শুক্রবার   ১৬ মে ২০২৫   জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩২   ১৮ জ্বিলকদ ১৪৪৬

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৩০

খালেদা জিয়া-ড. কামাল সাক্ষাৎ অনিশ্চিত

তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০১৯  

খালেদা জিয়া ও ড. কামাল হোসেনবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও মত পাল্টে ফেলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। গণফোরাম সূত্রের খবর, কারাবন্দি এই নেত্রীকে দেখতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ৭ দিন আগে (২০ অক্টোবর) সংবাদকর্মীদের সামনে ‘সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে যাবেন ফ্রন্টের নেতারা’, আ স ম রব আড়ম্বরে এমন কথা বললেও রবিবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও অগ্রগতি আসেনি ঐক্যফ্রন্টে। তবে কামাল হোসেন না গেলেও বাকি কয়েকজন শীর্ষ নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখতে যাবেন বলে আশাবাদী গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া।

রেজা কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা জাস্ট কয়েকদিন অপেক্ষা করছি। বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবার সাক্ষাৎ করে এসেছেন। কারাবিধি অনুযায়ী সময় পেলেই আমরা যাবো।

কামাল হোসেন যাবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘স্যারের একটা প্রবলেম দেখা দিয়েছে, আমরা দেখছি কতদিন লাগে। তার বাম হাঁটুতে সমস্যা আছে, ব্যাংককে বা সিঙ্গাপুরে এটার চিকিৎসা করিয়ে নেবো।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চারটি শরিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০ অক্টোবর ফ্রন্টের সভায় কামাল হোসেনসহ নেতারা খালেদা জিয়াকে দেখে এসে দেশবাসীকে তার বর্তমান অবস্থা জানাবেন, এমন প্রস্তাব তুলেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ওই প্রস্তাবের কথা ফোনে জানানো হয় ওই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও। তিনিও এতে সম্মতি দেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বিষয়টি গণমাধ্যমে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত হয় সেদিন। কিন্তু এর দুদিন পার হতেই ২২ অক্টোবর মত পাল্টান ড. কামাল হোসেন। জানানো হয়, তিনি অসুস্থ।

জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ রবিবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের শরীর খুব খারাপ, তিনি যাবেন না।’

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, গত ২৩ অক্টোবর কামাল হোসেন অসুস্থ হওয়ার খবরটি পাওয়ার পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু গিয়েছিলেন তাকে দেখতে। সূত্রের দাবি, মূলত সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করাই ছিল টুকুর লক্ষ্য। যদিও কামাল হোসেন তাতে রাজি হননি।

ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা বলছেন, ২০ অক্টোবরের বৈঠকে যখন বিষয়টি উত্থাপিত হয়, তখন কামাল হোসেন রাজি হন। পরে ঠিক কেন মত পাল্টালেন তার পরিষ্কার কোনও ব্যাখ্যা এখনও তারা পাননি।

ফ্রন্টের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ, চলতি মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে করা বাংলাদেশের চুক্তিগুলোর বিষয়ে কামাল হোসেন মৌনতা অবলম্বন করেন। ফ্রন্টের আগের বৈঠকে বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বিষয়টি তুলে বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তির বিষয়ে দলে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরতে হবে। ওই আহ্বানও কানে তোলেননি কামাল হোসেন।

ফ্রন্টের প্রভাবশালী তিন নেতার ভাষ্য, হতে পারে শেষ বয়সে রাজনৈতিকভাবে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ার আশঙ্কায় কামাল হোসেন বিএনপি চেয়ারপারসনকে সশরীরে দেখতে রাজি হচ্ছেন না। বিশেষ করে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিষয়টি সহজভাবে নাও গ্রহণ করা হতে পারে। একইসঙ্গে প্রভাবশালী একাধিক প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সম্ভাব্য মনোভাবও তাকে উদ্বিগ্ন করে থাকতে পারে। সে কারণেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ থেকে দূরে থাকতে চাইছেন কামাল হোসেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ব্যাখ্যা অবশ্য ভিন্ন। তার মত, খালেদা জিয়া গ্রেফতার হয়েছেন দেড় বছরের বেশি সময় হয়েছে। কামাল হোসেন হয়তো ভাবছেন, কী জবাব দেবেন তার সামনে গিয়ে?

তিনি বলেন, ‘ইনফ্যাক্ট আমিও ভাবছি, আমি যখন গত বছরের ফেব্রুয়ারির মাসের এক তারিখ দেখা করেছিলাম, তখন ম্যাডামকে বলেছিলাম আপনাকে ম্যাক্সিমাম এক মাস থাকতে হবে, মুক্ত হয়ে যাবেন। কিন্তু কী ঘটলো, কী জবাব দেবো আমরা?

এই বিভাগের আরো খবর