শুক্রবার   ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ২০ ১৪৩২   ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৬

শেখ হাসিনা কিছু খুদে স্বৈরাচার রেখে গেছেন: আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫  

জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
শেখ হাসিনা কিছু কিছু খুদে স্বৈরাচার রেখে গেছেন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে সংসদে পাস করুন। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। সেটা না করে যদি কেউ বলে আমাদের এই দাবি না মানলে নির্বাচন করবো না অথবা আমরা আন্দোলন করবো- এটা হচ্ছে অগণতান্ত্রিক।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ১ম বর্ষ, যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দল’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শুধু রাজনীতিকে গণতান্ত্রিক করলে চলবে না, অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশীদার হতে হবে। কোনো একক গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা করে অর্থনীতি চালানো যাবে না। অর্থনীতি সবার জন্য হতে হবে । প্রত্যেকটি নাগরিক যেন অর্থনীতিতে অংশ নিতে পারে , উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারে। গ্রাম থেকে শুরু করে, শিক্ষিত যারা আছে তাদের জন্য সবাই যাতে অংশ নিতে পারে তার জন্য পরিকল্পনা করছি আমরা। নারী থেকে শুরু করে অবসর নেওয়া ৬০ বছরে মানুষকে কাজে লাগাতে হবে।

আমীর খসরু বলেন, এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নাগরিকদের যখন আয় বাড়বে তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়বে, তখনই তারা সুনাগরিক হবেন। তারা ট্যাক্স দেবেন। তখন ট্যাক্সের টাকা দিয়ে দাবি করতে পারবেন যে, আমার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এটা করা যাবে না। আমার টাকায় সেটা করা যাবে না। আমার ট্যাক্সের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতে হবে বাংলাদেশের জন্য।

২৪ এর আন্দোলনের কৃতিত্ব নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, এটি সমস্ত বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলাফল।

রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কৃতি বদলাতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মালিক জনগণ, তারা সিদ্ধান্ত নেবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল হতে হবে। অন্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তার প্রতি, তার মতের প্রতি সম্মান জানাতে শিখতে হবে।

শেখ হাসিনা কিছু কিছু ক্ষুদে স্বৈরাচার রেখে গেছে এমন মন্তব্য করে খসরু বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে সংসদে পাশ করুন, এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। সেটা না করে যদি কেউ বলে আমাদের এই দাবি না মানলে নির্বাচন করবো না অথবা আমরা আন্দোলন করবো, এটা হচ্ছে অগণতান্ত্রিক। এটা শেখ হাসিনার চিন্তার প্রতিফলন, এটা থেকে বোঝা যায়।


তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে একটা জিনিস প্রতিষ্ঠিত, বিপ্লব উত্তর সমস্ত দেশগুলো যত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে সেসব দেশ ভালো করছে। আর যেসব দেশ বিপ্লব পরবর্তী এই ধরনের কাজ করেনি তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বিধা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চলছে, সেই দেশগুলোতে এখন গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশগুলোতে সমাজ বিভক্ত, সেই দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, গণতন্ত্র তো দূরের কথা । এই জন্য আমাদের এক বছর অলরেডি অতিরিক্ত হয়ে গেছে, যত তাড়াতাড়ি জনগণের ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ জনগণের অধিকার, মালিকানা, স্বাধীনতা, মুক্ত চিন্তা কিছুই থাকবে না। দিনের শেষে দেখবেন, একটা সাংঘর্ষিক জাতি হিসেবে আমরা একে অন্যের সঙ্গে যুদ্ধ করছি।

তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং একটার পর একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে যেতে হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া হচ্ছে কারেকশন প্রসেস, এটা কারেক্ট করে । কারণ জনগনের কাছে আপনাকে আবার যেতে হবে। এটা যদি মাথায় থাকে তাহলে আপনি জনগণের পক্ষে থাকবেন । আর যদি মনে করেন শেখ হাসিনার মতো ভোট দখল করে থেকে যাবেন, তাহলে আপনি স্বৈরাচার হবেন। তাই নির্বাচন হচ্ছে ফিল্টারেশন প্রসেস, এই প্রসেসের মাধ্যমে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন হয়। আর দ্বিতীয় কোনো পন্থা নেই। আর যদি অন্য পন্থা চিন্তা করছেন, তবে এটা আগামী দিনে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতি বয়ে আনবে। সুতরাং আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি, সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা রফিকুল ইসলামসহ অন্য নেতারা।

এই বিভাগের আরো খবর