গিরগিটির রঙের খেলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২৩

প্রায়ই বাড়ির বাগানের আনাচে-কানাচে অদ্ভুত রকমের গিরগিটি আমরা অনেকেই দেখে থাকি। এই প্রাণি নিয়ে আমাদের অনেক ভয়! ভয়ে অনেকেই ভাবেন এটি বোধ হয় বিষধর সাপ। কেউ বলেন, ওরা রক্ত খায়। রক্তচোষা। আসলে কিন্তু বেশ নিরীহ এই প্রাণিটি। ওরা মানুষের রক্তচুষে খায় না। কেবল আত্মরক্ষার তাগিদেই মাঝে মধ্যে ভয়ংকর বীভৎস রূপ নিয়ে থাকে।
বহুরূপী প্রাণি গিরগিটি
কোনো কোনো গিরগিটির গা ভর্তি কাঁটা। কারোর মাথায় একাধিক শিং থাকে। এরা বহুরূপী প্রাণি। চলাফেরা করে ধীর গতিতে। খুব ভয় পেলেও মিনিটে কুড়ি-পঁচিশ ফুটের বেশি দূরে যেতে পারে না। কোথাও বিপদে পড়লে বা তাড়া খেয়ে কোণঠাসা হলে সামনের দু’ পায়ে ভর দিয়ে মুখ উঁচিয়ে তোলে। তারপর মুখ ফুলিয়ে এক ধরনের হিস-হিস শব্দ করে। এতে কাজ হয় ভালো। গবেষকরা বলেন, এক পাল শিকারি কুকুরকে তাড়িয়ে দিতে পারে একা একটি মাত্র গিরগিটি। গিরগিটিরা জোর-জবরদস্তি করে না। কামড়ায় না। রক্ত চোষেনা। বিরক্ত করে না। এদের মতো শান্তি প্রিয় জীব পৃথিবীতে নেই বললেই চলে। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, স্পেন, ও অস্ট্রেলিয়ায় এই সাপ জাতীয় প্রাণির বেশি দেখা মেলে। আরেক ধরনের গিরগিটি রয়েছে, যারা মূলত গাছে-গাছেই থাকতে বেশি ভালোবাসে। বিজ্ঞানীরা এদের নাম রেখেছেন, আরবোরিয়াল। কেবল ডিম পাড়ার সময় হলে ওরা মাটিতে সুড়ঙ্গ তৈরি করে।
আরও পড়ুন: নারীকে আকৃষ্ট করতেই সুগন্ধি ব্যবহার শুরু করেন পুরুষরা
কী খায় গিরগিটি?
বেশির ভাগ গিরগিটি গাছের পাতায় লেগে থাকা বৃষ্টির পানি বা ভোরের শিশির খেয়ে তেষ্টা মেটায়। পোষা গিরগিটিদের বাটিতে পানি দিয়ে গবেষকরা দেখেছেন, ওরা তা ছুঁতে চায় না। ওদের মাঝে-মধ্যেই খাবারের স্বাদ বদল করতে হয়। এক সপ্তাহে হয়তো মৌমাছি ভালো লাগলো, তো অন্য সপ্তাহে ঝিঁঝিঁ পোকা। পরের মাসে হয়তো আবার মাকড়শা। খুব স্বাধীন প্রিয় গিরগিটি। পোষ মানলেও গিরগিটিদের খাঁচায় বাঁচানো মুশকিল। সূর্যের আলো না পেলে ওরা রিকেট রোগে আক্রান্ত হয়। বাঁচার জন্য এই গিরগিটি নামক বহুরূপীর চাই তাপমাত্রার প্রবল বৈষম্য। পানিতে মাছ পোষার জন্য অ্যাকোরিয়াম লাগে। মাকড়শা জাতীয় পোকা পুষতে লাগে ভিভারিয়াম। তেমনই বহুরূপী প্রাণী পোষার জন্য চাই মাঝারি আকারের কাঁচের তৈরি বাক্স। যার নাম টেরারিয়াম। টেরারিয়ামের উপর দিকটায় তারজালি দেওয়া থাকে। তাতে বেশ কিছু মাটিতে মস, ফার্ণ, ঘাস কিংবা ছোট-ছোট গাছ বসানো থাকে। টেরারিয়ামের মধ্যে কেবল গিরগিটি নয়। সাপ, ব্যাঙ, কচ্ছপ সবই পোষা যায়।
গিরগিটির ঘরবাড়ি কেমন?
একেক ধরনের গিরগিটি একেক রকম আবহাওয়া পছন্দ করে। বেশির ভাগ অবশ্য শুকনো আবহাওয়ায় থাকতে ভালোবাসে। ক্যারোলিনা আনোল বা আমেরিকান গিরগিটিরা একটু ব্যতিক্রম। তাদের জন্য ছায়া ঢাকা গ্রিন হাউস জাতীয় ব্যবস্থা থাকা চাই। কাঁটাওয়ালা, মরুভূমির গিরগিটির জন্য চাই বেশ কয়েক ইঞ্চি বালি ও কিছু ক্যাকটাস। প্রায় সব বহুরূপীই শীতকালে কুম্ভ কর্ণের মতো ঘুম দেয়। একে বলে হাইবারনেশন। গিরগিটি ধরা খুব একটি সহজ কাজ নয়। এরা সার্কাসের পাকা খেলোয়াড়ের মতো চতুর। আঙ্গুল ও লেজে ভর দিয়ে এ ডাল থেকে ও ডালে লাফিয়ে বেড়াতে খুব ওস্তাদ। এমনকি ডালে ঘুমানোর সময় সামান্য ছোঁয়া লেগে গেলেও ওরা ঝুপ করে মাটিতে পড়ে যায়। ওদের লেজ চেপে ধরলে খসে যায়। পরে অবশ্য আবার গঁজায় লেজ। মজার ব্যাপার হচ্ছে ওরা রঙের খেলা দেখায়। বিভিন্ন পরিবেশে ও মেজাজে রং বদলাতে পারে বলেই এদের নাম বহুরূপী।
jagonews24
গিরগিটি কেন এবং কীভাবে রং বদলায়?
গিরগিটির চামড়ার বিভিন্ন স্তরে বিশেষ ধরনের কোষ রয়েছে। এই কোষ বিশেষ-বিশেষ রং দিয়ে তৈরি। ত্বকের বাইরের অংশের ঠিক নিচে থাকে হলুদ ও সবুজ রঙের পিগমেন্ট তৈরির কোষ। তার নিচের স্তরে লাল, নীল, কমলা ও বেগুনি রঙের কোষ। চামড়ার সবচেয়ে গভীর অংশে থাকে হালকা খয়েরি থেকে গাঢ় কালো রঙের মেলানিন। এই মেলানিন কিন্তু মানুষের চামড়ার রঙের জন্য দায়ী। গিরগিটিদের রঙিন কোষগুলো আকার আয়তনে বদলায়। হলুদ কোষগুলো নীলের থেকে বড় হয়ে ফুলে উঠলে এই বহুরূপীরা হালকা সবুজ রং ধারণ করে। গিরগিটির রাগ করলে বা মানসিক চাপ বাড়লে আবার মেলানিন কোষগুলো চামড়ার বাইরের স্তরে তাদের শাখা বিস্তার করে গাঢ় রং ছড়াতে শুরু করে। ফলে রাগলে ওদের ক্রমশ কালো বা গাঢ় লাল দেখায়। গবেষক-বিজ্ঞানীরা এই রং বদলের কৌশলের কারণ জানলেও কী কারণে এই রং বদলের নির্দেশ মস্তিষ্ক থেকে চামড়ার কোষগুলোতে পৌঁছায় তা আজও ঠিকঠাক বিশ্লেষণ করে উঠতে পারেননি।
আরও পড়ুন: পিঁপড়া কীভাবে রাজ্য দখল করে?
চমৎকার নীল লেজের গিরগিটি
আমাদের দেশে সবুজ, বাদামি ও নীল রঙের লেজের গিরগিটি বেশি দেখা যায়। এরা সাধারণত সাত-আট ইঞ্চির বেশি লম্বা হয় না। বাচ্চা বয়সে এদের দেহ-কালচে বা গাঢ় খয়েরি রঙের হয়। এদের গায়ে লম্বা-লম্বিভাবে পাঁচটি সাদা বা হলুদ রেখা থাকে। প্রথমদিকে লেজের রং থাকে গাঢ় সবুজ অথবা নীল। বয়স বাড়লে ক্রমে তাদের গায়ের রং ফিকে হয়ে আসে। তখন এই লম্বা রেখাগুলো গাঢ় বর্ণ ধারণ করে। এদের ঘাড় মোটা হতে থাকে। লেজের উজ্জ্বল সবুজ ও নীল রং ক্রমশ ধূসর বর্ণে রূপান্তরিত হয়। আমাদের দেশের গিরগিটিরা সাধারণত পাথুরে জমিতে থাকতে ভালোবাসে। শুকনো পরিবেশে গোল নুড়ি পাথর আর মস দিয়ে তৈরি টেরারিয়াম এদের বসবাসের জন্য মানানসই। এদেশে আরেকটি গিরগিটি রয়েছে, যার নাম ফেন্স লিজার্ড। তারজালি বা বেড়ার গায়ে আঙুল লাগিয়ে ঝুলে থাকে বলে এদের নাম ফেন্স লিজার্ড হয়েছে। দ্রুতগতির জন্য এদের অনেকে সুইফট লিজার্ডও বলে। ইঞ্চি সাতেক লম্বা এই গিরগিটির গায়ের আঁশ খুবই খসখসে। মেয়ে সুইফটের পিঠে গাঢ় সবুজ হলুদ রঙের ঢেউ খেলানো। পুরুষের পাশ বরাবর নীল হলুদ দাগ থাকে। আর থুতনির নিচে থাকে কালো কালো ছোপ রং।
ভয়ংকর কাঁটাওয়ালা গিরগিটি
আমাদের দেশে সাপের মতো দেখতে ক্যারোলিনা অ্যানোল ও কাঁটাওয়ালা এক ধরনের গিরগিটিও রয়েছে। এরা সরু লিকলিকে। পা নেই। দেখলে সহজে সাপ বলে ভুল হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সাপের লেজ খসেনা। এদের লেজ খসে, আবার গজায়। এরা লম্বায় প্রায় তিনফুট পর্যন্ত বড় হলেও শরীরের দুই তৃতীয়াংশ লেজ থেকে যায়। কাঁটাওয়ালা গিরগিটি মরুভ‚মির বাসিন্দা। রুক্ষ আবহাওয়ায় এই গিরগিটির বসবাস। এদের মাথায় শিং থাকে। কোন কোনটির গায়ে থাকে অসংখ্য কাঁটা। এদের লেজ খসেনা। তাই আত্মরক্ষার ভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। চোখের ক্যাপিলারি ফাটিয়ে শরীরের এক পঞ্চমাংশ রক্ত ফিনকি দিয়ে বের করে ওরা আক্রমণকারীকে ভিজিয়ে দিতে পারে। ফলে শিকারি শিকার ফেলে মুখ মুছতে ব্যস্ত হয়। সেই ফাঁকে গিরগিটি দৌঁড়ে পালায়।
দেখতে যতই ভয়াবহ হোক। এই বহুরূপী গিরগিটিরা আমাদের কোনো ক্ষতি করেনা। বরং পোকামাকড় খেয়ে ফসল রক্ষা করে। পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখে। তাই বাগানের গাছে, ক্ষেতে, বেড়া বা দেয়ালে গিরগিটি চোখে পড়লে তাকে ঘৃণা করে বা ভয় পেয়ে মেরে ফেলতে চেষ্টা করার কোন কারণ নেই। গিরগিটিরা আমাদের পরম বন্ধু।
- একাধিক মামলার পলাতক আসামি সেলিম আহমদকে খুঁজছে পুলিশ
- জমি জমার বিরোধের জেরে হামলা আহত ৪
- পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে ৫তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১ আহত ১৭
- যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
- শাহবাগে আগুনে পুড়লো ফুলের ৮ দোকান দগ্ধ ৫
- বাঁচবেন না এসিপি প্রদ্যুমন মন ভাঙল দর্শকের
- ঈদের ছুটির পর সচল চারদেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর
- ভারতে বাস দুর্ঘটনায়, ৭০ জনের বেশি ছিলেন বাংলাদেশি পর্যটক
- ১০ শতাংশ কমছে টেলিটকের ডাটা প্যাকেজের দাম
- ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে উল্টে গেলো বালুবাহী ট্রাক ৫ কিলোমিটার যানজট
- এবার সৌদি ও বাংলাদেশে একই দিনে ঈদ
- বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫ জামাতের সময়সূচি
- চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- যমুনা সেতু দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় দুই কোটি ৫৭ লাখ টাকার টোল আদায়
- নির্ধারিত সময়ে ছাড়ছে সব ট্রেন, আজ ঢাকা ছাড়বে ৬৯টি
- যশোরে তারেক রহমানের পক্ষে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
- ঈদে লম্বা ছুটি, সুযোগ টানা ১১ দিনের
- ধর্ম উপদেষ্টা
সংখ্যালঘু নির্যাতন যেভাবে বলছেন সেই মাত্রায় নেই - গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত বেড়ে ৩২৬
- শেখ হাসিনা ও রেহানা পরিবারের ৩৯৪ কোটি টাকা ফ্রিজ
- লাকসামে এক নেতার বাড়িতে নিয়ে তরুণী কে ধর্ষণ
- অঙ্গীকার-এর উদ্যোগে ঢাবিতে নবীনবরণ ও ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত
- ন্যানসি কন্যা রোদেলার কণ্ঠে আসছে ঈদের গান
- জনগণ পছন্দ করে না এমন কোন কাজ করা যাবে না
- নোয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে হেনস্তা প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ
- লাকসামে ছাত্রদলের পদ-বঞ্চিতদের বিক্ষোভ মিছিল
- চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সভা অনুষ্ঠিত
- প্রথম একসঙ্গে ‘ইত্যাদি’র মঞ্চে হাবিব-প্রীতম
- দুই দিনের সরকারি সফরে মরিশাস পৌঁছেছেন নরেন্দ্র মোদী
- বিশ্ব বাবা দিবস আজ
বাবা নামের বটবৃক্ষের প্রতি শর্তহীন শ্রদ্ধা - যে নারীর নামে হলো আম্রপালী
- গাড়ির টায়ার কালো হয় কেন?
- হোস্টেলে মেয়েরা যে নিষিদ্ধ কাজ করে!
- হোস্টেলে মেয়েরা যে নিষিদ্ধ কাজ করে!
- উত্তেজক ট্যাবলেটে ঝুঁকছে যুবক-যুবতীরা
- চারদিকে ‘ছেলেধরা’ ‘গলাকাটা’ আতঙ্ক!
- রাত গভীর হলেই শ্বশুরের অন্য মতলব!
- উড়ন্ত বিমানের ভেতর নোয়াখালীর তরুণের অনৈতিক কাজ!
- ১৫ আগষ্ট বাঙ্গালী জাতির একটি কলংকিত অধ্যায়
- এসি কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন
- একাধিক এতিম ছেলেকে হাফেজ বানিয়েছেন ব্যাংকার গহর জাহান
- কপালে টিপ থাকায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে বহিষ্কার!
- বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিচ্ছে নতুন টেলিভিশন প্রভাতী টিভি
- অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে উৎসাহ দেন বাবা-মা!