রোববার   ১১ মে ২০২৫   বৈশাখ ২৮ ১৪৩২   ১৩ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৫৯৬

শিগগিরই বাংলাদেশে চালু হচ্ছে ফারওয়া ফ্যাশনের আরএনডি

সাজ্জাদ হোসেন

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০১৯  

বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পেরও উন্নয়নের লক্ষ্যে ও চামড়া শিল্পকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে ‘বাংলাদেশ লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার, প্রিন্ট টেক বাংলাদেশ এবং গার্টেক্স-বাংলাদেশ এক্সপো’র আয়োজন করেছে লিমরা ট্রেড ফেয়ারস অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে তিনদিন ব্যাপী এই প্রদর্শনী চলে। প্রদর্শনীতে শুধু দেশীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বিশ্বের ১৩টি দেশের দুইশর বেশি পণ্য নিয়ে ৩৩৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাত চামড়া ও চামড়াজাত নানা পণ্যের বেশ সুনাম রয়েছে বিশ্ববাজারে। রপ্তানির দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও এ খাত নিয়ে খুব একটা আলোচনা সবসময় হয় না।

প্রদর্শনীর বিষয়ে  প্রসঙ্গে ফারওয়া ফ্যাশন হাউজ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর সিইও তারেক হুসাইন বলেন, চামড়া শিল্পের প্রধান কাঁচামাল চামড়া বাংলাদেশেরই। গুণে মানে এটি বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় একটি চামড়া। যার ১০০% চামড়া রপ্তানি হয়। অথচ এই চামড়া দিয়ে  সুজ, ব্যাগ, গার্মেন্ট এবং অন্যান্য লেদার প্রোডাক্ট বাংলাদেশে তৈরি করা গেলে এবং তা বিদেশে রফতানি করা হলে চামড়া সেক্টরের কলেবর বৃদ্ধি পাবে বহুগুণে এবং এটি বাংলাদেশের স্থায়ী একটি শিল্প হিসেবে জাতীয় অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখা সম্ভব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। দেশের আয়তন ছোট হলেও রয়েছে অপার সম্ভাবনা। আমাদের জনশক্তি উন্নয়নশীল দেশে তাদের শ্রম ও মেধা দিয়ে সেই দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত সময়ে আমাদের দেশকে আরও সমৃদ্ধি করা সম্ভব। আমাদের দেশের চামড়াজাত পণ্য শতভাগ রপ্তানি হচ্ছে।  ইউরোপ- আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের পণ্যকে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্ষণীয় চামড়াজাত পণ্য হিসেবে বিশ্বের বুকে তুলে ধরে।

তারেক হুসাইন বলেন, আমাদের দেশের চামড়া পণ্য প্রস্তুতকারক অধিকাংশ  কোম্পানিগুলো চামড়া গুলোর সঠিক ব্যবহার করতে পারছে না। তাদের টেকনোলোজি ও দক্ষতার অভাবেই তাই সকলে পণ্য উৎপাদনের থেকে চামড়া রপ্তানিতে মনযোগী। এর জন্য প্রয়োজন রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D)। বাংলাদেশের হাতে গোনা ৪-৫ টি কোম্পানি ছাড়া বাকি সকল কোম্পানি - কারখানার রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D) নেই। যার ফলাফল হিসেবে আমরা দেখছি বিভিন্ন কোম্পানি-কারখানে কয়েক বছর পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আবার কিছু কারখানায় বছরের পর বছর চেষ্টা করেও প্রোডাকশনে যেতে পারে না। 

তিনি আরও বলেন, বিদেশী ক্রেতারা যখন আমাদের চামড়াপণ্য কিনতে আসে তারা নানান শর্ত আরোপ করে। যেমন- কারখানা বিল্ডিং কি রকম  হতে হবে, পরিবেশ কি রকম  হতে হবে, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শ্রমিদের কিছু মৌলিক নিয়ম মেনে চলা, প্রোডাকশনে পণ্যের মান ঠিক রাখা, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পণ্য সামগ্রী তৈরি করা। বাংলাদেশের অনেক সময় অনেক  কোম্পানি- কারখানা এই শর্ত গুলো পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বিদেশী ক্রেতাদের হারাচ্ছে। 

ফারওয়া ফ্যাশন হাউজের এর সিইও তারেক হুসাইন বলেন, ফারওয়া ফ্যাশন হাউজ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর লক্ষ্য হল, কিভাবে দেশীয় চামড়াজাত পণ্যের কোম্পানি -কারখানা গুলো বিদেশী ক্রেতাদের সকল শর্ত পূরণ করে ইউরোপ, আমেরিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় মত দেশে যেন রপ্তানি করতে পারে  । তাদের বাজার দখল করে এই শিল্পের রপ্তানি আরও বৃদ্ধি করা। শিক্ষা যেমন একটি জাতির মেরুদণ্ড, তেমনি  রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D) হচ্ছে অর্থনীতির মেরুদন্ড। ইতিমধ্যে ফারওয়া ফ্যাশন হাউজ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট চায়নার সাংহাইতে  রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D) নিয়ে কাজ করছে। তবে দ্রুত সময়ে  বাংলাদেশেও এর কার্যক্রম শুরু করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা অতি জরুরি। কারণ রাষ্ট্রীয় - সরকারের সহযোগিতা ছাড়া চামড়া শিল্পকে বিশ্বে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা আশা করি সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলো সহযোগিতা করবে। তবেই চামড়া শিল্পকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে ফারওয়া ফ্যাশন হাউজ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। 


উল্লেখ্য, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ‘বাংলাদেশ লেদার অ্যান্ড ফুটওয়ার এক্সপো’, প্রিন্ট টেক বাংলাদেশ’ এবং ‘গার্টেক্স-গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল মেশিনারি এক্সিবিশন’ শিরোনামে এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর নিয়মিত আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘লিমরা ট্রেড ফেয়ারস এন্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড’। এবছর প্রথমবারের মতো লিমরার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এই চামড়া শিল্পের অন্যতম সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রদর্শনীটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল হালিম। গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল মেশিনারি প্রদর্শনীতে গার্মেন্টস টেকনোলজি, টেক্সটাইল টেকনোলজি, নন-উইভেন টেকনোলজি, একসেসরিস মেকিং মেশিনারী, ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি ইক্যুইপমেন্টের পাশাপাশি লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার প্রদর্শনীতে লেদার অ্যান্ড লেদার গুডস, কেমিকেলস অ্যান্ড একসেসরিস এবং প্রিন্ট টেক বাংলাদেশে প্রিন্টিংএর নানান দিক প্রদর্শিত হয়।

এই বিভাগের আরো খবর