সোমবার   ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫   ভাদ্র ১৭ ১৪৩২   ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৬

অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গড়তে চায় বিএনপি : তারেক রহমান

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০২৫  

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘প্রতিটি জাতি-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি আমাদের আস্থা ও সম্মান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ভাষার বহুত্ব, সংস্কৃতির বৈচিত্র্য এবং প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর স্বাতন্ত্র্য বোধ এবং তাদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সব জাতিগোষ্ঠীর সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার এবং জীবনযাপনের নিরাপত্তা বিধানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে।’

গতকাল শনিবার ময়মনসিংহ টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের প্রথম জাতীয় প্রতিনিধি সমাবেশে প্রধান অতিথির ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


তারেক রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদী আমলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভূমিকা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে প্রতিটি  মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের টার্গেট নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করেছে। বিএনপি এই নির্বাচনে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সক্রিয় সমর্থন চায়।


বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এক একটি রং, যাকে আমরা রেইনবো নেশন বলে মনে করি।’ তিনি বলেন, ‘সব ভাষাভাষি ও জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে বিএনপি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চায়।’ তারেক রহমান আরো বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ শুধু বাঙালির নয়, ভিন্ন ভাষাভাষি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীরও বৈধভাবে বসবাসের স্থান।’

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বৃহত্তর ময়মনসিংহের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন সময়ে মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়া বিরিশিরি কালচার একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে ক্ষু জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি চর্চা ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন।



সমাবেশে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘একটি ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনের পর আজ নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই নতুন বাংলাদেশে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি চক্রান্ত চলছে, যেখানে উগ্রবাদী গোষ্ঠী মানুষকে বিভক্ত করতে চাচ্ছে। আমরা একাত্তর সালে যেমন আমাদের অধিকার রক্ষা করেছি, তেমনি আজ আমাদের অধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।’

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য ফ্রন্টের সভাপতি বিজন কান্তি সরকার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, অ্যাডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবুল, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম প্রমুখ।


এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সভাপতি মৃগেন হাগিদগের, সদস্যসচিব রোকনুজ্জামান সরকার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অখিল চন্দ্র কোচ ও মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি পরীক্ষিত দেব বর্মা। এর আগে ময়মনসিংহ টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে জাতীয় সংগীত এবং ঐতিহ্যবাহী পোশাকে মনোমুগ্ধকর দলগত নৃত্য পরিবেশন করা হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির পক্ষ থেকে নারীদের মাঝে ২৬টি সেলাই মেশিন বিতরণ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশে ৩৭টি সমতল জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা নিজ নিজ এলাকার নৃত্য পরিবেশন করেন এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এই বিভাগের আরো খবর