বৃহস্পতিবার   ১৪ আগস্ট ২০২৫   শ্রাবণ ৩০ ১৪৩২   ১৯ সফর ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩২

আগে জুলাই সনদ, পরে নির্বাচন

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২৫  

আইনি ভিত্তি দিয়ে জুলাই সনদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে গতকাল বুধবার রাজধানীতে মিছিল-সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, আগে জুলাই সনদ, পরে নির্বাচন হবে। নির্বাচন ভোটের অনুপাত (পিআর) পদ্ধতিতে হবে। ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর চায়। জামায়াত ইলেকশন চায়, সিলেকশন নয়।

বিকেল ৫টায় বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে ট্রাকে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে শুরু হয় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ। তবে মঞ্চের নির্মাণকাজের কারণে বেলা ৩টায় বিজয়নগর মোড় থেকে পল্টনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ৫টার পর পল্টন থেকে বিজয়নগরমুখী সড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল জমায়েতের কারণে।


অফিস ছুটির সময় সমাবেশে সড়ক বন্ধ হওয়ায় আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট হয়। ভোগান্তিতে পড়েন ওইসব সড়কের যাত্রীরা। সমাবেশ শেষে পল্টন মোড় ঘুরে কাকরাইল পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মিছিল যায়। এতে দুর্ভোগ আরও বাড়ে।

মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে ডা. তাহের বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘অধিকাংশ দলই জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে মত, ভিন্নমত ও নোট দিয়েছেন। সব কিছুর বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার পরও একটি দল বলছে, এর আইনি ভিত্তি নেই। তাহলে কী এ ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি আছে? সরকার তো মুখে স্বীকার করছে। কিন্তু সে অনুযায়ী যদি বাস্তবায়ন না করে, তাহলে ইমান থাকে?’

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা সংলাপে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সই করা এ সনদে বলা থাকবে কী কী সংস্কার, কীভাবে হবে। বিএনপি চায়, আগামী সংসদে গঠিত সরকার সংস্কার করবে। জামায়াতের দাবি, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগেই সংস্কার করতে হবে।

ডা. তাহের বলেন,  ‘ইলেকশন চাই, সিলেকশন নয়। ডিজাইনের মাধ্যমে নির্বাচন করে জনগণের ভোটাধিকার আবার হরণের পাঁয়তারা চলছে। যদি বিদেশি ডিজাইনে সাজানো নির্বাচন হয়, তাহলে মানুষ জীবন ও রক্ত দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করবে।’

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘একটি দল বাদে কেউ শর্তহীনভাবে জুলাই ঘোষণাকে গ্রহণ করেনি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার জরুরি। মাসের পর মাস আলোচনা করে সংস্কারে ঐকমত্য হওয়ার পর তারা বলছেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নেই। আইনি ভিত্তি যদি না থাকে, তাহলে সংস্কার কী হয়েছে?’

ডা. তাহের বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলছি– যেসব সংস্কারে ঐকমত্য হয়েছে, তার আলোকেই আইনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন হতে হবে। আমাদের বন্ধুরা বলেন, সংস্কার তারা সংসদে গিয়ে করবেন। আপনারা যদি সংসদে গিয়েই করেন, এখন সমস্যা কোথায়?’

২৫ বছরের মিত্র বিএনপির উদ্দেশে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘অনেকে বলেন, পিআর বুঝি না। জরিপে এসেছে ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর চায়। মানে জনগণ পিআর বোঝে। আর আপনি বুঝেও বোঝেন না! জামায়াত গণতন্ত্রের পক্ষে। গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতাই গ্রহণ করতে হবে।’

আলোচনার আহ্বান জানিয়ে ডা. তাহের বলেন, ‘দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাবেন না, জনগণের বিপরীতে দাঁড়াবেন না। আরেকটি এক-এগারোর ক্ষেত্র তৈরি করবেন না। আসুন অবাধ, জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ তৈরি করি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করুন, সংস্কারকে আইনি ভিত্তি দিন। সংস্কারকে আইনি ভিত্তি দিতে মাত্র এক সপ্তাহ লাগবে।’

সমাবেশে বক্তৃতা করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম, উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।


 

এই বিভাগের আরো খবর