে তারা ও সমমনা আটটি দল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে।

 

এনসিপি অভিযোগ করেছে, সরকারের ভেতরের একটি অংশ সংস্কার প্রক্রিয়াকে বানচালের চেষ্টা করছে। তাদের দাবি, “সরকার সাপ-লুডু খেলছে,” এবং দ্রুত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করে নতুন সংসদকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বলেন, “সংস্কার ও গণভোট নিয়ে দলগুলোর মধ্যে বিভাজন আরও তীব্র হচ্ছে। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা না হলে অনিশ্চয়তা দীর্ঘস্থায়ী হবে। দলগুলোকে এখনই ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে, নইলে জুলাই আন্দোলনের চেতনা হারিয়ে যাবে।”
 

 

এই বিভাগের আরো খবর