মঙ্গলবার   ২০ মে ২০২৫   জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩২   ২২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৭২

নির্দেশনা নেই বিএনপির, তৃণমূলে হতাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৮  

এ মুহূর্তে অনেকটাই দিশাহারা বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বর্তমানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন। ফলে বিএনপি চলছে দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তে। আর সিদ্ধান্তগুলো আলোচনা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে। কিন্তু যাদের দিয়ে আন্দোলন বা নির্বাচনের সুফল ঘরে তুলতে হবে, বিএনপির সেই তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই বুঝতে পারছে না কী করতে হবে। আবার নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে কেন্দ্রে মতবিরোধও রয়েছে। এর ফলে কর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, সুনসান নীরবতার মধ্য দিয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর মতো এবার আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ, নাকি ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হবে—এ নিয়ে কেন্দ্র থেকে পরিষ্কার কোনো বার্তা পৌঁছেনি বিএনপির তৃণমূলে। এ অবস্থায় দ্রুত সিদ্ধান্ত চায় বিএনপির তৃণমূল।

জানা গেছে, বিএনপির প্রার্থী বাছাই এবং নির্বাচনী ইশতেহার প্রায় চূড়ান্ত আছে। তারেক রহমানের তত্ত্বাবধানে প্রার্থী বাছাইয়ের কার্যক্রম মূলত শেষ হয়েছে।

বিএনপি নেতারা বলেছেন, চলতি সপ্তাহেই এই ধোঁয়াশা কেটে যাবে।  শনিবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব বৈঠকে নির্বাচনে তফসিল পেছানো ও খালেদা জিয়ার মুক্তির পন্থা বের করতেই বেশি মনোযোগী হবেন নেতারা।

কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, খালেদা জিয়ার সঙ্গে আজকালের মধ্যে দেখা করার চেষ্টা করবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা। এর পরই দলের সিদ্ধান্ত আসবে। অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বেশির ভাগ সদস্য নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

অন্যদিকে শীর্ষ দুই নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নির্বাচনে যাওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন দলকে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। বিষয়টি নিয়ে আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হবে। শেষ দুটি বৈঠক হবে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আর প্রথম বৈঠকটি হবে মতিঝিলে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের চেম্বারে।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তফসিল পেছানোর দাবিতে আরো কয়েক দিন আন্দোলনের মাঠে থাকবে বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের দলগুলো। সাত দফার মূল দাবিগুলো থেকে সরে এ দুই দফায় তাদের আন্দোলন চলবে কয়েক দিন।

দলের নেতারা বলছেন, সাত দফার মূল দাবি যেহেতু মানা হয়নি, তাই খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তফসিল পেছালে তাদের নির্বাচনের পথ খুলবে। গতকাল রাজশাহীর সমাবেশেও এই সুরে কথা বলেছেন নেতারা।

তবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সরকারের কাছে যদি আমরা এভাবে আত্মসমর্পণ করি তাহলে তো হলো না। কারণ সরকার সাত দফার কোনোটাই তোয়াক্কা করে না।’

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য ও সদর আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী লুৎফর রহমান কাজল বলেন, ‘কেন্দ্র আমাদের মতামত নিচ্ছে আন্দোলন করব, নাকি নির্বাচন করব। বেশির ভাগ বলছেন, খালেদার মুক্তি ছাড়া যাওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।’

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নীরবতা : এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির প্রথম দিন যেমন জমজমাট ছিল, ঠিক তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। নয়াপল্টনের এই কার্যালয়ের সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। সেখানে দলের কয়েকজন নেতাকর্মী ছিল। বিএনপির কার্যালয়ে নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

এই বিভাগের আরো খবর