শনিবার   ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ২৯ ১৪৩২   ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২০

দিনাজপুরে শীতের দাপট চরমে

মোঃ শাহ্ আলম মন্ডল, দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫  

দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দিনাজপুরে চলতি মৌসুমের অন্যতম সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা আজ সারাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ, ফলে শীতের অনুভূতি ছিল আরও বেশি ও কনকনে।

 

আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়ায়। সেখানে সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন।

 

এছাড়া রংপুরে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস,  সৈয়দপুরে ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস,  ডিমলা (নীলফামারী) ১২ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস,  বগুড়ায় ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঈশ্বরদী (পাবনা) ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস,  রাজশাহীতে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস,  রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বদলগাছি (নওগাঁ) ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যশোরে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চুয়াডাঙ্গায় ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং শ্রীমঙ্গলে (মৌলভীবাজার) ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

ভোর থেকে দিনাজপুরসহ আশপাশের এলাকায় ঘন কুয়াশা দেখা যায়। সকালের দিকে ঠাণ্ডা বাতাস বইতে থাকায় সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। 

 

বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষিশ্রমিক, রিকশাচালক ও দিনমজুররা সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন। ভোরবেলা কাজে বের হতে না পারায় অনেকের দৈনিক আয় ব্যাহত হচ্ছে। শীতের কারণে শিশুরা সহজেই ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

দিনাজপুর জেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বলেন উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে শুষ্ক ও ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় শীতের অনুভূতি আরও বাড়ছে। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা সামান্য ওঠানামা করলেও শীতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।

 

তীব্র শীতের কারণে দিনাজপুরের গ্রাম ও শহরাঞ্চলে মানুষ গরম কাপড় ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে। শীতবস্ত্রের চাহিদা বাড়লেও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য তা এখনো অপ্রতুল। বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

 

চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, শিশু ও বয়স্কদের শীত থেকে সুরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গরম কাপড় ব্যবহার, পর্যাপ্ত উষ্ণ খাবার গ্রহণ এবং ভোরের ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির প্রথম ভাগ পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। মাঝে মাঝে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

 

এদিকে দিনাজপুরে দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় শীতের প্রকোপ নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সাধারণ মানুষ এখন অপেক্ষায়, কবে একটু রোদে গা গরম করার সুযোগ মিলবে।

 

এই বিভাগের আরো খবর