রোববার   ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ৩০ ১৪৩২   ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৩

একসঙ্গে ৬ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী

মোঃ মোসাদ্দেক হোসাইন ইমন, স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫  

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রিয়া নামে এক নারী। সন্তানদের মধ্যে তিনজন ছেলে ও তিন মেয়ে। ওজন কম হওয়ায় তিনজনকে ঢামেকের এনআইসিইউতে এবং বাকি তিনজনকে রাজধানীর কাঁটাবনের একটি বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

 

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ঢামেকের ২১২ নাম্বার ওয়ার্ডে সন্তানদের জন্ম দেন প্রিয়া।

 

ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ইউনিট-১ এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবিদা সুলতানা জানান, গতরাতে প্রিয়া ভর্তি হন। সকালে তিনি একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ‘বেবি’ বলা যায় না, এটি আসলে ২৭ সপ্তাহের ইনএবিটেবল অ্যাবরশন। এর আগে প্রিয়ার একটি পূর্ণবয়স্ক শিশু জন্ম হয়েছিল, তবে সেটি ডেলিভারির সময় মারা যায়। এবার জন্ম নেওয়া ছয় নবজাতকের মধ্যে তিনজনের ওজন প্রায় ৯০০ গ্রাম এবং বাকি তিনজনের ৮০০ গ্রাম।

 

তিনি বলেন, শিশুদের মধ্যে তিনজন ঢামেকের এনআইসিইউতে এবং তিনজন বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ সবাই জীবিত আছে, ভালো আছে।

 

ডা. আবিদা সুলতানা আরও বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত ২৮ সপ্তাহকে ‘ভায়াবল এইজ’ হিসেবে ধরা হয়। এই রোগীর ক্ষেত্রে ডেলিভারি আগেই হয়ে গেছে। তবে ঢামেকের উন্নত এনআইসিইউ ফ্যাসিলিটি থাকায় ভাগ্যে থাকলে শিশুরা বেঁচে যেতে পারে। 

 

তিনি যোগ করেন, সাধারণত একসঙ্গে ছয়টি শিশু গর্ভে ধারণ করা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব নয়। রোগী ওভুলেশন ইন্ডাকশন ড্রাগ সেবন করেছিলেন, যার কারণে একসঙ্গে একাধিক সন্তান ধারণ হয়েছে। জরায়ুর সীমিত ধারণক্ষমতার কারণে আগেভাগেই ডেলিভারি হয়েছে। এখন পুরো বিষয়টি আল্লাহর হাতে, আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছি।

 

ফার্টিলিটি চিকিৎসার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ওভুলেশন ইন্ডাকশন ড্রাগ সেবনের ফলে একসঙ্গে দুই, তিন, চার কিংবা এমনকি ছয়টি সন্তান ধারণ হওয়া সম্ভব। আবার ইনফার্টিলিটি চিকিৎসায় আইভিএফ পদ্ধতিতেও একাধিক ভ্রূণ গঠিত হয়। সাধারণত অতিরিক্ত ভ্রূণ থাকলে কয়েকটি অপসারণ করে বাকিগুলোকে বড় হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়; কিন্তু এই রোগী ওই ধরনের কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করেননি। ফলে একসঙ্গে ছয়টি ভ্রূণই বেড়ে উঠেছে এবং জরায়ুর সীমাবদ্ধ ধারণক্ষমতার কারণে আগেভাগেই ডেলিভারি হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ইনফার্টিলিটি চিকিৎসা নিলে কনসেপশনের পর রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসকের ফলোআপে থাকতে হয়। অনেক সময় রোগীরা প্রথম ধাপ পার হয়ে গেলে আর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না, তখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটে।

 

প্রিয়ার আত্মীয় বাবুল জানান, তারা নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে এসেছেন। প্রিয়া তার শ্যালক হানিফের স্ত্রী, যিনি কাতার প্রবাসী। 

 

তিনি বলেন, প্রিয়া ছয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন ঢামেকের এনআইসিইউতে এবং তিনজন কাঁটাবনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা আমাদের প্রতি খুব ভালো সহযোগিতা করেছেন, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এই বিভাগের আরো খবর