শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৪ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৯

হাদির হামলাকারী যেন ‘মাফিয়া ডন’: ভারতে অবস্থান নিশ্চিত

নাজমুল হুদা

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫  

জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রধান হোতা ফয়সাল করিম মাসুদ এখন ভারতের মহারাষ্ট্রে অবস্থান করছে। গ্রেপ্তারি এড়াতে সে একের পর এক নাটকীয় চাল চালছে। কখনো ভিপিএন (VPN) ব্যবহার করে নিজের অবস্থান থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুর দেখালেও, শেষ রক্ষা হয়নি। ফোনের আইএমইআই (IMEI) নম্বর ট্র্যাক করে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন যে, সে বর্তমানে ভারতের রিলায়েন্স জিও সিম ব্যবহার করে মহারাষ্ট্রে আত্মগোপন করে আছে।

 

ফয়সালের সঙ্গে রয়েছে তার অন্যতম সহযোগী এবং মোটরসাইকেল চালক আলমগীর শেখ। স্থানীয় সূত্র ও গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, তারা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তের কাঁটাতারের নিচে থাকা সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে গেছে।

 

 

হাদিকে গুলি করার পর অস্ত্রটি গায়েব করতে রীতিমতো সিনেমার মতো ছক কষেছিল ফয়সাল।

  • আগারগাঁও: গুলির পর ফয়সাল তার বোনের বাসায় কালো ব্যাগে অস্ত্র লুকিয়ে রাখে।

  • নরসিংদী: ফয়সালের নির্দেশে তার বাবা ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু সেই ব্যাগ নরসিংদীতে নিয়ে যায়।

  • উদ্ধার: মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব নরসিংদীর তরুয়া এলাকার একটি বিলের মধ্য থেকে ব্যাগটি উদ্ধার করে। ব্যাগে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন এবং ৪১ রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে।

 

 

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার নেপথ্যে কারা অর্থ জোগান দিয়েছে, তা খুঁজে বের করতে ফয়সালের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। ইতোমধ্যে তার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। দেশ বা বিদেশ থেকে বড় কোনো লেনদেন হয়েছে কি না, তা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংককে (BFIU) চিঠি দেওয়া হয়েছে।

 

 

এই মামলায় এখন পর্যন্ত ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, প্রেমিকা লিমা ও শ্যালক শিপুসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার ফয়সালের বাবা হুমায়ুন কবির ও মা হাসি বেগম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, যা থেকে হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।

 

 

সিটিটিসি (CTTC) বুধবার আগারগাঁওয়ের বনলতা আবাসিক এলাকা থেকে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও হেলমেট উদ্ধার করেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে ফয়সাল মোটরসাইকেলে ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করেছিল। আসল নম্বর প্লেটটি পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়।

 

তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য: ফয়সাল প্রযুক্তিগতভাবে অত্যন্ত চতুর। সে বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন ও মোবাইল বন্ধ রেখে গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। তবে তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং আলামত উদ্ধারের ফলে মামলার জট অনেকটা খুলে গেছে।

এই বিভাগের আরো খবর