শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৫ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৯৮

রাতপোহালেই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন রোহিঙ্গাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৮  

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আগামীকাল ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসনের প্রথম দফা শুরু হচ্ছে। প্রথম ব্যাচে ৪৮৫ পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় অবস্থানরত রোহিঙ্গা শিবির থেকে তাদের নিজেদের বসতভূমি মিয়ানমারে ফিরে যাবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুই দেশের মধ্যে গঠিত যৌথ কমিটির সবশেষ বৈঠকে আগামী ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসনের প্রথম ব্যাচ শুরু করার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। প্রথম ব্যাচে ৪৮৫ পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গা মিয়ানমার ফিরে যাবে।

এর আগে ঢাকাকে নেপিডোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এরই মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় মিয়ানমার ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের বসবাসের জন্য ভারত সরকার ২৮৫টি বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে। আর চীন সরকার ১ হাজার বাড়ির কাঠামো পাঠিয়েছে, যেগুলো সংযোগ করলেই পূর্ণ বাড়িতে রূপ নেবে।

অন্যদিকে দুই দেশের সীমান্তের শূন্য রেখায় যে সকল রোহিঙ্গা বসবাস করছেন তাদের ফিরিয়ে নেয়ার কাজও দ্রুত শুরু হচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) শূন্য রেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে সঙ্গে নিয়ে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। শূন্য রেখায় বসবাসকারীরা তাদের আগের বসতভিটায় সরাসরি ফেরত যাবে।

জানা যায়, প্রত্যাবাসনের অংশ হিসেবে প্রথম দফায় ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফেরত পাঠানো হবে। এ জন্য রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে ৪৮৫টি পরিবারকে বাছাই করা হয়েছে। বাছাইকৃত পরিবারের সদস্যদের তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে তাদের শনাক্তকরণের কাজও শেষ। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু করা বাকি।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেন, ‘সরকার হয়তো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু করতে পারে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ সফরে আসেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন থোয়ে। ওই সময় তিনি কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের প্রথমে মংডু শহরে স্থাপিত আইডিপি ক্যাম্পে নেয়া হবে। সেখানে তারা পাঁচ মাস থাকবে। এরপর নিজেদের গ্রামে ফেরত যেতে পারবে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মানবিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে উভয় দেশ ঐকমত্যে পৌঁছে স্মারকটিতে স্বাক্ষর করেছিল। সেই স্মারকের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মিয়ামারের কাছে ৮ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পাঠায়। যাচাই-বাছাই শেষে মিয়ানমার ওই তালিকা থেকে ৫ হাজার ৫শ জনকে প্রত্যাবাসনের ছাড়পত্র দেয়। সেই ছাড়পত্রের মধ্য থেকে ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে চায় বাংলাদেশ।  

এই বিভাগের আরো খবর