বৃহস্পতিবার   ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ২০ ১৪৩২   ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৩

নির্বাচনী প্রচার-ভোটের দিন ড্রোন ব্যবহার নয়, এআই ব্যবহারে কড়াকড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫  

নির্বাচনী প্রচার ও ভোটের দিন কোনো প্রকার ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় এমন বিধান রাখা হয়েছে।

নারীদের সাইবার বুলিং রোধ করা; বিদেশে কোনো প্রার্থীর পক্ষে সশরীরে প্রচারণা না চালানো; কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিথ্যাচার বা অপপ্রচার চালালে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে আচরণ বিধিমালায়।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন প্রস্তাবের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) নতুন আচরণ বিধিমালা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, আচরণবিধিতে যেসব প্রস্তাবনা ছিল তা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে রাখা হয়েছে।


তিনি বলেন, কোড অব কন্ডাক্টের মধ্যে যেটা অ্যাড করা হয়েছিল তা আইনের ভেতরে আনা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থীর ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। দলের ক্ষেত্রে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার নতুন বিধান রাখা হয়েছে।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং এআই ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হয়েছে আচরণবিধিতে। ভালো কাজে এআই ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এই লাইনটা এত থিন হয়ে গেছে, বোঝা মুশকিল যে কোনটা এআই, কোনটা নয়। আমাদের মোবাইলের অনেককিছু আছে এখন এআই ড্রিভেন (এআই চালিত)। সুতরাং এখানে যে জিনিসগুলো ইম্পোজ করা হয়েছে যে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে আচরণবিধি ভঙ্গের মতো এমন কোনোকিছু করা যাবে না। রাজনৈতিক দলসমূহ যেসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন সেসব প্ল্যাটফর্মের তালিকা এবং লিংকের যে ডিটেইলস রিটার্নিং অফিসারকে দিতে হবে।

আচরণ বিধিমালায় ভোটার স্লিপ দেওয়ার প্রথাকে আইনগত ভিত্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবে। তবে ভোটার স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি, পদের নাম ও প্রতীক উল্লেখ করতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচার ও ভোটগ্রহণের সময়ে কোনো প্রকার ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বিলবোর্ড বিষয়ে ইসি বলেছে, বিলবোর্ডে শুধু যেগুলো ডিজিটাল বিলবোর্ড সেগুলোতে আলোর ব্যবহার করা যাবে, বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থীর প্রচারে বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না, এবার যুক্ত করা হয়েছে। পোস্টার ব্যবহার বন্ধে সংস্কার কমিশনেরও একটা প্রস্তাব ছিল। আর ব্যানার ও ফেস্টুনের ব্যবহার নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। ফলে তারা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন না।


প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রচারসামগ্রীতে পলিথিন, রেকসিনের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে। প্রচারণার সময় থাকছে তিন সপ্তাহ।

আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে দলের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামাও নেবে ইসি।

আচরণবিধির ‘গুরুতর’ অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে। আগে আচরণবিধিতে আরপিও অনুচ্ছেদটি ছিল না, এটা এবার যুক্ত করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের সংলাপ ও সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণার সুযোগ রাখা হয়েছে।

কমন প্লাটফর্মে রিটার্নিং অফিসার সংশ্লিষ্ট আসনে, সব প্রার্থীকে নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে একদিনে তাদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্রগুলো পাঠ করার ব্যবস্থা করবেন।

বিধিমালা লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী অপরাধে আরপিও ৯১ ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিল করে থাকে ইসি। বিষয়টি আচরণ বিধিমালায় স্পষ্ট করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর