বৃহস্পতিবার   ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ২৬ ১৪৩২   ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৯২

দেশ চালানোর টাকা নেই তালেবানের হাতে!

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০২১  

 

দীর্ঘ দুই দশক পর আবারও আফগানিস্তানের মসনদে আসীন তালেবানের হাতে দেশ চালানো মতো অর্থ নেই। কীভাবে দেশ চালাবে তা নিয়ে সংশয়ের।

আফগানিস্তানের রিজার্ভে যত সম্পদ ছিল, তার মাত্র শূন্য দশমিক ১ কিংবা ২ শতাংশ তালেবানের হাতে যাবে, যা মোটেও যথেষ্ট নয়। বাকিটা আটকে থাকবে দেশের বাইরে। চলতি বছরের জুনের হিসাব অনুযায়ী দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ড্যাব) রিজার্ভ ছিল প্রায় এক হাজার কোটি ডলার। যার মধ্যে স্বর্ণ ছিল ১৩০ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের। আর বিদেশি মুদ্রার নগদ রিজার্ভ প্রায় ৩৬ কোটি ডলার।


ড্যাব-এর স্টেটমেন্ট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেই আফগানিস্তানের বেশিরভাগ সম্পদ রক্ষিত। এর মধ্যে নিউইয়র্কের ব্যাংকটিতেই আছে ১৩২ কোটি ডলারের সোনা। আবার আফগানিস্তানের ৬১০ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগেরও বিস্তারিত জানায়নি ড্যাব।

তবে ধারণা পাওয়া গেছে, ওগুলোর বেশিরভাগও মার্কিন ট্রেজারি বন্ড ও বিল আকারে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কড়া নির্দেশ-এসবের এক টাকাও যেন তালেবানের হাতে না যায়। সোমবারই এক ডিক্রিতে যুক্তরাষ্ট্রে রক্ষিত আফগান সরকারের ৯৫০ কোটি ডলার জব্দ করেছে বাইডেন প্রশাসন।

প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদগুলোও এখন তালেবানের নাগালের বাইরে। যুক্তরাজ্য আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিলেও তালেবানদের মাধ্যমে সে টাকা খরচ হওয়ার সুযোগ নেই। বিশ্বব্যাংক কিংবা ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের টাকায় হাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই তাদের। আফগানিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা আটকে দিয়েছে আইএমএফ। এ অবস্থায় যুদ্ধবিধ্বস্ত এ দেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার পথ খুঁজছে তারা। তাহলে কি মাটির নিচের এক লাখ কোটি ডলারের ‘গুপ্তধন’-এর টার্গেটে তালেবান?

গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে আমেরিকার সেনাবাহিনী ও সে দেশের ভূতত্ত্ববিদরা দশ বছর আগে খবর পেয়েছে দেশটিতে রয়েছে এক লাখ কোটি ডলার মূল্যের ‘গুপ্তধন’। এ গুপ্তধনের মধ্যে রয়েছে খনিজ লিথিয়াম মৌল। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দারিদ্র্যের জমাট অন্ধকার ফুঁড়ে আফগানিস্তানকে আলোয় ফেরাতে পারে মাটির তলায় থাকা এই অত্যন্ত দুর্লভ ‘গুপ্তধন’।

তা ছাড়াও রাশি রাশি তামা, সোনা, আকরিক লোহাসহ নানা ধরনের বিরল মৌল রয়েছে বিভিন্ন প্রদেশের মাটির নিচে। এই সব দুর্লভ ‘গুপ্তধন’-ই ঘুরে দাঁড়ানোর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে তালেবান শাসিত আফগানিস্তানের। মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে আফগান অর্থনীতির।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এসব খনির সন্ধান ও উত্তোলনের জন্য যে প্রযুক্তি ও পরিকাঠামো তৈরিতে যে টাকা প্রয়োজন-তালেবানরা তা পাবে কোথায়? নির্ভর করতে হবে সেই আফিমের ওপরই? যদিও তালেবানরা জানিয়েছে আফগানিস্তানে হেরোইন তৈরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ প্রতিজ্ঞা করে বলেছেন, বিশ্বের এক নম্বর আফিম উৎপাদক দেশ হিসাবে ছড়ানো বদনাম তারা ঘোচাতে চান। এখন থেকে কেউ হেরোইন ব্যবসা বা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স ও এএনআই

এই বিভাগের আরো খবর