বুধবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৫   কার্তিক ২১ ১৪৩২   ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১২

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম ও সর্বকনিষ্ঠ মেয়র জোহরান মামদানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২৫  

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহর নিউইয়র্কের ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি। ৩৪ বছর বয়সে নির্বাচিত হয়ে তিনি শুধু শহরের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়রই নন, বরং গত এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর সর্বকনিষ্ঠ মেয়রের রেকর্ডও গড়েছেন।

 

এর আগে এই রেকর্ড ছিল হিউ জে গ্রান্টের দখলে, যিনি ১৮৮৯ সালে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। পাশাপাশি মামদানি হয়েছেন নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং আফ্রিকাজন্ম মেয়র।

 

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে এই ঐতিহাসিক জয় পান মামদানি। নিজেকে “ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট” পরিচয়ে উপস্থাপন করা মামদানি এবার অঙ্গরাজ্যের আইনপ্রণেতা থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় রাজনীতির অগ্রভাগে জায়গা করে নিলেন।

 

**ভোটের ফলাফল ও রেকর্ড অংশগ্রহণ**

*দ্য নিউইয়র্ক টাইমস* জানায়, প্রাথমিক ফলাফলে মামদানি পেয়েছেন ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৬৪৬ ভোট (৫১ শতাংশ)। কুওমো পেয়েছেন ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮৩ ভোট (৩৯ শতাংশ), আর কার্টিস স্লিওয়া পেয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৬ ভোট (৭.১ শতাংশ)। নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশনস জানিয়েছে, গত পাঁচ দশকের মধ্যে এবার ভোটার উপস্থিতি ছিল সর্বোচ্চ।

 

**ট্রাম্প বনাম মামদানি: নির্বাচনের নাটকীয় মোড়**

ভোটের শেষ পর্যায়ে নির্বাচনটি কার্যত মামদানি বনাম ট্রাম্পে পরিণত হয়। শেষ মুহূর্তে রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পাশ কাটিয়ে অ্যান্ড্রু কুওমোকে সমর্থন জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক মাধ্যম *ট্রুথ সোশ্যালে* তিনি লেখেন, “আপনার সামনে আর কোনো বিকল্প নেই, কুওমোকেই ভোট দিতে হবে।”

 

মামদানি পাল্টা জবাবে বলেন, “কুওমোকে সমর্থন করেছেন ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসন। তিনি নিউইয়র্কের জনগণের নয়, ট্রাম্পের মেয়র হবেন।”

 

**অভিবাসীদের প্রার্থী মামদানি**

কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়া থেকে নির্বাচিত মামদানি নিজেও একজন অভিবাসী পরিবারের সন্তান। অভিবাসী ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনের উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতিতেই তাঁর প্রতি ঝুঁকেছে শহরের বড় অংশের ভোটার। স্থানীয় এক ভোটার বলেন, “ছোট ব্যবসা ও বিনামূল্যে শিশুসেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মামদানি সত্যিকারের জনগণের প্রার্থী।”

 

**একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা**

জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, সাবওয়ে ট্রেনের দরজা খুলে ঘোষিত হচ্ছে— “নেক্সট স্টপ, সিটি হল।”

 

জোহরান মামদানির এই জয় শুধু নিউইয়র্ক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতেও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মুসলিম, দক্ষিণ এশীয় ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে তিনি এখন মার্কিন রাজনীতির অন্যতম আলোচিত মুখ।
 

 

এই বিভাগের আরো খবর