শুক্রবার   ০৩ অক্টোবর ২০২৫   আশ্বিন ১৭ ১৪৩২   ১০ রবিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৫

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুর দুইদিন পার

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২ অক্টোবর ২০২৫  

বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম কিংবদন্তি, বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুর দুইদিন পেরিয়ে গেলেও তার দাফন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়নি। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তার মরদেহ এখনো পড়ে আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তার পরিবারের মধ্যে দাফনের স্থান ও জানাজা নিয়ে তীব্র মতবিরোধের কারণে এই নজিরবিহীন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।


হাসপাতাল সূত্রে দুই দিন আগেই তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হলেও, রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে পরিবারকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। একটি নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তোফায়েল আহমেদের জানাজায় বিপুল জনসমাগমের ভয়ে আতঙ্কিত।

 

তার নিজ এলাকা ভোলায় জানাজা অনুষ্ঠিত হলে সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামতে পারে, যা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রতি বিশাল জনসমর্থনের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে বলে আশঙ্কা করছে সরকার। এই কারণেই ভোলায় জানাজার অনুমতি না দিয়ে ঢাকায় কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে দাফন সম্পন্ন করার জন্য পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

কিন্তু তোফায়েল আহমেদের পরিবার সরকারের এই প্রস্তাবে রাজি নয়। তারা তাদের প্রিয় নেতাকে তার জন্মস্থান ভোলায়, তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছে। এই দ্বন্দ্বের কারণেই তার মৃত্যুর দুইদিন পরও মরদেহ হাসপাতাল থেকে বের করা সম্ভব হয়নি।
এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে পরিবারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি।

 

তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা ও সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল কারাগারে থাকায় এবং পরিবারের অন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সদস্যরা আত্মগোপনে থাকায় দাফনের মতো একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরিবারের পক্ষ থেকে এমনও

অভিযোগ উঠেছে যে, যারা বর্তমানে মরদেহ তদারকির দায়িত্বে আছেন, তারা পরিবারের অন্য সদস্যদের হাসপাতালে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এদিকে, এই কিংবদন্তি নেতার মৃত্যুতে তার নির্বাচনী এলাকা ভোলাসহ সারা দেশের আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে বিস্ময়করভাবে, যে সমস্ত সুবিধাবাদী নেতারা দীর্ঘকাল ধরে তোফায়েল আহমেদের ছত্রছায়ায় থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন, গত ৫ই আগস্টের পর

থেকে তাদের কেউই এই দুঃসময়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াননি বা কোনো খোঁজখবর নেননি বলে পরিবার সূত্র জানিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যু নিয়ে গত দুইদিন ধরে নানা ধরনের গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। কখন এই অচলাবস্থার অবসান হবে এবং জাতির এই বরেণ্য সন্তানকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাবে দেশের মানুষ, সেদিকেই এখন সবাই তাকিয়ে আছে।

 

এই বিভাগের আরো খবর