সোমবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩২   ০৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৪

ভূমিকম্প আতঙ্কে বুটেক্সে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

মুনছুর রহমান, বুটেক্স প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২৫  

সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও আফটারশকের ঝুঁকির কারণে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ১১ দিনের জন্য সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ এবং আবাসিক হলসমূহ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

 

আজ (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. রাশেদা বেগম দিনা স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং পূর্ব ঘোষিত রুটিন অনুযায়ী আগামী ৭ ডিসেম্বর  থেকে পরবর্তী পরীক্ষাসমূহ অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপশি ছুটিকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলসমূহ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২৪ নভেম্বর সকাল ১১টার মধ্যে হলসমূহ খালি করতে হবে। 


 

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি এগিয়ে ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর তারিখ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।  ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ, অফিস, ক্লাসসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ৭ ডিসেম্বর থেকে যথারীতি পূর্বের ন্যায় চলবে।


 

আজ (২৩ নভেম্বর) সকালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর হতে আগত প্রকৌশলীগণ জরুরি ভিত্তিতে ক্যাম্পাসের ভবন ও হলগুলো পরিদর্শন করে। প্রাথমিক যাচাইয়ে ভবন ও হলগুলোতে সংস্কার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয় এবং শহীদ আজিজ হলের ৪০১ ও ৪০৩ নং নম্বর রুম বসবাসের অনুপযোগী বলে জরুরি মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



 

শহীদ আজিজ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব জানান, পরপর ভূমিকম্পের কারণে শহীদ আজিজ হলসহ বিভিন্ন হলে কিছু ফাটল বা অবকাঠামোগত দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। এজন্য আমরা প্রভোস্ট টিম শহীদ আজিজ হলে গিয়ে পুরো পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমরা কক্ষগুলো দেখেছি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং প্রাথমিক অবস্থা মূল্যায়ন করেছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত, ধৈর্য ধরে মোকাবিলা করতে হবে এবং প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আমাদের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।

 

সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলের শিক্ষার্থী মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, “সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর থেকে আমাদের হলের ছাত্রদের মনে এক ধরনের অস্বস্তি আর আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ভূমিকম্পের সময় আমরা সবাই যে কতটা অসহায় সেইটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। এর মধ্যে আমাদের হলটা এমন যে, রাস্তা দিয়ে যদি একটু বড় কোনো গাড়ি যায়, তাহলেই পুরো বিল্ডিং  কাঁপতে থাকে। প্রতিবার সেই কম্পনে মনে প্রশ্ন জাগে- এটা কি গাড়ির কম্পন, নাকি আরেকটা ভূমিকম্প?”



 

গত দুই দিনের ভূমিকম্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম হলের ১ম থেকে ৪র্থ তলা পর্যন্ত এক্সটেনশন অংশে দেয়ালে ফাটল, শহীদ আজিজ হলের সিলিংয়ের বিম ও পিলারে ফাটল এবং ওসমানী হলে প্লাস্টার খসে পড়ার ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় গতকাল রাতেই আবাসিক শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে পরীক্ষাসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের দাবি জানান। এরপর উপাচার্য আশ্বাস দিলে তারা হলে ফিরে যান।