বুধবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩২   ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho

সাউথইস্ট ব্যাংক সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার

মো: সাইফুল আলম সরকার, ঢাকা

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫  

সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও দীর্ঘদিনের সফল ব্যাংকার আলমগীর কবিরের (এফসিএ) বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার ও ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বন্ধের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তার একমাত্র ছেলে রাইয়ান কবির। রাজধানীর ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে উপস্হিত ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিয়ে আবেগঘন মুহূর্তে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

 

রাইয়ান কবির বলেন, আমি আজ আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি কয়েক বছর ধরে সৃষ্ট বিভিন্ন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি, আমার পরিবারের ওপর সংঘটিত অবিচার এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে আমার অবস্থান পরিষ্কার করে জানানোর জন্য। আমার পিতা আলমগীর কবিরের অবদান আমার বাবা আলমগীর কবির দেশের আর্থিক খাতে পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম (অনার্স), পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমকম ডিগ্রি অর্জন করেন। সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়া তরুণদের একজন ছিলেন।দেশের ব্যাংকিং, হিসাব, নিরীক্ষা, বিমা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অসামান্য সুনাম অর্জন করেন। ২০০০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংক সংকটে নিমজ্জিত হলে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করে ব্যাংককে দেউলিয়া অবস্থা থেকে ঘুরিয়ে দাঁড় করান । 

 

গত ২০ বছর তিনি সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতায় সাউথইস্ট ব্যাংক পরিচালনা করে একে একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তিনি সাউথইস্ট ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক সিকিউরিটিজ, সাউথইস্ট ব্যাংক ফাউন্ডেশন, এনসিসি ব্যাংক, বে লিজিংসহ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও নীতিনির্ধারক হিসেবে দেশব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ব্যাংকের মুনাফা বহু-গুণে বৃদ্ধি পায়। হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়

 


ব্যাংকিং সেক্টরে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসনের দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হয়। আমার বাবা কখনো কোনো দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ বা লুটপাটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন-'নিজে শিল্পপতি না হয়ে অসংখ্য শিল্পপতি তৈরি করাই আমার দায়িত্ব ।'

 

সংবাদপত্রে মিথ্যা প্রচার সম্পর্কে গত ৫-৬ বছর ধরে সংবাদপত্রের বিভিন্ন রিপোর্টে আমার বাবা ও আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে দায়সারা, যাচাই বাছাইহীন এবং অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। এসব অপপ্রচারের পেছনে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করেছে বলে আমরা মনে করি । আমার কাছে এসব রিপোর্টের লিংক ও নথিপত্র রয়েছে, প্রয়োজন হলে আমি সরবরাহ করতে প্রস্তুত।

 

আমার বোর্ড সদস্য হিসেবে নিয়োগ ও অপসারণ


২০২১ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে বোর্ডে মনোনীত করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন প্রদান করে।


কিন্তু পরবর্তীতে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ‘অবৈধ বোর্ড অন্তর্ভুক্তি' ইত্যাদি ভিত্তিহীন অভিযোগ তৈরি করে, প্রভাব খাটিয়ে এবং অপপ্রচার ছড়িয়ে আমাকে বোর্ড থেকে সরিয়ে দেয় । এ সময় বারবার ভুল তথ্য ছড়িয়ে আমার মানহানি করা হয়। অসত্য মিডিয়া রিপোর্ট ব্যবহার করা হয়। অযৌক্তিক আইনি মামলা দেওয়া হয়


আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই- বে লিজিং ও সাউথইস্ট ব্যাংক-দুই প্রতিষ্ঠানের ফর্ম-১২ নথিতে আমার কোনো দায়িত্ব বা সম্পৃক্ততা নেই ।


বর্তমান বোর্ড ও প্রশাসনিক অস্থিরতার অভিযোগ


আমার পরিবারের কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে দেখা গেছে একটি সিন্ডিকেট ব্যাংকের ওপর স্বৈরাচারী আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে


নিজেদের ঘনিষ্ঠ কর্মচারীদের পদোন্নতি দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ন্ত্রণ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্টেকহোল্ডারদের অবহেলা করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ দখলের ঘটনাও উদ্বেগজনক।

 

আমি চাই যথাযথ কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করুক। ব্যাংকিং খাতকে অস্থিতিশীলকারী যে কোনো শক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। আমার বিদেশযাত্রা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক যাতে চিকিৎসা নিতে পারি। আমি বিশ্বাস করি-বাংলাদেশের আর্থিক খাত স্থিতিশীল রাখতে এবং সাউথইস্ট ব্যাংককে পুনরায় স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সঠিক সিদ্ধান্ত জরুরি।


শেষ কথা, আমার বাবা আলমগীর কবির আজীবন সততার প্রতীক। তিনি একটি ব্যাংককে সংকট থেকে উদ্ধার করে দেশের গর্বে পরিণত করেছেন। সেই পরিবারের সদস্য হিসেবে আমার প্রতি বর্তমান প্রতিহিংসা-ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অন্যায্য । আপনাদের সহযোগিতা ও সত্য প্রকাশের মাধ্যমে আমরা ন্যায়বিচার পাব-এটাই আমার বিশ্বাস।

এই বিভাগের আরো খবর