শনিবার   ২২ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩২   ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২১

ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা, হতে পারে ভেস্টিবুলার ডিসঅর্ডারের লক্ষণ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২৫  

ভূমিকম্পের পরপরই হালকা মাথা ঘোরা, দুলুনি বা ভারসাম্য হারানোর অনুভূতি অনেকেরই হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ অবস্থাকে বলা হয় ‘আর্থকোয়েক সোয়ে সিনড্রোম’, যেখানে হঠাৎ নড়াচড়ার কারণে শরীরের ভেস্টিবুলার সিস্টেম সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই সমস্যা দূর হয়ে যায়।

তবে, ২৪ ঘণ্টার বেশি মাথা ঘোরা স্থায়ী হলে তা অন্য স্বাস্থ্যগত বা স্নায়বিক সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসা গবেষণায় দেখা গেছে, ভূমিকম্পের আকস্মিক দোলায় কানের ভেতরের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে যায়। ফলে প্রথম কয়েক ঘণ্টা মাথা ঘোরা স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা দীর্ঘ হলে সতর্ক হওয়া উচিত।

২৪ ঘণ্টার বেশি মাথা ঘোরা হওয়ার সম্ভাব্য কারণসমূহ

১. ভেস্টিবুলার ডিসঅর্ডার
আগে থেকে কানের ভেতরের ভারসাম্যব্যবস্থা দুর্বল থাকলে ভূমিকম্পের নড়াচড়ায় সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এতে দীর্ঘ মাথা ঘোরা, দুলুনি, অস্পষ্ট দৃষ্টি ইত্যাদি দেখা দেয়।

২. বেনাইন পজিশনাল ভার্টিগো (BPPV)
ভেস্টিবুলার সমস্যায় আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ। কানের ক্ষুদ্র ক্যালসিয়াম কণা স্থানচ্যুত হলে মাথা বারবার ঘুরতে পারে। হালকা নড়াচড়াও অনেক সময় এই সমস্যা ট্রিগার করে।

৩. ভেস্টিবুলার মাইগ্রেন
মাথাব্যথা ছাড়াই শুধুমাত্র মাথা ঘোরা দিয়ে মাইগ্রেন প্রকাশ পেতে পারে। ভূমিকম্পের ভয় বা মানসিক চাপ এতে ভূমিকা রাখতে পারে।

৪. পোস্ট-ট্রম্যাটিক ভেস্টিবুলার সিনড্রোম
তীব্র ভয় ও মানসিক চাপ স্নায়ুতন্ত্রকে দীর্ঘ সময় অস্থিতিশীল রাখে। ফলে বারবার মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

৫. পানিশূন্যতা, রক্তচাপ বা রক্তে শর্করা কমে যাওয়া
ভয় বা আতঙ্কে অনেকের রক্তচাপ বা গ্লুকোজ হঠাৎ কমে যেতে পারে, যার ফলে মাথা ঘোরা দেখা দেয়।

৬. ভূমিকম্প পরবর্তী স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PESD)
তীব্র ভূমিকম্পের পর অনেকের মানসিক অবস্থা দীর্ঘ সময় অস্থিতিশীল থাকে। এতে দেখা দিতে পারে—

  • অতীত স্মৃতি বারবার ফিরে আসা

  • অকারণে আতঙ্ক

  • ঘুমের সমস্যা

  • হঠাৎ মাথা ঘোরা বা দুলুনি

গবেষণায় দেখা গেছে, পিইএসডি আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্নায়ুতন্ত্র দীর্ঘ সময় ‘হাই অ্যালার্ট’ অবস্থায় থাকে, যার ফলে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতার মতো শারীরিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা ২৪ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ এটি কেবল ভয়ের প্রতিক্রিয়া নয়; বরং ভেস্টিবুলার ডিসঅর্ডার, মাইগ্রেন বা স্ট্রেসজনিত জটিলতার লক্ষণও হতে পারে।

এই বিভাগের আরো খবর