মঙ্গলবার   ১৯ আগস্ট ২০২৫   ভাদ্র ৩ ১৪৩২   ২৪ সফর ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৩৬১

কিসের করোনা, বন্ধুত্বের বন্ধন কোন বাঁধাই মানেনা!

আবু নাঈম নোমানঃ

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০  

ডঃ এ.পি.জে আব্দুল কালাম স্যারের জনপ্রিয় উক্তি "একটি বই একশোটি বন্ধুর সমান কিন্তু একজন ভালো বন্ধু পুরো একটি লাইব্রেরির সমান

জীবন চলার পথে আপনার সামনে দুই প্রকার বন্ধু আসবে। সৎ বন্ধু ও অসৎ বন্ধু। সাদা মনের সৎ বন্ধু কখনো নিজ স্বার্থের ঝুলির দিকে তাকায় না। অসৎ ও বিকৃত মনের বন্ধু বুকে বুক মেলায় ঠিকই। কিন্তু তার এক হাত পিঠের ওপর রাখলে অন্য হাতে থাকে সুবিধাভোগী অস্ত্র। তার বিশ্বাস ঘাতক বন্ধুত্বের অস্ত্র যেকোনো ভালো মনের চিন্তার দীর্ঘ পথ সীমিত করে থামিয়ে দেয়। অনেক সময় পরস্পরের প্রতি ভুল-বোঝাবুঝিতে অটুট বন্ধুত্বে ফাটল ধরার দুঃসময় সামনে এসে দাঁড়ায়। সেই মুহূর্তে সমসাময়িক খোলামেলা আলোচনা সাপেক্ষে বন্ধুত্বের সুন্দর সম্পর্কে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়।

আসলে বন্ধুত্বের কোনো বয়স নেই। যে কোন ধর্মের, বর্নের, ভিন্ন মতের লোক আপনার বন্ধু হতে পারে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সততা, সহমর্মিতা, সহযোগিতা, সমবেদনা, মনের অনুভূতি প্রকাশ, ভয়কে জয় করায় নির্ভরশীল সঙ্গী হলো বন্ধু। বন্ধুত্বের স্থায়িত্ব নির্ভরশীল সৎ ও মননশীল চিন্তার ওপর। যার বন্ধু আছে সে কখনো গরিব নয়, কথাটির বিপরীতে যুক্তি দাঁড় করানো বিন্দু মাত্র সুযোগ নেই।

যাই  হোক ছবির কথায় আসি,  দীর্ঘ প্রায় সাত মাস করোনার কারনে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যে যার মত যার যার গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করে। কিন্তু মন টানছে বন্ধুত্বের বন্ধনে, আড্ডা মেলাতে। মনের ভিতর নানান প্রশ্ন ভর করে, কবে-কখন খুলবে প্রাণের ক্যাম্পাস?

কবে দেখা হবে প্রিয় মানুষগুলোর সাথে? কলেজের গেটে কিংবা মাঠে আবার আড্ডা জমানোর সময়টা কি ফিরে আসবে?

বিভিন্ন প্রশ্ন আর চিন্তা ভাবনার মধ্য দিয়ে কেটে গেল দীর্ঘ প্রায় ৭মাস। অনেকেই বাড়িতে থেকে বিরক্ত হয়ে ছুটে এসেছে ব্যস্ত নগরী ঢাকার বুকে। আর ঢাকাতে অবস্থান করে বন্ধুদের সাথে দেখা না করলে কি চলে!

হ্যাঁ,  তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের গেটে সাক্ষাৎ করতে আসেন ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজের ইংরেজি (২০১৬-১৭) বিভাগের শিক্ষার্থী। কারো মাঝেই নেই সামাজিক দূরত্ব,  মুখে নেই মাস্ক!!  তাহলে আমরা ধরেই নিতে পারি বন্ধুত্বের কাছে করোনাও হার মেনে যায়!

নাহ, কখনোই না। করোনার ভয় থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ সময় পরে দেখা হওয়ায় খুশীতে আত্মহারা হয়ে খানিকের জন্য ভুলে গেলেন ভয়াবহ মহামারী করোনা (কভিড-১৯)এর কথা। এক বন্ধু অন্য বন্ধুকে জড়িয়ে একটু কোলাকুলি করে, কুশলাদি বিনিময়ের সময় গায়ে গা লাগিয়ে বসা। ঘন্টা দুয়ের জন্য ফিরে পাওয়া করোনা পূর্ববর্তী সময়ে।

উইলিয়াম শেক্সপিয়রের একটা উক্তি দিয়ে শেষ করতে চাই। তিনি বলেন, "আমার ভালো বন্ধুদের কথা মনে করে আমি যতোটা সুখী হতে পারি, অন্য কোনোভাবে ততোটা সুখী হতে পারি না"।

স্রষ্টার কাছে প্রার্থণা  করি প্রতিটা মানুষের বন্ধুত্বের বন্ধন অটুট থাকুক। বন্ধুদের সঙ্গে সবার বৈশ্বিক মহামারী পরবর্তী সময়টা খুব ভালো কাটুক, এই প্রত্যাশাই করি।
 

এই বিভাগের আরো খবর