ব্রেকিং:
‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ সকাল ৬টায় ফজরের ঠিক পরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন—ফজরের পর ইন্তেকাল করেছেন বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর বেঁচে নেই...

মঙ্গলবার   ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১৬ ১৪৩২   ১০ রজব ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১১৪

পঞ্চগড়ে গলায় ফাঁস অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধুর আত্নহত্যা

মোঃরাশেদুল ইসলাম, পঞ্চগড়

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২৩  

পঞ্চগড়ে স্থানীয় মাতব্বরদের শালিসি মীমাংসার কয়েকদিন পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ। সদর উপজেলার ৬ নং সতমেরা ইউনিয়নের কাকপাড়া গ্রামে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ও এক সন্তানের জননী মোছাঃ লিপি (২৮) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। শনিবার (১৩-মে) আনুমানিক সন্ধা ৬ টার সময় তার নিজ সয়ন ঘরে গলায় ফাঁসদিয়ে আত্নহত্যা করেছে বোলে জানা গেছে। স্থানীয়রা বলেন, কাকপাড়া এলাকার নুর ইসলাম (বকুরু) এর ছেলে মোঃ লিটন(২৮) ও  মৃত ইসমাইল ওরোফে (দুখু) মিয়ার ছেলে মোঃ গাজি দুজনেই এক সাথে ব্যবসা করতো। একটি দুর্ঘটনায় গাজীর একটি হাত  অচল হয়ে যায়। তারপর থেকে গাজীর বউয়ের সাথে লিটনের পরকীয়া প্রেম গড়ে ওঠে, এক পর্যায়ে গাজীর স্ত্রী লিপি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে গাজীর স্ত্রী লিপি লিটনের পরকীয়া সম্পর্ক এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়লে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। শুরু হয় বিষয়টি নিয়ে এলাকার অসাধু মানুষের বাণিজ্য। স্থানীয়রা আরো জনান, লিপি ও লিটন এর দীর্ঘদিনের পরকিয়ার বিষয়টি এলাকায় জনাজানি হলে স্থানিয় ইউপি সদস্য মোঃ জহীরুল ইসলাম ও এলাকার মাতাবার  মোঃ মাহারাজা ওরফে (ইবরাহীম), মোঃ আলম এরা কাউকে কিছু না জানিয়ে অর্থের বিনিময় রাতের অন্ধকারে গৃহবধূ লিপির ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে পুনরায় লিপিকে তার স্বামী গাজীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। গৃহবধূ লিপির ইচ্ছা ছিল যেহেতু লিটন'কে নিয়ে তার বদনাম হয়েছে তাই লিটনকেই সে বিয়ে করবে। কিন্তু তা হতে দেয়নি স্থানীয় মাতব্বরা। লিপি'কে জোর করে তার স্বামির বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার আনুমানিক ৪ দিন যেতে না যেতেই গৃহবধূ লিপির  আত্নহত্যার ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকার নতুন হাট এলাকায় একই ঘটনা ঘটলেই কাউকে কোনো পাত্তা না দিয়ে এসব মাতব্বর গ্রুপ  অর্থের বিনিময়ে তাদের খেয়াল খুশি মত এসব অনিয়ম আইন বিরোধী কর্মকান্ড করেই চলেছে।

এরা নিজেই অর্থের বিনিময়ে বাড়িতে সালিশের মাধ্যমে এসব সমাজবিরোধী কাজ সমাধান দেওয়ার কারণেই  ৫ মাসের অন্তঃসত্তা গৃহবধূ লিপির এই অকাল মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকার মানুষের ধারণা। এলাকায় কোন ঘটনা ঘটলেই এই চক্রটি সেখানে গিয়ে হাজির হয়। তবে লিপি আক্তার মৃত্যুর আগে একটি  চিরকুটে লিটন'কে দায়ী করে লিখে গেছে আমার মৃতুর জন্য লিটন দায়ী। আমি ওর  বিচার ফাঁসি চাই। দোহাই আপনাদের, আমার দেহটা'কে কাঁটা ছেরা করবেন না। আনি তো বেঁচে থাকতে চাই ছিলাম। আমাকে বাঁচতে দিলোনা। পঞ্চগড় জেলায় প্রতিনিয়ত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় মাতব্বরেরা নারী সংশ্লিষ্ট অপহরণ, নারী ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণের মত ঘটনা অর্থের বিনিময়ে আপোস মীমাংসা করছে। বেশিরভাগই ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক এই আপোস মীমাংসা করা হয়। যার ফলে জেলায় আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা হাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ বোলে দ্বাবী করেছেন সুশীল সমাজ। পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল লতিফ মিঞা  লিপি আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,  মৃত দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরো খবর