শুক্রবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫   আশ্বিন ৪ ১৪৩২   ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৫

ভরা মৌসুমেও পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের আকাল, জেলেদের দুশ্চিন্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫  

ভরা মৌসুমেও পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের আকাল, জেলেদের দুশ্চিন্তা

ভরা মৌসুমেও শরীয়তপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না। সারাদিন নদীতে জাল ফেলেও জেলেদের জালে ধরা পড়ছে অল্প কিছু ছোট ইলিশ। এতে ঋণ আর দাদনের বোঝায় জর্জরিত জেলেরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

ইলিশ উৎপাদনে পতন

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে—

  • জেলায় নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা: ৩৫ হাজার ২৭৪ জন

  • তিন বছর আগে উৎপাদন: ৪,৫২৮ মেট্রিকটন

  • বর্তমানে উৎপাদন: ৪,০০১ মেট্রিকটন

প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে:

  • জলবায়ু পরিবর্তন

  • নদীতে দখল ও দূষণ

  • ডুবোচর জমে ওঠা

বাজারে ইলিশের দাম

শরীয়তপুরের বিভিন্ন আড়ত ও বাজারে এখনো আগের মতো ইলিশ নেই। যেগুলো মিলছে, সেগুলোর দাম অনেক চড়া।

  • বড় ইলিশ (১-১.৫ কেজি): প্রতি কেজি ২,০০০–২,৫০০ টাকা

  • মাঝারি ইলিশ (অর্ধ কেজি): ১,০০০–১,২০০ টাকা

  • ছোট ইলিশ (হালি): ৩৫০–৭৫০ টাকা

এ কারণে সাধারণ মানুষ এখন আর সহজে ইলিশ কিনতে পারছেন না।

জেলেদের হতাশা

জেলেদের অনেকে বলেন—

  • প্রশাসন মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় কঠোর ভূমিকা রাখতে পারছে না।

  • ঋণ নিয়ে জাল ও নৌকা কিনলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় দেনার বোঝা বাড়ছে।

  • নদী খনন না হওয়ায় ইলিশ আর আগের মতো নদীতে আসছে না।

গোসাইরহাটের জেলে মাইনুদ্দিন বলেন, “মহাজনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। কিন্তু প্রতিদিন সামান্য মাছ পেয়ে খরচও ওঠে না। সরকার যদি সহযোগিতা না করে, বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।”

আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের দাবি

আড়তদারদের মতে, ইলিশের জোগান কম থাকায় বাজারে দাম বেড়েছে। সঠিকভাবে অভিযান পরিচালনা না হওয়ার কারণে উৎপাদন কমছে। তাই ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

প্রশাসনের বক্তব্য

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন ও দখল–দূষণের কারণে ইলিশ উৎপাদন কমছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জেলেদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা চলছে।

এই বিভাগের আরো খবর