মঙ্গলবার   ০৪ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ২০ ১৪৩২   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৬

তিতুমীর কলেজে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব, অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

সাদিকুল ইসলাম সাদিক, তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২৫  

​পরিচ্ছন্নতার অভাবে তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাস মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

 

​রাজধানীর যানজট ও গাড়ির হর্নে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা, দিনশেষে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে একটু বিশ্রামের জন্য ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডায় মেতে ওঠে, কিন্তু ক্যাম্পাসের মশার উপদ্রবে বিশ্রাম হয়ে ওঠে অশান্তির। এই উপদ্রব কেবল শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবন ও পড়ালেখাকে ব্যাহত করছে না, বরং ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

​মশা শুধু ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ নয়, দিনের বেলাও ক্লাসরুমগুলোকে আস্তানা বানিয়েছে, যার কারণে শিক্ষার্থীরা বইয়ের দিকে মনোযোগী না হয়ে মশা তাড়াতে ব্যস্ত। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্লাসরুমের পাশের ড্রেনগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে অপরিষ্কার থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, তাই ড্রেনগুলো মশা তৈরির কারখানায় রূপ নিয়েছে।

 

​সাম্প্রতিক ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠেছেন মো: হাবিব নামের এক শিক্ষার্থী। ডেঙ্গুর কারণে দীর্ঘদিনের অসুস্থতার কথা জানতে চাইলে হাবিব বলেন, "আমি নিয়মিত ক্লাস করতাম। বিশেষ করে বিকালবেলাটা আমি সব সময় ক্যাম্পাসের ভেতরে একা বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতাম। ক্লাসের ভিতরে মশার কামড় ক্লাসে মনোযোগ নষ্ট করত, যার কারণে মাঝে মাঝে অনেক খারাপ লাগত। তবে সন্ধ্যার দিকে ক্যাম্পাসের ভেতরে অতিরিক্ত মশা একদম অস্বস্তি সৃষ্টি করত। বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডার তালে এই বিষয়ে তেমন মনোযোগ দিতাম না। এভাবে মোটামুটি অনেক দিন চলে যায়, তবে একদিন হঠাৎ উচ্চমাত্রার জ্বর লক্ষ্য করি। প্রথমে ঠাণ্ডাজনিত কারণ মনে হলেও পরবর্তীতে ডাক্তারের কাছে গেলে জানতে পারি ডেঙ্গু হয়েছে। একদিকে যেমন মনের ভয়, অন্যদিকে দিন দিন ডেঙ্গু গুরুতর রূপ নিচ্ছিল। প্রচন্ড মাথাব্যথা, ক্লান্তি, দুর্বলতা, তীব্র পেটে ব্যথা, বমি আমাকে প্রায় মৃত্যুশয্যায় নিয়ে গিয়েছিল। প্রায় ১৫ দিন পর আমি এটা থেকে নিস্তার পাই। আমি চাই কেউ যেন এই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হয়। সেই সাথে আমাদের সকলকে সচেতন থাকা উচিত। আমি জোর দাবি জানাচ্ছি যেভাবেই হোক আমাদের ক্যাম্পাসকে সব সময় পরিচ্ছন্নতার মধ্যে রাখতে হবে।"

 

​ক্যাম্পাসের অপরিচ্ছন্নতা, অতিরিক্ত মশার কারণ ও পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে, অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমদ বলেন, "আমরা এই পর্যন্ত ৪ জন দ্বারা পরিষ্কার করিয়েছি। সপ্তাহে একবার মশা মারার ওষুধ (স্প্রে) দেওয়া হয়। প্রয়োজনে সপ্তাহে ২ বার দেওয়া হবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদেরকে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালাতে হবে।"

 

এই বিভাগের আরো খবর