বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫   বৈশাখ ৩১ ১৪৩২   ১৭ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৪৩

হারাম উপার্জন সব বরকত ছিনিয়ে নেয়

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০১৮  

মানব জীবনে হারাম উপার্জনের প্রভাব অত্যন্ত মারাত্মক এবং এর পরিণতি সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে বহুবার সতর্ক করা হয়েছে।
হারাম উপার্জনের ফলে আল্লাহতায়ালা মানবজীবন থেকে সব ধরনের বরকত ছিনিয়ে নেন। রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। আর্থিক অভাব অনটন ও সংকট নেমে আসে।

আধ্যাত্মিকতার জন্য হালাল খাবার হচ্ছে সর্ব প্রথম ধাপ। সুতরাং মানুষকে আধ্যাত্মিকতা অর্জন করতে হলে অবশ্যই হালাল রুজি-রোজগার করার পাশাপাশি তাকে অবশ্যই পবিত্র ও হালাল খাদ্য খেতে হবে। 

পবিত্র কুরআন-হাদিস এবং নবী-রাসুল ও ইসলামি স্কলাররা সর্বদা হালাল উপার্জন ও হালাল খাদ্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
তাদের অভিমত হলো- সর্বদা হালাল রুজি অর্জন করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। কেননা তা মানুষকে ধার্মিক হিসেবে বাঁচতে সাহায্য করে।
কুরআনে সুরা মায়েদার ৮৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ওই সব সুস্বাদু বস্তু হারাম করো না, যেগুলো আল্লাহ তোমাদের জন্যে হালাল করেছেন এবং সীমা অতিক্রম করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।

এই আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে এসেছে, একদিন হজরত মুহাম্মদ (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশ্যে কিয়ামতের বর্ণনা প্রসঙ্গে বক্তব্য দিয়েছিলেন। সাহাবিরা রাসুলে খোদার বর্ণনা শুনে এতো বেশি আলোড়িত হলেন এবং কান্নাকাটি করলেন যে, সিদ্ধান্তই নিয়ে নিলেন ভালো খাবার দাবার ছেড়ে দেবেন। আরাম-আয়েশ, নিজের সুখ শান্তিকে হারাম করে ফেলবেন। রাতগুলো ইবাদত-বন্দেগিতে কাটিয়ে দেবেন। দিনের বেলা রোজা রাখবেন, দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী সঙ্গ ত্যাগ করবেন এমনকি এই সিদ্ধান্তের ওপর তারা স্থির অবিচল থাকবেন বলে শপথও নিয়েছিলেন।  

নবী করিম (সা.) এই খবর শুনতে পেয়ে লোকজনকে মসজিদে সমবেত করে বললেন, আমাদের দ্বীন ইসলাম সংসারত্যাগী বৈরাগ্যদের দ্বীন নয়। আমি আল্লাহর রাসুল হওয়ার পরও ঘর এবং পরিবারের কাছ থেকে পৃথক হইনি। তাদের সঙ্গে খাবার খাই, আমার স্ত্রীদের সঙ্গে দাম্পত্য জীবনযাপন করি। জেনে রেখো, যে আমার পদ্ধতির বাইরে যাবে সে মুসলমান নয়।

সুরা মায়েদার ৮৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা যেসব বস্তু তোমাদেরকে দিয়েছেন, তন্মধ্য থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু খাও এবং আল্লাহকে ভয় করো, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী।

বর্ণিত আয়াতে পার্থিব জগতের হালাল ভোগ্যবস্তু থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে নিষেধ করার পাশাপাশি হালাল এবং পবিত্র বিষয়গুলো ব্যবহার করার আদেশ দিয়ে বলা হচ্ছে- ভেবো না পার্থিব জগতের কল্যাণগুলোকে কাজে লাগানো অপছন্দনীয় কিংবা নিন্দনীয় কোনো কাজ। বরং পার্থিব জগতের সব নিয়ামতই আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্যে দেওয়া রিজিক। তিনিই এগুলো তোমাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন। অতএব তোমরা এসব সুযোগ-সুবিধাকে নিজেদের কল্যাণে ব্যবহার করবে- এটাই সঙ্গত।