প্রাথমিক তদন্ত ছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নয়: বিএমএসএফ

প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা ছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর।

শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি লালমনিরহাট বিএমএসএফ সভাপতি খোরশেদ আলম সাগরের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের হওয়া মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “কোনো পুলিশি তদন্ত ছাড়াই একজন পেশাদার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০২৩ সালে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের একটি রাজনৈতিক অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় ২০২৫ সালে এসে সাংবাদিক ও কিছু ঠিকাদারকে আসামি করা হয়েছে।”

তিনি পুলিশকে পেশাদার ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করেন, “আপনারা এখনও যা খুশি তা করবেন—তা আর চলবে না।”

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় সাংবাদিক সমাজ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে।

সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো—

• পাবনায় সাংবাদিক মোবারক বিশ্বাসকে ৬ মাস কারাভোগের পর জেলগেট থেকে পুনরায় আটক,
• ময়মনসিংহের ভালুকায় বিএমএসএফ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সবুজসহ চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বন বিভাগের মামলা,
• গাজীপুরে নয়াদিগন্ত প্রতিনিধি মুজাহিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা,
• ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির মামলায় সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদসহ পাঁচজনকে আসামি করা,
• কুমিল্লার মুরাদনগরে সাংবাদিক আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা।

এসব মামলাই সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও পেশাদারিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি বলে দাবি করেছে বিএমএসএফ।

সংগঠনটি আরও জানায়, সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলার ভয়াবহতা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তারা জানায়—

• রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক কামরুল হাসানকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। তার স্ত্রী এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়।
• শুক্রবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে তথ্য সংগ্রহে গেলে নারী সাংবাদিক রুমাসহ তিন সাংবাদিকের ওপর হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে।
• গাজীপুরের কালীগঞ্জে আরেক সাংবাদিককে নৃশংসভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) বলছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হামলার ঘটনাগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।