ব্রেকিং:
‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ সকাল ৬টায় ফজরের ঠিক পরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন—ফজরের পর ইন্তেকাল করেছেন বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর বেঁচে নেই...

মঙ্গলবার   ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১৫ ১৪৩২   ১০ রজব ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪০

চিরবিদায় ‘আপসহীন নেত্রী’: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫  

এক দীর্ঘ ও ঘটনাবহুল রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান হলো। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে জীবনের পরম সত্যের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

 

 

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আজ সকাল সোয়া ৭টার দিকে নিশ্চিত করেন যে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁকে জানিয়েছেন, ‘আম্মা আর নেই।’ মৃত্যুর সময় তাঁর শয্যাপাশে তারেক রহমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মরহুমার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

 

 

১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্ম নেওয়া খালেদা খানম (পুতুল) ১৯৬০ সালে তৎকালীন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবরণের পর মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তিনি বৈধব্য বরণ করেন। দলের কঠিন সময়ে ১৯৮২ সালে বিএনপির সদস্যপদ গ্রহণ করে রাজনীতিতে আসেন তিনি।

 

 ১৯৮৩ সালে ৭-দলীয় ঐক্যজোট গঠন করে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে অভাবনীয় বিজয় ছিনিয়ে এনে বাংলাদেশের প্রথম এবং মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি ২৩টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করেছেন এবং কোনোটিতেই পরাজিত হননি। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় তিনি ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পান। তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

 

 

খালেদা জিয়ার জীবন ছিল সংগ্রাম আর ত্যাগে ভরা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সেনানিবাসে বন্দী ছিলেন। পরবর্তীতে ‘ওয়ান-ইলেভেন’-এর সময় এবং ২০১৮ সালে ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ মামলায় তাঁকে কারাবরণ করতে হয়। পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে বন্দিত্বের সময় তাঁর স্বাস্থ্যের চরম অবনতি ঘটে। অভিযোগ ওঠে ‘স্লো পয়জনিং’-এর। উন্নত চিকিৎসার জন্য বারবার বিদেশ যাওয়ার আবেদন করলেও তৎকালীন সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে। গত বছরের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তিনি পূর্ণ মুক্তি পান।

 

 

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি লন্ডনে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে ফিরলেও বয়স ও দীর্ঘ রোগযন্ত্রণা তাঁর শরীরকে জীর্ণ করে দিয়েছিল। গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে শেষবারের মতো এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক মাসেরও বেশি সময় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে আজ সকালে চিরবিদায় নিলেন ‘দেশনেত্রী’ উপাধিতে ভূষিত এই নেত্রী।

 

স্বামীর অকাল প্রয়াণ, কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু এবং দীর্ঘ প্রবাসে থাকা বড় ছেলের অনুপস্থিতি—সব শোক পাথরচাপা দিয়ে তিনি এদেশের রাজনীতির এক ধ্রুবতারা হয়ে ছিলেন। আজ তাঁর এই বিদায়ে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এই বিভাগের আরো খবর