রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৩০ ১৪৩২   ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩২

ভোল পাল্টে স্বাধীনতাবিরোধীরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভান করছে

রাফিউল ইসলাম তালুকদার

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫  

বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির ওপর আস্থা রাখার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার মতে, যে রাজনৈতিক শক্তি একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তারা আজ নতুন মুখোশ পরে আবার সামনে আসছে, কিন্তু দেশের মানুষ তাদের বিশ্বাস করবে না।

 

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে আমার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে, তাকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ থাকতে পারে আমি অন্তত মনে করি না।’

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। অথচ সেই অর্জনের বিরোধিতাকারীরা এখন ভোল বদলে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। মির্জা ফখরুলের ভাষায়, ‘আমরা লড়াই করে, যুদ্ধ করে একটা স্বাধীন ভূখণ্ড এনেছি। যার ফলে আমরা এখানে বেঁচে আছি, টিকে আছি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি অতীতেও ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে এবং এখনও একই কৌশল অবলম্বন করছে। তিনি বলেন, ‘এই জন্য যে সেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, এই শক্তি আজকে আবার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে সেই ধর্মের নামে। ১৯৭১ সালেও কিন্তু সে ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল।’

 

১৯৪৭ ও ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৪৭ সালে এই শক্তি সেদিন পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। এই শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। আজকে সেই শক্তি ভোল পাল্টে, চেহারা পাল্টে তারা কিন্তু এমন ভাব দেখাচ্ছে যে তারাই নতুন বাংলাদেশ করতে পারবে।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। 

 

মির্জা ফখরুল বলেন, সত্য ও সংগ্রামের পথেই শেষ পর্যন্ত বিজয় আসে। ষড়যন্ত্র দিয়ে কোনো জাতিকে দমিয়ে রাখা যায় না।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ঐক্যের মাধ্যমেই একটি গণতান্ত্রিক ও উদার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দর্শন এবং তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানান তিনি।

 

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচন মূলত দুই ধারার মধ্যে লড়াই- একদিকে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী ও পশ্চাৎপদ শক্তি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্মের নামে বিভাজন কিংবা জোর করে কোনো আদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা এ দেশের মানুষ কখনো গ্রহণ করেনি।

 

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং বিএনপির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন।

 

এই বিভাগের আরো খবর