বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫   জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩২   ১৭ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৫১

যুক্তরাষ্ট্র দুটি কোম্পানিকে ভেনিজুয়েলার তেল ইউরোপে পাঠানোর অনুম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  

প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২২  

রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে ইউরোপের বাজারে তেলের যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা সামাল দিতে এবার ভেনিজুয়েলার তেল সরবরাহে সবুজ সংকেত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ দুই বছর আগে তারাই ভেনিজুয়েলার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। খবর রয়টার্স।

আগামী মাস থেকে ভেনিজুয়েলার তেলের চালান ইউরোপে যাবে। ইতালির তেল কোম্পানি ‘এনি এসপিয়া’ ও স্পেনের ‘রেপসল এসএ’ ইউরোপে তেল সরবরাহ করবে। যুক্তরাষ্ট্র কোম্পানি দুটিকে এরই মধ্যে সবুজ সংকেত দিয়েছে। ফলে ইউরোপে তেল নিতে কোনো বাধার মধ্যে পড়বে না ভেনিয়েলা।

এ বিষয়ে জানেন এমন পাঁচ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে এ খবর জানিয়েছেন। তবে এ জন্য ভেনিজুয়েলা নগদ অর্থ পাবে না। ঋণ পরিশোধ করতে তারা তেল দেবে।
অথচ যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কারণে এই ব্যবস্থাতে এতদিন তেল সরবরাহ বা বিক্রি করতে পারেনি তারা। তারা ঋণের বদলে ভেনিজুয়েলার তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

তবে এনি এসপিয়া ও রেপসল যে পরিমাণ তেল পাবে, সেই অঙ্ক খুব বেশি বড় নয় বলে জানান এক কর্মকর্তা। বিশ্ববাজারে তেলের দামে এর তেমন একটা প্রভাব পড়বে না। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ভেনিজুয়েলার তেল আবার ইউরোপ যাত্রার পথ সুগম হওয়া নিঃসন্দেহে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর জন্য দারুণ সুখবর।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গেল মাসে এক চিঠিতে ইতালি ও স্পেনের ওই দুই কোম্পানিকে ভেনিজুয়েলার তেল আমদানির অনুমতি দেয়।

ভেনিজুয়েলার ক্রুড জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর ইউরোপের নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বাইডেন প্রশাসন । একই সঙ্গে ভেনিজুয়েলা চীনের কাছে তেল বিক্রির পরিমাণ হ্রাস করবে বলেও জানা গেছে।

ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ-র সঙ্গে ‌ইউরোপের ওই দুটি কোম্পানির যৌথ ব্যবসা রয়েছে। তারা এখন অপরিশোধিত ঋণ এবং না-দেওয়া লভ্যাংশ হিসেবে ভেনিজুয়েলার কাছ থেকে তেল নিতে পারবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র একটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে বলে জানান এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ভেনিজুয়েলার কাছ থেকে যে তেল নেয়া হবে, সেটা শুধু ইউরোপেই যাবে। অন্য কোথাও বিক্রি করা যাবে না।’ ফলে তেল বিক্রি হলেও পিডিভিএসএ কোনো অর্থ হাতে পাবে না বলে বিশ্বাস ওয়াশিংটনের। এই বিনিময় হবে সম্পূর্ণ ‘ক্যাশ ফ্রি’ বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

ভেনিজুয়েলা অর্থের বিনিময়ে চীনের কাছে তেল বিক্রি করে আসছে। এদিকে, চীন যেহেতু রাশিয়ার উওপর আরোপ করা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় সই করেনি ,তাই তারা দেশটির কাছ থেকে তেল ও গ্যাস কেনা অব্যাহত রাখে। চীন যে এখন রাশিয়ার থেকে কম মূল্যে তেল-গ্যাস পাচ্ছে, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।

এনি ও রেপসল গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওই অনুমতি পায় বলে জানায় রয়টার্স। এ বিষয়ে কথা বলতে কোম্পানি দুটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেনি রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত দেশটির তেলের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণরূপে তুলে নেয়ার পথ প্রশস্ত করল বলে আশা প্রকাশ করেছেন ভেনিজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ। তিনি এক টুইটে লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই পাল্টে যাওয়া অবৈধ ওই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি প্রত্যাহারের পথ সুগম করবে বলে আশা করছি। ওই নিষেধাজ্ঞার কারণে আমাদের পুরো দেশ ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

বাইডেন প্রশাসন গত মার্চ মাস থেকেই কারাকাসের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু করে। ওই আলোচনার ফলস্বরূপ ভেনিজুয়েলা এরই মধ্যে অন্তত ১০ জন মার্কিন নাগরিককে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে এবং বিরোধী দলের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে মাদুরো এখনো আলোচনার টেবিলে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে মত দেননি। তাই কবে নাগাদ আলোচনা হতে পারে তা জানা যায়নি।

এই বিভাগের আরো খবর