শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ৬ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৭৪৫

সমাজ সেবায় অনন্য উদাহরণ শিল্পপতি জালাল আহমেদ সিআইপি

মো. মোহন

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২১  

মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় দেশ কাতার। এটি পারস্য উপসাগরের ছোট ও মরুভূমির দেশ। মাথাপিছু আয়ে বর্তমানে পৃথিবীর সবচাইতে ধনীর কাতারে দেশটি। কাতারে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৪ লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। তাদের অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে সুনামের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। কাতারের ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম খাত হচ্ছে কনস্ট্রাকশন সেকশন।

কনস্ট্রাকশনে, মেশন, কারপেন্টার, স্টিল ফিক্সার, মার্বেল টাইলসসহ বিভিন্ন নির্মাণ শ্রমিকের পেশায় কাজ করেন বাংলাদেশিরা। কাতারে ব্যবসা-বাণিজ্য খাতেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশি পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও। দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবার নিয়ে বসবাসও করছেন।

বাংলাদেশিদের মধ্যে একমাত্র কাতারি নাগরিক জালাল আহমেদ সিআইপি। তিনি দীর্ঘদিন দেশটিতে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। তিনি কাতার থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সিআইপিও নির্বাচিত হয়েছেন।

কাতার প্রবাসী মো. জালাল আহমেদ সিআইপি, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা পৌর এলাকার মিয়াজি বাড়ির হাজী আব্দুর রশিদ মিয়াজির বড় ছেলে, তিনি কাতারে গোল্ডেন মার্বেল কোম্পানির কর্ণধার। জালাল আহমেদ ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে প্রথম।

তার এক বোন মাজেদা বেগম বর্তমানে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। জালাল আহমেদ তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক। বর্তমানে সবাই সপরিবারে কাতারে থাকেন।

কঠোর পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে কাতারে গড়ে তুলছেন গোল্ডেন মার্বেল কোম্পানি, গোল্ডেন মার্বেল কোম্পানি কাতারে মধ্যেই নাম্বার ওয়ান। নিজ জন্মস্থান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার মানুষকেও কাতারে এনে স্বাবলম্বী করেছেন।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিসর, নেপালসহ অনেক দেশের শ্রমিক জালাল আহমেদের গোল্ডেন মার্বেল কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন।

কাতারস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটিতেও অতিপরিচিত মুখ জালাল আহমেদ সিআইপি। সফল এই ব্যবসায়ী সামাজিক সংগঠন কাতার চাঁদপুর সমিতি ও ফরিদগঞ্জ সমিতি প্রধান উপদেষ্টা, কাতার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা দায়িত্বে আছেন।

প্রায় ৩২ বছর ধরে কাতারে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে যাচ্ছেন এ জালাল আহমেদ। কাতারে তার মালিকানাধীন চারটি মার্বেল পাথরের কারখানা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের খুলনার মোংলায় তার একটি মার্বেল ফ্যাক্টরি রয়েছে।

জালাল আহমেদ, প্রতি বছর বাংলাদেশে গরিবদের ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়ে থাকেন। মোঠফোনে কেউ তার সাথে যোগাযোগ করে সাহায্যের আবেদন করলে তাত্ক্ষণিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে এতিম খানা, মসজিদ, মাদরাসা তৈরি করেছেন। ফরিদ্গঞ্জের ১৬টি ইউনিয়নে ১৭০ টিরও বেশি ঘর নির্মান করে দিয়েছেন অসহায় হত-দরিদ্র মানুষের মাঝে। এছাড়াও ঢাকার উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টর ও খিলক্ষেত ২ নং রোডে জায়গা ক্রয় করে উক্ত সাথে মসজিদ নির্মান করে দিয়েছেন। গত ১৫ মার্চ সিআইপি জালাল আহমেদের পক্ষে উপজেলার সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের মনতলা কাজী বাড়ি জামে মসজিদের উন্নয়ন কাজে, মসজিদ কমিটির সদস্যদের হাতে নগদ ১ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা তুলে দেন। ফরিদগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কমিটির কল্যাণ তহবিলে গত ১ এপ্রিল ৫ লক্ষ টাকা অনুদান দেন।
তিনি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যুবসমাজকে উৎসাহিত করতে সামাজিক ও ক্রীড়া অনুষ্ঠানে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছেন।

এছাড়া দরিদ্র মানুষকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, করোনাকালে ফরিদগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে সহযোগিতা করেছেন। করোনার কারণে চাকরি হারানো কাতার প্রবাসীদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন তিনি।

জালাল আহমেদ বলেন, নিজের যোগ্যতা আর মেধা দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, অর্থ উপার্জন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। নিজের ভাগ্য নিজেকেই পরিবর্তন করতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন শতভাগ চেষ্টা। কেউ আপনার ভাগ্য বদল করে দিতে পারবে না, সাময়িক কিছু সহযোগিতা পাবেন মানুষের কাছে।

এই সফল প্রবাসী বলেন, কাতারে বাংলাদেশিদের ছোট ছোট অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছেন। আমার কাছে যারা আসে আমি সবাইকে সবসময় উৎসাহ দেই। বলি আরো বড় হতে হবে, কাতারে প্রচুর পরিমাণ কাজ রয়েছে, কাজের জন্য সবসময় চেষ্টা থাকতে হবে। 

এই বিভাগের আরো খবর