শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৫ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪১৮

কাউন্টার টেরোরিজমের প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন নোমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০১৯  

কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম,ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ক সেরা রিপোর্টিং,রচনা ও প্রতিবেদন সকলের জন্য উম্মুক্ত প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। গত ৩০তারিখ রোজ রবিবার বিকাল ৩ ঘটিকায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এ প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট ৬০০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। স্কুল,মাদ্রাসা,কলেজ ও জনসাধারণ পর্যায়ে ভাগ করে প্রতি সেক্টর থেকে ৩জন করে পুরস্কারপ্রদান করা হয়। প্রতিবদনে ১ম স্থান অধিকার করেন ঢাকা কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু নাঈম নোমান। তিনি ঢাকা কলেজের ইংরেজী বিভাগে অধ্যায়নরত। 

আবু নাঈম নোমান সহিংস উগ্রবাদ বিষয়ক সেরা রিপোর্টিং,রচনা ও প্রতিবেদন প্রতিযোগিতায় "ভার্চুয়াল রিলেশনের ভয়াবহতা" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন জমা দেন।

এবিষয়ে আবু নাঈম নোমানের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারাদেশের ৬০০জনের বেশী প্রতিযোগী অংশ নেন, ২৮তারিখ রাতে তাকে ফোন করে জানানো হয় তার লেখা সিলেক্ট হয়েছে এবং তিনি ১ম স্থান অধিকার করেন। তিনি আরো বলেন ডিবি কার্যালয়ে তাদের সাথে লাঞ্চ করা এবং এতো বড় সফলতা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। অনুভূতিটা কেমন তা বলে বোঝানো যাবেনা। তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারন করে দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক কিছু করতে পারেন।


তার লেখা প্রতিবেদন "ভার্চুয়াল রিলেশনের ভয়াবহতা" হুবহু তুলে ধরা হলো-
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কোন না কোন ভাবে আমরা বিজ্ঞানের আশীর্বাদকে কাজে লাগাচ্ছি। যত দিন যাচ্ছে আমরা ততই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পরেছি। বিজ্ঞানের অন্যতম ইন্টারনেট যার সুবাদে আমরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ফেইসবুক,হোয়াটসঅ্যাপ,ইমো,টেলিগ্রাম, ইন্সট্রাগ্রাম,মেইল ব্যবহার করি। এই মাধ্যমগুলোর যেমন ভাল দিক রয়েছে তেমনি রয়েছে খুব ভয়াবহ খারাপ দিকও। আজকে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের খারাপ দিক তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

হ্যা,আজকে ফেইসবুক রিলেশনশিপ নিয়ে কথা বলবো। ফেসবুক রিলেশনশিপ হৃদয় থেকে নয়,মোবাইলের বাটনে আঙ্গুলের চাপে চাপে খুব সহজেই হয়। আগের দিনে রিলেশনশিপে যেতে হলে ছেলে কিংবা মেয়ে একে অপরের পিছনে যুগ,বছর,মাস-মাস ধরে ঘুরতো,পাড়ার মুরুব্বিদের ভয়ে থুতুমুতু খেত, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রিয়জনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করতো কিন্তু সুযোগ খুব কমই হতো, বিভিন্ন মাধ্যমে চিঠি আদান প্রদানেরর চেষ্টা করতো। অপরদিকে বর্তমানে মাত্র কয়েক মূহুর্তে ফেইসবুকে বন্ধুত্ব থেকে রিলেশন,রিলেশন থেকে বিবাহ যত দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে তেমনি বিবাহ বিচ্ছেদও ততো দ্রুত হচ্ছে। আর রিলেশন বিচ্ছেদের কথা না হয় বাদই দিলাম তাতো অহরহ ঘটছে আমরা সকলেই অবগত আছি। ফেইসবুকে সম্পর্ক হওয়ার পরে দেখা করতে গিয়ে তরুণীরা ধর্ষণের শিকার হতে এবং জীবন দিতও আমরা গণমাধ্যমে অনেক দেখেছি। তবুও কমছেনা ফেসবুক রিলেশন আসক্তি।

সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়াররনেস ফাউন্ডেসনের জরীপে,  সাইবার অপরাধের শিকার ভোক্তভোগীদের ৫১.১৩ শতাংশ নারী এবং ৪৮.৮৭ শতাংশ পুরুষ। যার বেশিরভাগ ১৮-৩০ বছর বয়সী মেয়েরা ৭৩.৭১ শতাংশ, ১৮বছরের কম ১০.৫২ শতাংশ, ৩০-৪৫ বছর ১২.৭৭ শতাংশ।

স্বর্গীয়,প্রেম পবিত্র যা  সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টার অশেষ নেয়ামত ও রহমত স্বরুপ দিয়েছেন বলেই স্বামী-স্ত্রী,পিতা-মাতা,সন্তান-সন্তদি,ভাই-বোন,প্রেমিক-প্রেমিকা একে অপরের প্রতি এতো আকর্ষন, এতো ভালবাসা। প্রেম নিয়ে খেলা করা, মানবাত্মা নিয়ে তামাসা করা ঠিক না। এটা পাপ, জগন্য মহাপাপ। কিন্তু বর্তমান ফেইসবুক রিলেশনশিপ পুরাটাই এর বিপরীত।  মাত্র কয়েক মিনিটের মাথায় ভাল লাগা থেকে ভালবাসা,ভালবাসা থেকে ভিডিও কলিং,কল থেকে অনেক কিছুই আদান প্রদান হয়ে যায় যেটা বাস্তবে খুবই কঠিন। এটাকে ভালবাসা বলেনা,এটা হচ্ছে নোংরামি। ভালবাসা থাকে হৃদয়ে আর ফেইসবুকের ভালবাসা থাকে মোবাইলের বাটনে আর হাতের আঙ্গুলের মাথায়,যা খুব দ্রুত প্রেমে রুপ নেয় ও দ্রুতই এর সমাপ্তি ঘটে এবং ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করে। ফেসবুক রিলেশন যার কারনে দিনে দিনে পরকীয়া প্রেম বেড়েই চলেছে যার কারনে ভেঙ্গে যাচ্ছে হাজারো সুখে গড়া স্বপ্নের তাজমহল ও জড়ে যাচ্ছে অকালে পরিসমাপ্তি ঘটছে হাজার-হাজার জীবনের।

এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হয়েছে, এই ফেইসবুক রিলেশন কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের রিলেশনের ব্যাপারে আমাদের প্রত্যেকের সচেতন থাকা উচিৎ। এই মেসেজ তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে যাবে গনমাধ্যমে। আমার নিরাপত্তা আমাকেই নিশ্চিত করতে হবে। নিজে নিরাপদ থাকবো, অন্যকে নিরাপদ রাখবো এটাই হোক সকলের স্লোগান।

উল্লেখ্য উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মনিরুল ইসলাম স্যার,দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম স্যার,ডিবিসি টেলিভিশনের সিইউও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্মানীত শিক্ষকবৃন্দসহ অনেক মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব।

এই বিভাগের আরো খবর