শুক্রবার   ১৬ মে ২০২৫   জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩২   ১৮ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৮১

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে সে

নিজস্ব প্রতিবেদক  

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২২  

শ্রীলঙ্কার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে সে দেশের সেনারা তার সরকারি বাসভবন থেকে সরিয়ে নিয়েছে। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রধান ফটক ভেঙে দেওয়ার পর মঙ্গলবার (১০ মে) শ্রীলঙ্কার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে বাসভবন থেকে ভারী অস্ত্রসহ সেনারা সরিয়ে নেয়। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া। 

মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর ‘টেম্পল ট্রিস’ বাসভবনে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে মাহিন্দা রাজাপাকসে তার নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন। সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ভোরের আগে সেখানে অপারেশন চালিয়ে রাজাপাকসেকে একটি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় এক দিনের সহিংস বিক্ষোভে একজন আইনপ্রণেতাসহ পাঁচজন নিহত এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছেন।

এর আগে সোমবার (৯ মে) পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই রাজাপাকসের কুরুনেগালার বাসায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এটি রাজাপাকসের পৈতৃক নিবাস, যা কলম্বো থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এর আগে সরকারবিরোধীরা শ্রীলঙ্কার মোরাতুয়ার মেয়র সমন লাল ফের্নান্দো এবং ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেন। তারা হলেন সনথ নিশিন্থ, রমেশ পাথিরানা, মাহিপালা হেরাথ, থিসা কুতিয়ারাচ্চি ও নিমল ল্যাঞ্জা।
এদিকে শ্রীলঙ্কায় সরকারপন্থি ও সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের এক এমপিও রয়েছেন। এ ছাড়া সংঘর্ষে দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের বরাতে সোমবার (৯ মে) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, কলম্বোর সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১৩৮ জন আহত ব্যক্তি হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন।
চরম আর্থিক ও রাজনৈতিক সংকটে টালমাটাল শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ক্রমেই যেন আরও জটিল হয়ে উঠছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে সোমবার (৯ মে) সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। দিনভর বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকার সমর্থকদের হামলার পর, সন্ধ্যার দিকে এর পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সোমবার (৯ মে) শ্রীলঙ্কাজুড়ে কারফিউ জারি করা হলেও তা উপেক্ষা করেই দিনভর রাস্তায় বিক্ষোভ চলে। তীব্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করেন। এবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে ভুগছে দেশটি। ভয়াবহ বিদ্যুৎবিভ্রাটের কবলে সাধারণ মানুষ। এর প্রতিবাদেই এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে সাধারণ মানুষ।
 

এই বিভাগের আরো খবর