মঙ্গলবার   ১৯ আগস্ট ২০২৫   ভাদ্র ৩ ১৪৩২   ২৪ সফর ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৫০৩

৯তলা থেকে পড়ে ঢাবির প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু, বন্ধুদের দাবি হত্যা

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

রাজধানীর কাঁঠালবাগানের একটি বাসার ৯ তলার বারান্দা থেকে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাক্তন এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তবে ঢাবির ওই শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বন্ধুদের দাবি তাকে বারান্দা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কলাবাগান থানাধীন কাঁঠালবাগান ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের ১৬৩ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। সাবেক ওই শিক্ষার্থীর নাম ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদ (৩৩)। আসিফ ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-২০০৬ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আসিফের বন্ধু ও ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী জানান, আসিফ কখনোই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আসিফের স্ত্রীর সাথে তার মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হতো। সে এই কথা আমাদের সাথেও শেয়ার করেছে। আমাদের ধারণা ঘটনার সময়ও আসিফের সাথে তার স্ত্রীর ঝগড়া হয়েছিল। এ সময় তাকে কেউ ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিয়েছে।

মৃত আসিফ সিরাজগঞ্জ কামারখন্দ বাগবাড়ী এলাকার অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম খানের ছেলে। শহিদুল ইসলাম ১৯৮৬-৯০ মেয়াদে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি কামারখন্দ) আসনের এমপি ছিলেন। আসিফ ব্যারিস্টারি পাশ করে সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করছিলেন।

আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, সকালে আসিফের শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাদের খবর দেয় আসিফের অবস্থা ভালো না, তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। পরে সেখানে গিয়ে আসিফকে মৃত দেখতে পাই। আমাদের সন্দেহ আসিফকে মেরে ফেলা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করতে পারে না। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

তবে আসিফের শশুরবাড়ির লোকজন দাবি করেছেন আসিফ আত্মহত্যা করেছে। শুধু তাই নয়; আসিফ মাদকাসক্ত ছিলো বলেও দাবি করেছেন তারা ।

আসিফের শ্যালক সাইমন শাহিদ নিশাদ জানান, চার বছর আগে আসিফ তার বড় বোন সাবরিনা শাহিদ নিশিতাকে প্রেম করে বিয়ে করেন। আসিফের পরিবার এটি মেনে নেয়নি। এজন্য আসিফ কাঁঠালবাগানে শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন। তাদের কোনো সন্তান নেই। আসিফের পরিবার থাকত মিরপুরে।

নিশাদ আরও বলেন, আসিফ ও সাবরিনার মাঝেমধ্যে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া হত। আসিফ মাদকাসক্ত ছিলেন। চার মাস উত্তরায় একটি রিহ্যাবেও ছিলেন তিনি। গতরাতে আবারও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে আসিফ ৯তলার বারান্দা থেকে রেলিংয়ের ওপর দিয়ে লাফিয়ে নিচে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে ভোর সাড়ে ৫টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ চন্দ্র জানান, খবর পেয়ে আমরা বাসায় গিয়ে নিহতের বাবা-স্ত্রীসহ স্বজনদের বক্তব্য শুনি। স্ত্রীর ভাষ্য, ব্যারিস্টার আসিফ নিয়মিতত বিয়ার খেতেন। গতরাতে খেয়েছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। আসিফ রাতে বারান্দায়ই বসা ছিলেন। শেষ রাতে ৯ তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন। আমরা মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে কাজ করছি।

এই বিভাগের আরো খবর