শনিবার   ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ২১ ১৪৩২   ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩০৯

ঘুম নিয়ে যে ধারণাগুলি ঠিক নয়

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০১৯  

শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি। তবে ঘুম সম্পর্কে ব্যাপকভাবে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। গবেষকরা বলছেন, এগুলো আমাদের স্বাস্থ্য এবং মেজাজের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি আয়ুও কমিয়ে দিচ্ছে। 

সম্প্রতি নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল, রাতে ভাল ঘুমের ব্যাপারে সর্বাধিক প্রচলিত ধারণা বা দাবীগুলো ইন্টারনেট থেকে খুঁজে বের করে। তারপর তারা সেই দাবীগুলোকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণের সাথে মেলান এবং স্লিপ হেলথ জার্নালে সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়।

যে ধারণাগুলি ঘুমের ক্ষেত্রে ঠিক নয় -

১. পাঁচ ঘণ্টারও কম সময় ঘুমিয়ে সুস্থ থাকা যায় এই ধারণা ঠিক নয়। গবেষকরা বলছেন, পাঁচ ঘণ্টারও কম সময় ঘুমানো স্বাস্থ্যকর বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে সেটা  স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

এ বিষয়ে গবেষক দলের একজন ড. রেবেকা রবিনস বলেন, ‘দিনের পর দিন পাঁচ ঘণ্টা বা তারও কম সময় ঘুমানো যে স্বাস্থ্যর ভয়াবহ ঝুঁকি অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়, তার ব্যাপক প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে’। তিনি জানান,কম ঘুমানোর কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। 

তার মতে, সবার প্রতিরাতে একনাগাড়ে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর লক্ষ্য থাকা উচিত।

২. বিছানা যাওয়ার আগে অ্যালকোহল পান করলে ভাল ঘুম হবে এমন ধারণা অনেকেরই আছে।গবেষকরা বলছেন, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তাদের মতে, ঘুমের আগে অ্যালকোহল পান করলে ঘুমের প্রাথমিক পর্যায়, অর্থাৎ যে সময়ে চোখের দ্রুত নড়াচড়া কমে আসতে থাকে সেই স্তরটি বাঁধাগ্রস্ত হয়।অথচ ঘুমের এই পর্যায়টি স্মৃতিশক্তি ও শেখার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

৩. অনেকে ঘুম না এলে রাত জেগে টিভি দেখেন। গবেষকদের মতে, এই রাত করে টিভি দেখা আপনার ঘুমের জন্য খারাপ হতে পারে। গবেষক দলের একজন ড. রবিনস যুক্তি, ‘রাতে টিভি দেখলে অনেকসময় খবর দেখা হয়। এতে করে মানসিক চাপ তৈরি হয়। তখন ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে’। 

টিভির পাশাপাশি স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট থেকে নির্গত নীল আলোও ঘুমের হরমোন মেলাটোনিনের উৎপাদনকে বিলম্বিত করতে পারে।

৪. ঘুমানোর অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও যদি ঘুম না আসে তাও অনেকে বিছানায় শুয়ে থাকেন। এ বিষয়ে ড. রবিনস বলেন, ‘একজন সুস্থ মানুষের বিছানায় যাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘুম চলে আসে। যদি ঘুম আসতে এর চেয়ে বেশি সময় লাগলে, অবশ্যই বিছানা ছেড়ে দিতে হবে। এরপর পরিবেশ বদলে দিতে হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘এমন কাজ করতে হবে যেখানে মস্তিষ্কের তেমন কিছু ভাবতে হবেনা। যেমন- মোজা ভাজ করা’।

৫. অনেকেই তাদের ফোনে একাধিক সময়ে স্নুজ টাইমার সেট করাটাকেই স্বাভাবিক মনে করেন।কিন্তু গবেষক দল বলছেন, যখন অ্যালার্ম বন্ধ হয়ে যায়, তখনই আমাদের উঠে যাওয়া উচিত।

ড. রবিনস বলেন, ‘প্রথম অ্যালার্ম বাজার পর স্নুজ দিয়ে আপনার শরীর হয়তো আবার ঘুমিয়ে পড়বে। তবে সেই ঘুম হবে অনেক নিম্নমানের পাতলা ঘুম্’।

৬. অনেকের মতে, ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, এটি স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগের একটি লক্ষণও হতে পারে। তাদের মতে, এই রোগের কারণে আমাদের গলায় যে দেয়াল আছে সেটা ঘুমের সময় শিথিল এবং সংকীর্ণ হয়ে যায়। যার কারণে মানুষ অল্প সময়ের জন্য শ্বাস নিতে পারেনা। এ ধরণের মানুষেরা উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন এমনকি হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকিতে থাকে। তাই নাক ডাকা যদি খুব জোরে হয় তাহলে সতর্ক হতে হবে। সূত্র : বিবিসি

এই বিভাগের আরো খবর