মঙ্গলবার   ১৯ আগস্ট ২০২৫   ভাদ্র ৩ ১৪৩২   ২৪ সফর ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৬৬৮

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেশাগ্রস্থ দালালদের উৎপাতে রোগীরা অতিষ্ঠ

নুরুজ্জামান শেখ, শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২০  

শরীয়তপুর ১০০শয্যা সদর হাসপাতালে নেশাগ্রস্ত দালালদের কারণে অতিষ্ঠ রোগীরা। গণমাধ্যমকে এমনটাই জানালেন সদর হাসপাতালে ভর্তিকৃত ভুক্তভোগী রোগীরা। গত ৪ অক্টোবর ২০২০সকাল ১০ ঘটিকার সময় শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে ওই সময়ে জরুরি বিভাগে এবং ডাক্তারদের অফিস কক্ষের সামনে আট থেকে দশজন দালাল দেখা গেছে এদের মধ্যে কয়েকজন দালাল নেশাগ্রস্থ অবস্থায় ছিল।

গোপন সূত্রে জানা গেছে রাতে এবং দিনে সদর হাসপাতালে সব সময় আট থেকে দশজন জরুরী  বিভাগে দালাল থাকে । এই দালাল চক্র টি শরীয়তপুর সদরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ক্লিনিকে কমিশন হিসেবে কাজ করে।গোপন সূত্রে জানা গেছে এ দালাল চক্রের সাথে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার ও কর্মচারী জড়িত রয়েছে। শরীয়তপুর সদর প্রাণকেন্দ্রে ব্যাঙের ছাতার মতন বিভিন্ন নামে ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার ও কর্মচারী তাদের আত্মীয় স্বজন আপন ভাই বোন ও স্ত্রীর নামে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে তুলেছে। হাসপাতালে ডাক্তার ও কর্মচারী এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক এর সহযোগিতায় দালাল চক্র বিভিন্নভাবে হাসপাতালের রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে হয়রানি করে আসছে। হাসপাতালে মাদক নেশাগ্রস্থ দালালদের কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটছে চুরি এবং ভর্তিকৃত রোগীদের কখনো মোবাইল মানিব্যাগ টাকা চুরি হচ্ছে। নেশাগ্রস্ত চিহ্নিত দালাল রা হলেন জসিম, তৌহিদ, ইকবাল এরা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রতিদিন রাতে ৫ থেকে ৭জন চিহ্নিত দালাল থাকে , তাদের মধ্যে অত্যন্ত দুরন্ত চালাক ক্লিনিকের সবচেয়ে বড় দালাল এবং দালালচক্রের প্রধান পিকু তালুকদার , মুন্না, নাসির, তৌহিদ , কিরণ সহ আরো নাম না জানা অনেক দালাল রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য অপেক্ষা করে,  ডাক্তার কখন রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য প্রেসক্রিপশন করেন সেই আশায় দালালরা চেয়ে থাকে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের   কর্তব্যরত ডাক্তাররা জিজ্ঞেস করে তাদের আর্থিক অবস্থা কি?  যদি ভাল হয় তাহলে তাদেরকে একগাদা পরীক্ষা-নিরীক্ষা টেস্ট ধরিয়ে দেন, আর যদি তাদের অবস্থা ভালো না হয় তাহলে তাদেরকে স্বল্প পরীক্ষা নিরীক্ষার সিলিপ, ডাক্তারদের সই ও সিল ছাড়া প্রেসক্রিপশন রোগীদের হাতে ধরিয়ে দেন। সদর হাসপাতালে টেস্ট প্রেসক্রিপশন এ কর্তব্যরত ডাক্তারদের তাদের  শীল ও স্বাক্ষর না থাকার কারণে দালালদের কাছে ভর্তিকৃত রোগীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছে।সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আব্দুল্লাহ মাঝেমধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দালালদের ধরিয়ে দিতো। করোনাকালীন সময়ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাঝেমধ্যে অসাধু দালালদেরকে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এদেরকে আর্থিক জরিমানা করে এবং জেলহাজতে পাঠাতেন। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সচেতন রোগীরা বলেন হাসপাতালকে দালাল মুক্ত করতে হবে এবং রোগীদের প্রতি সহানুভূতি হতে হবে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মুনির আহমেদ এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি গণমাধ্যমকে জানান হাসপাতালে দালালদের আমি তেমন ভাবে চিনি না । আমি হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ক্লিনিক এর সকল মালিকদের ডেকে এনে তাদেরকে বলেছিলাম আপনাদের কোনো বাণিজ্যিক সোর্স বা দালাল থাকলে হাসপাতালের ভিতরে থাকতে নিষেধ করবেন এবং তারা যেন সদর হাসপাতালের  বাহিরে থাকে।আর যদি আপনাদের এই বাণিজ্যিক দালালরা হাসপাতালের  ভিতরে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরো খবর