বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৪ ১৪৩২   ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩২৭

কোলাহলের পুরাণ ঢাকায় একখন্ড সবুজের কেন্দ্রভুমি জবি

মোহাম্মদ শোয়াইব, জবি

প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২১  

রাজধানীর আদি ঢাকায় শুধু নতুন পুরাতন ভবনের সারিসারি অবস্থা চোখে পরে। এক ভবনের সাথে অন্য ভবনের গা ঘেষে অবস্থান। অধিকাংশ রাস্তা-গলিগুলো এতো সরু যে রিক্সা যাওয়ার মতো জায়গা ছাড়া বড় কোন যানবাহন যেতে পারে না। অনেকে পুরাণ ঢাকার গলি রাস্তার অবস্থা বুঝাতে 'মাইনকা চিপা' বলে অভিহিত করেন। অথচ ঘনবসতি পুরাণ ঢাকায় বনায়ন তেমন দেখা মেলে না। দুই একটি বাসার ছাদের উপর ছাদ বাগান দেখা গেলেও রাস্তার পাশে বা বাসার পাশে গাছের দেখা ভার। কিন্তু এর ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ভিক্টোরিয়া পার্ক ও কোর্ট-কাচারি এলাকায়। বিভিন্ন প্রজাতির কাষ্ঠল, ফলজ ও ঔষধি গাছের সমারোহে এ স্থান পুরাণ ঢাকায় সবুজের প্রাণ কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে।

ভিক্টোরিয়া পার্কে মেহগনি, কাঁঠাল, আম, নারিকেল, দেবদার, সেগুন, কাঁঠবাদাম, কড়ইসহ নাম না জানা অসংখ্য কাষ্ঠল, ঔষধি ও শোভাবর্ধনকারী গাছের দেখা মেলে। রয়েছে বসার স্থান। তাই কর্ম ব্যস্ত পুরাণ ঢাকায় বিশ্রাম, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আড্ডা ও ব্যায়ামে জন্য সারাদিন ছোট এ পার্ক থাকে মানুষের কোলাহলে সরব। আর ছুটির দিনগুলোতে ভিক্টোরিয়া পার্কে যেন মেলা বসে। এটার কেয়ারটেকার থেকে জানা যায়, পার্ক সংস্কার করার পর নতুন করে গাছ লাগানো হলেও পার্কে আসা মানুষজনের পায়ের পাড়ায় মারা গেছে। পার্কে ঘুরতে আসা মানুষজন বলেন, ঘরবন্দি জীবন থেকে ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে ভিক্টোরিয়া পার্ক ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। তবুও বাড়তি মানুষের কারণে বাচ্চাদের নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার সে সুযোগও এখানে নেই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলা, কলাভবন, বোটানিক্যাল গার্ডেন, শান্ত চত্ত্বর ও বিজ্ঞান ভবনের পাশেও বিভিন্ন প্রজাতির গাছের দেখা মেলে। করোনার মধ্যে আরও কিছু গাছ রোপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্কের পাশে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রাঙ্গণের বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় কাষ্ঠল বৃক্ষ চোখে পড়ে। এছাড়া এর পাশে সেন্ট থমাস ক্রুস বিদ্যালয় ও কবি নজরুল ইসলাম কলেজের প্রাঙ্গনেও সবুজের দেখা পাওয়া যায়। পাশাপাশি এ স্থানগুলোর গাছগাছালি মিলে পুরাণ ঢাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশের এক প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিউদ্দিন মাহি বলেন, পুরাণ ঢাকায় গাছ বা বাগান দেখা যায় না। গাছ যে অক্সিজেনের প্রধান নিয়ামক বা সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করে এই মনমানসিকতা এ এলাকার মানুষের এখনো তৈরি হয়নি। আমরা গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি এলাকায় দেখি রাস্তার আই লাইনে গাছ লাগানো হয়েছে। পুরাণ ঢাকায়ও সেটা করা যেতে পারে।  এছাড়া এখানে রাস্তার পাশে গাছ লাগানো ও মনিটরিং করাসহ ছাদ বাগান করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন একটা নিয়ম করে দিতে পারে। যে সকল বাসা বাড়ির প্রাঙ্গণে বাগান করা সম্ভব নয় তারা যেন বাসার ছাদ বা বেলকুনিতে বনায়ন করে। পুরাণ ঢাকার পাশে বুড়িগঙ্গার দুই ধারে বনায়ন করেও পুরাণ ঢাকাকে বাস উপযোগী করা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
 

এই বিভাগের আরো খবর