বুধবার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ২৬ ১৪৩২   ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৩

ট্রাম্প প্রশাসনে এক বছরে ৮৫ হাজারের বেশি মার্কিন ভিসা বাতিল

রাফিউল ইসলাম তালুকদার

প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫  

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব ধরনের মিলিয়ে অন্তত ৮৫ হাজার ভিসা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ভিসার প্রায় অর্ধেকই বিভিন্ন অপরাধ যেমন মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, হামলার অভিযোগ ও চুরির মতো অপরাধ সম্পর্কিত কারণে বাতিল হয়েছে।

কর্মকর্তা আরও জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর ভিসা বাতিলের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।

 

সম্প্রতি ডানপন্থী মার্কিন রাজনৈতিক কর্মী চার্লি কার্কের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যারা প্রকাশ্যে উদযাপন করেছে, এমন অভিযোগে কিছু ব্যক্তির ভিসাও বাতিল করেছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। মোট বাতিল হওয়া ভিসার প্রায় ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী, যার সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি। ফিলিস্তিনে ইসরাইলী আগ্রাসনের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসগুলোতে ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলন চালানো কিছু আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা প্রত্যাহারের ঘটনাও ঘটেছে।

 

চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশে বলা হয়, এ ধরনের “বিদেশি শিক্ষার্থী” “ইহুদিবিদ্বেষী” আচরণে লিপ্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের টার্গেট করা হয়েছিল তাদের মধ্যে রঞ্জনী শ্রীনিবাসন ও রুমাইসা ওজতুর্কের মতো শিক্ষার্থী আছেন। এমনকি স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্য থেকেও যেমন মাহমুদ খলিলসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এই পদক্ষেপের আওতায় পড়েন।

সমালোচকরা বলছেন, মত প্রকাশের কারণে কাউকে বহিষ্কার করা মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর পরিপন্থী। অনেক শিক্ষার্থী আইনি লড়াইয়ে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতেও সক্ষম হয়েছে।

 

স্টেট ডিপার্টমেন্ট গত আগস্টে জানায়, এ পর্যন্ত বাতিল হওয়া ৬ হাজার ভিসার দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ওভারস্টে, চুরি, হামলা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের মতো অভিযোগের ভিত্তিতে বাতিল করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও অভিবাসীদের ওপর আরও কঠোর নজরদারি

 

এসব পদক্ষেপ কেবল যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিদেশিদের বিরুদ্ধে নয়; নতুন ভিসা আবেদনকারীরাও রাজনৈতিক মতামত যাচাইয়ের বাড়তি নজরদারির মুখে পড়ছেন। ২০২৬ সালে মার্কিন সরকার অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই, বাইডেন আমলে অনুমোদিত শরণার্থীদের পুনরায় সাক্ষাৎকার নেওয়া, এবং আরও কয়েকটি দেশের ওপর পূর্ণ বা আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

এছাড়া এইচ-ওয়ান বি ভিসার খরচ বাড়ানো হয়েছে যাতে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করতে আগ্রহী বিদেশিদের কাছে এই ভিসা কম আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকে শুরু করে বর্তমান প্রশাসন পর্যন্ত তার নীতির একটি বড় অংশই অভিবাসন লক্ষ্য করে। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর তিনি “মুসলিম ব্যান” এর দ্বিতীয় সংস্করণ কার্যকর করেন এবং শরণার্থী গ্রহণের হার নাটকীয়ভাবে কমিয়ে দেন।
 

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে প্রবেশকারীর সংখ্যাও  উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে, এবং দেশের ভেতরে অবস্থানরত "অবৈধ" অভিবাসীদের দ্রুত বিতাড়নের প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যেসব দেশের নাগরিকদের সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি (টিপিএস) ছিল, তাদের সেই সুরক্ষা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর