শুক্রবার   ১২ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ২৮ ১৪৩২   ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho

কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি বন্ধ মেট্রোরেল চলাচল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫  

আজ (১২ ডিসেম্বর) ঢাকায় মেট্রোরেলে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলায় রাজধানীজুড়ে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী উত্তরা থেকে বিকেল ৩টা এবং মতিঝিল থেকে ৩টা ২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও কোনো স্টেশনেই ট্রেন চালু হয়নি, ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

 

বিকেল পৌনে চারটার দিকে শেওড়াপাড়া স্টেশনে গিয়ে মেট্রো না পেয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন মাহাবুবুর রহমান রাব্বি, নামে এক যাত্রী। তিনি জানান, স্টেশনের সিঁড়ির সামনে কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলছে, ভেতরে ঢোকার উপায় নেই। বাইরে রাস্তাজুড়ে অপেক্ষায় অসংখ্য মানুষ, কিন্তু পর্যাপ্ত যানবাহন নেই। বাস, সিএনজি বা অ্যাপ রাইড কিছুই না পেয়ে তিনি শেষমেশ অতিরিক্ত ভাড়ায় একটি রিকশা নিয়ে কারওয়ান বাজার পৌঁছান।

 

মেট্রোরেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা প্রণয়নে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে সকাল সাতটা থেকেই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। এর ফলে যাত্রীসেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল।

 

যদিও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে জানিয়েছিল যে শুক্রবার মেট্রোরেল স্বাভাবিক সময়সূচি অনুযায়ী চলবে। তবে আন্দোলনকারীরা সে নির্দেশ মানেননি।


ডিএমটিসিএলের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষ দাবি পূরণে অগ্রসর হয়েছে, কিছু প্রক্রিয়া বাকি। তা সত্ত্বেও যাত্রীসেবা বন্ধ করে দেওয়া দুঃখজনক। বিষয়টি এখন সরকারের পর্যবেক্ষণে আছে।

 

সংস্থার সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার থেকেই আন্দোলনকারীরা উত্তরার দিয়াবাড়ীর প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রতি আশ্বস্ত করা হয় যে ১৮ ডিসেম্বরের বিশেষ বোর্ড সভায় স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। অধিকাংশ কর্মচারী আশ্বাস গ্রহণ করলেও, কেউ কেউ শুক্রবারের মধ্যেই তা অনুমোদনের দাবি তোলেন।

 

রাতেই আন্দোলনকারীরা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ঘোষণা করেন, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে চাকরি বিধিমালা অনুমোদন না হওয়ায় শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে এবং যাত্রীসেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।

 

শুক্রবার সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন। ডিএমটিসিএলের এমডি ও কর্মকর্তারা এসে আলোচনার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা তাৎক্ষণিক অনুমোদনের দাবিতে অনড় থাকেন। যাত্রীসেবা বন্ধ করে দেওয়াকে কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে গুরুতর অনিয়ম হিসেবে বিবেচনা করছে এবং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় আছে।

 

সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দাবি-দাওয়ার আন্দোলনে রাস্তায় নামলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।


 

এই বিভাগের আরো খবর