একে একে দেশ ছাড়ছেন চলচ্চিত্রের নায়কেরা, ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক অদ্ভুত শূন্যতা তৈরি হচ্ছে। একে একে দেশের প্রথম সারির নায়করা অভিনয়ের মঞ্চ ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ইমন। এর আগে জায়েদ খান, সাইমন সাদিক, অমিত হাসান, আমিন খান ও আলেকজান্ডার বো যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। সর্বশেষ তালিকায় যুক্ত হয়েছেন তরুণ অভিনেতা বাপ্পি চৌধুরী।

শাকিব ফিরেছেন, বাকিরা অনিশ্চিত

নায়ক শাকিব খান কয়েক মাস যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান শেষে দেশে ফিরেছেন এবং শিগগিরই নতুন চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু অন্যরা বেশিরভাগই ফেরার কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি। কেউ স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন, কেউ চাকরিতে যুক্ত হয়েছেন, আবার কেউ সাংস্কৃতিক আয়োজনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

সিনেমা হল বন্ধ, এফডিসিতে স্থবিরতা

দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অবস্থা বর্তমানে টালমাটাল। বড় বাজেটের চলচ্চিত্রের কাজ নেই বললেই চলে। এফডিসির ৯ নম্বর ফ্লোরে চলছে শুধু ‘তছনছ’ নামের একটি ছবির শুটিং। এদিকে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিনেমা হলগুলো। সম্প্রতি যশোরের ঐতিহাসিক মণিহার, বগুড়ার মধুবন ও লায়নসসহ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

কে কোথায়?

ইমন: পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। জানিয়েছেন ফিরবেন, তবে সময় লাগবে।

জায়েদ খান: মামলার ঝামেলা এড়িয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজনে যুক্ত, ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই।

সাইমন সাদিক: নিউইয়র্কে চাকরিতে ব্যস্ত, মন্তব্যে রাজি নন।

অমিত হাসান: তিনিও চাকরিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

আমিন খান ও আলেকজান্ডার বো: দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রে, আলেকজান্ডার মূলত কারাতে শিক্ষায় যুক্ত; দেশে ফেরার ইঙ্গিত নেই।

বাপ্পি চৌধুরী: হঠাৎ দেশ ছাড়ায় সবাই বিস্মিত; তার যুক্তরাষ্ট্র যাত্রার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়।

কাজী মারুফ: দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী, দেশে ফেরার পরিকল্পনা নেই।

ভবিষ্যতের প্রশ্ন

দেশীয় চলচ্চিত্রের সোনালি দিনগুলো যেন ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। একদিকে সিনেমা হলগুলো একের পর এক বন্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে দর্শকদের প্রিয় নায়করা দেশ ছাড়ছেন। দর্শক ও নির্মাতাদের মনে তাই বড় প্রশ্ন–বাংলাদেশি চলচ্চিত্র কি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, নাকি এ অঙ্গন হারিয়ে ফেলবে তার উজ্জ্বলতা?