রোববার   ২৬ অক্টোবর ২০২৫   কার্তিক ১১ ১৪৩২   ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১২

কেউ পাশে না থাকলেও জুলাই যোদ্ধাদের পাশে ছিলেন একমাত্র মীর শাহে আল

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২৫  

জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা জীবন বাজি রেখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে রাজপথে নেমেছিল। সে সময় গুলিবর্ষণ ও দমন-পীড়নে প্রাণ হারান প্রায় দুই হাজার আন্দোলনকারী, আহত হন বিশ হাজারেরও বেশি। তাঁদের মধ্যে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গর্ব—দুজন শহীদ, শহীদ সেলিম মাস্টার ও শহীদ রনি। আর আহতদের মধ্যে ছিলেন সাহসী জুলাই যোদ্ধা মুশফিক সোহাগ, যার শরীরে বিদ্ধ হয়েছিল তিন শতাধিক বুলেট।

 

দেশে যখন শোক, হতাশা আর ভয় ছায়া ফেলেছিল, তখন শহীদ পরিবারগুলোর পাশে কেউ দাঁড়ায়নি—একজন ছাড়া।

সেই একজন হলেন বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের এমপি প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম।

 

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকেই তিনি শহীদদের পরিবারের পাশে রয়েছেন। দুজন শহীদের কবর পাকাকরণ ও টাইলস করে দিয়েছেন, তাঁদের নামে শিবগঞ্জের বিভিন্ন রাস্তার নামকরণ করেছেন, এবং প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তাও দিয়েছেন।

 

এছাড়াও, শিবগঞ্জ থানা চত্বরে পূর্বে ‘তারেক রহমান স্কয়ার’ নামে একটি চত্বর ছিল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে সেই চত্বরের নাম পরিবর্তন করে ‘মীর মুগ্ধ স্কয়ার’ নামকরণ করেন মীর শাহে আলম।

তিনি জানান, এ নামকরণের উদ্দেশ্য হলো শহীদদের আত্মত্যাগ ও আগামী প্রজন্মের দেশপ্রেমকে স্মরণে রাখা—যাতে শিবগঞ্জের মানুষ চিরকাল ত্যাগ, মানবতা ও স্বাধীনতার চেতনাকে লালন করে।

 

শহীদ রনির মা সাহেনা বেওয়া দীর্ঘদিন ধরে জীর্ণ মাটির ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। তাঁর অসহায় অবস্থার কথা জেনে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর জন্য পাকা বাড়ি নির্মাণের ব্যবস্থা করেন মীর শাহে আলম।

নতুন ঘর হাতে পেয়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন সাহেনা বেওয়া। তিনি বলেন, হামার ছল মরে যাবার পর থ্যাকে শাহ আলম হামার খোঁজ ল্যায় বাবা, হামার লতুন বাড়ি করে দিলো, এখন ভাল থাকতে পারমো।

অন্যদিকে, আহত জুলাই যোদ্ধা মুশফিক সোহাগের শরীরে ছিল তিন শতাধিক গুলির ক্ষত। তিনি মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন, কিন্তু পাশে কেউ এগিয়ে আসেননি। তখনও মীর শাহে আলমই একমাত্র মানুষ, যিনি তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সহযোগিতায় তাঁকে ব্যাংককে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তিনি।

বর্তমানে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন সোহাগ বলেন, মীর শাহে আলম আংকেলের সহযোগিতায় আমি এখন চিকিৎসা নিচ্ছি। আমার বিপদে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল না দাঁড়ালেও বিএনপি ও মীর শাহে আলম সবসময় পাশে ছিল।

শহীদ সেলিম মাস্টারের মা-ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মীর শাহে আলমের মতো মানুষ যেন এমপি হয়ে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পান, এটাই আমাদের দোয়া।

 

শিবগঞ্জ জুড়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু মীর শাহে আলমের এই মানবিক ভূমিকা। স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, রাজনীতিতে এখনো এমন মানুষ আছেন—যিনি ক্ষমতার জন্য নয়, মানুষের জন্য রাজনীতি করেন।

এই বিভাগের আরো খবর