বুধবার   ১২ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ২৭ ১৪৩২   ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪৮

অস্ত্রধারী দেখলেই ব্রাশফায়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২৫  

চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ সম্প্রতি পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন যে আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী ও অস্ত্রধারী সন্দেহভাজনকে দেখামাত্র সাবমেশিন গান (এসএমজি) ব্যবহার করে ব্রাশফায়ার করতে হবে। তিনি নির্দেশনাটি কোনো নিরস্ত্র নাগরিকের ওপর প্রযোজ্য হবে না বলে জোর দিয়েছেন।

কমিশনারের দেয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, টহল ও থানা পুলিশের কাছে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে বারবার বলা হয়েছে যে শটগান হবে না, চায়না রাইফেলও বাদ, এখন এসএমজি ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে। পাশাপাশি তদন্ত ও অপারেশনে টহল দলে শিশা শটগান, দুইটি গ্যাস গান এবং ৯এমএম পিস্তল বহন করতে বলা হয়েছে। স্থায়ী চেকপোস্টের সংখ্যা বাড়িয়ে সাতটি থেকে তেরোটি করারও নির্দেশ দেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নির্দেশনাটি আসে কয়েকটি বর্বর ঘটনার প্রেক্ষিতে। গত ৫ নভেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে সংগঠিত গুলিতে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন; একই ঘটনায় এরশাদ উল্লাহ ও এক প্রতিবন্ধী রিকশাচালকও আহত হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই সিএমপি এ কড়া সিদ্ধান্ত নেয়।

কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘‘দেখামাত্র ব্রাশফায়ার হবে শুধুমাত্র অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের জন্য। নিরস্ত্র জনসাধারণের ওপর এটি প্রয়োগ করা হবে না। আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বা অন্য নিরস্ত্র কাউকে লক্ষ্য করা হবে না; তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য শহরে সন্ত্রাসীদের নগরে প্রবেশের সাহসই কমানো। প্রকাশ্যে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে, এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের প্রতিহত করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ অনুযায়ী পুলিশ সদস্যদের আত্মরক্ষার অধিকার সবসময় রয়েছে; প্রয়োজনে সব দায় আমি বহন করব।’’

ওই স্মরণের ঘটনাগুলোর আগে ১১ আগস্ট বন্দর থানার সল্টগোলা ক্রসিং ইশান মিস্ত্রি হাট এলাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বন্দর থানার এক সহ-পরিদর্শক গুরুতর আহত হন। পরদিন কমিশনার ওয়্যারলেসে মৌখিকভাবে পুলিশ সদস্যদের ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পূর্বের অস্ত্র-প্রাধিকার অনুযায়ী অস্ত্র ও লাইভ অ্যামুনিশন বহনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

পুলিশ কর্মকর্তা এবং এলাকার বাসিন্দারা বলেন, নতুন নির্দেশনায় দ্রুত তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে; টহল বাড়ানো, চেকপোস্ট স্থাপন ও মোবাইল পার্টির কাজকর্মে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী কেমন সমন্বয়ে এগোবে এবং এই নীতির বাস্তব প্রয়োগে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়েই রয়েছে সংশয় এবং নানা চাহিদা; পরিষ্কার বিধি-নির্দেশনা, ট্রেনিং ও স্বচ্ছতার ওপর জনগণের বাড়তি জোর আছে।

এই বিভাগের আরো খবর