বুধবার   ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১৭ ১৪৩২   ১১ রজব ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১১

মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জানাজা: লাখো মানুষের অশ্রুসিক্ত বিদায়

তরুণ কণ্ঠ প্রতিবেদন

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫  

এক ঐতিহাসিক ও শোকাতুর মুহূর্তের সাক্ষী হলো বাংলাদেশ। দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সম্পন্ন হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, জনসমুদ্রের দিক থেকে এটিকে মুসলিম বিশ্বের স্মরণকালের অন্যতম বৃহৎ জানাজা হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

 

বিকেল ৩টা ৩ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রিয় নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে এদিন রাজধানী ঢাকা পরিণত হয়েছিল এক মহাসমুদ্রে।

 

 

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আয়োজিত এই জানাজায় অংশ নেন দেশের শীর্ষব্যক্তিবর্গ ও বিদেশি কূটনীতিকরা।

 অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ। তিন বাহিনীর প্রধানগণ। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতারা এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও উচ্চপদস্থ কূটনীতিকরা জানাজায় উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

 

 

বেগম জিয়ার প্রয়াণে আন্তর্জাতিক মহলেও গভীর শোকের ছায়া লক্ষ্য করা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর আজ দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে দেশটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা হস্তান্তর করেন। প্রিয় নেত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক আজই ঢাকা পৌঁছেছেন। পাকিস্তান হাইকমিশন এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

 

 

জানাজার জন্য নির্ধারিত সময় ছিল দুপুর ৩টা। কিন্তু সকাল থেকেই রাজধানীর সমস্ত পথ গিয়ে মিশেছিল মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ছাপিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং এর চারপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব। জানাজার আগে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থান নেওয়া লাখ লাখ মানুষের কান্নায় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

 

 

এর আগে, আজ সকাল ৯টার দিকে বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাঁর গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’-তে নেওয়া হয়। সেখানে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপর কড়া নিরাপত্তায় মরদেহ জানাজার জন্য সংসদ ভবন এলাকায় আনা হয়।

 

শহীদ জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে তাঁর এই রাজকীয় বিদায় প্রমাণ করে দিল এদেশের মানুষের হৃদয়ে তাঁর স্থান কতটা গভীরে। জানাজা শেষে এখন তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শেরে বাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে, যেখানে তিনি তাঁর স্বামীর পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন।

এই বিভাগের আরো খবর