মঙ্গলবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৪ ১৪৩২   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২০

শেখ হাসিনা-আসাদুজ্জামান-মামুনের রায়ে কী উঠে এল ট্রাইব্যুনালে?

তরুন কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৫  

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করেছে। গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে এই মামলার রায় ছিল অত্যন্ত প্রত্যাশিত।

 

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ রায়ে উল্লেখ করেন—তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের প্রতিটি ট্রাইব্যুনালে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে, এবং কোন অপরাধে কে কীভাবে দায়ী ছিলেন তা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

 

রায়ে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় ড্রোন নজরদারি, আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার, চানখাঁরপুলে গুলি চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় আরও ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান সরাসরি নেতৃত্বের দায়ের মধ্যে পড়েন। তাদের অধীনস্থ বাহিনীকে এ ধরনের হামলা থেকে বিরত রাখার কোনো উদ্যোগ তাঁরা নেননি।

 

এ ছাড়া ১৪ জুলাই গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসির সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়ার ঘটনাও রায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

একই মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হন। রায়ে বলা হয়—মামুন ৩৬ দিনের আন্দোলনের অধিকাংশ ঘটনায় যুক্ত ছিলেন। যদিও তাঁর অপরাধের মাত্রা সর্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য, তবু সত্য প্রকাশে সহযোগিতা করায় তাঁর প্রতি নমনীয়তা দেখানো হয়েছে।

 

রায়ের পর প্রসিকিউশন জানায়, পাঁচটি অভিযোগকে ছয়টি পৃথক ঘটনার (কাউন্ট) ভিত্তিতে বিচার করা হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বের দায় প্রমাণিত হওয়ায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে। অপরদিকে মামুনকে দুই অভিযোগে মোট পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

ট্রাইব্যুনাল আরও নির্দেশ দিয়েছে—২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে এবং আহতদের শারীরিক ক্ষতি অনুযায়ী সহায়তা নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার কথাও রায়ে উল্লেখ রয়েছে।

 

এই বিভাগের আরো খবর