ব্রেকিং:
জাকসু নির্বাচনের মঞ্চেই নিভে গেল তরুণ শিক্ষিকার আলো শুক্রবার দুপুরের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা সম্ভব: জাকসু নির্বাচন কমিশন

শনিবার   ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ২৯ ১৪৩২   ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৯

দুর্বলতা ও প্রতিপক্ষের কৌশলে ভরাডুবি ছাত্রদলের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮তম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট বিপুল জয় পেয়েছে। ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৮টি কেন্দ্রীয় পদের মধ্যে ২৩টিতে জয়ী হয়েছে তারা। অন্যদিকে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কোনো পদে জিততে না পেরে ভরাডুবির শিকার হয়েছে। এই ফলাফলে দেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের বিপুল জয়, ছাত্রদলের শূন্যতা

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ডাকসু নির্বাচন ছিল দেশের প্রথম বড় নির্বাচন। ফলে এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ ছিল তুঙ্গে।

যেখানে একমাত্র পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছিল ছাত্রদল, সেখানে তারা কেন্দ্রীয় কোনো পদে জয় পায়নি। কেবল হলভিত্তিক কিছু পদেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। অন্যদিকে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের হয়ে শিবির সমর্থিত প্রার্থীরা ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৩টি পদে জয়লাভ করেছে।


ছাত্রদলের ভরাডুবির কারণ: দুর্বল সংগঠন ও ভাঙন

শিক্ষার্থীদের মতে, ছাত্রদলের দীর্ঘ ১৫ বছরের অনুপস্থিতি, সাংগঠনিক দুর্বলতা, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, গ্রুপিং রাজনীতি এবং প্রচারণার ঘাটতি তাদের বড় ব্যর্থতার কারণ।

  • প্যানেল ঘোষণা দেরিতে হওয়া

  • প্রার্থীদের অজনপ্রিয়তা

  • সামাজিক মাধ্যমে দুর্বল প্রচারণা

  • অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস

  • নেতিবাচক প্রচারণার জবাব না দেওয়া

এসব কারণে ছাত্রদলের প্যানেল শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।


ছাত্রদের মনোভাব না বোঝায় ক্ষতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন, ছাত্রদল এখনো পুরোনো ধাঁচের রাজনীতিতে আটকে আছে। ৫ আগস্টের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সক্রিয় না হয়ে তারা বরং দলীয় কর্মসূচিতে বেশি সময় দিয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।


ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের কৌশল

শিবির এবার কৌশলগত রাজনীতি করে এগিয়ে ছিল।

  • অনলাইন ও অফলাইনে শক্তিশালী প্রচারণা

  • নারী ও অমুসলিম প্রার্থী রাখা

  • শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কাজ (ইফতার, ফিল্টার, বিনামূল্যে ওষুধ)

  • দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা (কোচিং সেন্টার, নতুন শিক্ষার্থী তৈরি)

  • ধর্মীয় রাজনীতির বাইরে ইতিবাচক ইমেজ তৈরি

এইসব কারণে শিবিরের ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।


বিশ্লেষকদের অভিমত

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ছায়াতলে থেকেও শিবির গোপনে সংগঠন শক্ত করেছে। পাশাপাশি কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে ছাত্রদল সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।


ছাত্রশিবিরের বক্তব্য

শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন,
“শিক্ষার্থীরা পুরোনো রাজনৈতিক ভাষণ শুনতে চায় না। তারা বাস্তব ও সরাসরি যোগাযোগ, শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস চায়। আমরা সেই পালস বুঝে কাজ করেছি। তাই সফল হয়েছি।”

এই বিভাগের আরো খবর