বুধবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩২   ০৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৯

দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ—বিশ্বব্যাংক রিপোর্ট

তরুন কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২৫  

বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হবে বাংলাদেশ। জনঘনত্ব, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, তীব্র বন্যা এবং উপকূলীয় লবণাক্ততা—সব মিলিয়ে দেশের লাখো মানুষের জীবন–জীবিকা গুরুতর হুমকির মুখে পড়বে।

 

সোমবার ঢাকায় ‘ঝুঁকি থেকে স্থিতিস্থাপকতা: দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের অভিযোজনে সহায়তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ চরম তাপমাত্রার ঝুঁকিতে পড়বে, আর বড় একটি অংশ ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়তে পারে।

 

উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার বিস্তার ইতিমধ্যেই কৃষি, পানীয়জলের উৎস এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র পরিবারগুলো, যারা আর্থিক অভাবে অভিযোজন ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

 

পরিবার–ব্যবসার ওপর বেশি চাপ

 

বিশ্বব্যাংক বলছে, জলবায়ু অভিযোজনের সবচেয়ে বড় চাপ পড়েছে পরিবার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর। দক্ষিণ এশিয়ার তিন-চতুর্থাংশ পরিবার ও প্রতিষ্ঠান আগামী ১০ বছরের মধ্যে জলবায়ুজনিত ধাক্কায় পড়বে। যদিও ৬৩% প্রতিষ্ঠান ও ৮০% পরিবার মৌলিক অভিযোজনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে, তবে এগুলো বেশিরভাগই কম ব্যয়ের সাধারণ সমাধান—উন্নত প্রযুক্তি বা সরকারি অবকাঠামো ব্যবহার কম।

 

জরিপে ভয়াবহ চিত্র

 

বাংলাদেশের ২৫০টি উপকূলীয় গ্রামে পরিচালিত জরিপে দেখা যায়:

  • ৫৭% পরিবার দুর্যোগ–সুরক্ষা অবকাঠামোকে অপর্যাপ্ত বলেছে

  • ৫৬% পরিবার আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে

 

বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রভাব শুধু পরিবেশগত নয়, গভীরভাবে মানবিকও—কারণ জলবায়ু দুর্যোগের আঘাত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর বহুগুণ বেশি পড়ে।

 

সহনশীলতা বাড়াতে বিনিয়োগ জরুরি

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাঁধ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাংলাদেশে বহু প্রাণ রক্ষা করেছে। তবে সরকারি আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে একটি বিস্তৃত নীতি-প্যাকেজ তৈরি করে বেসরকারি খাতকে অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে উৎসাহিত করা প্রয়োজন।

 

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ-ভুটান বিভাগের পরিচালক জ্যঁ পেসমে বলেন,

“বাংলাদেশের সহনশীলতা বাড়ছে, কিন্তু ঝুঁকিও দ্রুত বাড়ছে। তাই আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ প্রয়োজন।”

 

এ ছাড়া প্রধান অর্থনীতিবিদ ও প্রতিবেদনের সহ–লেখক সিদ্ধার্থ শর্মা বলেন,
“জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশ যেমন উদাহরণ, তেমনি ভবিষ্যতের বড় পরীক্ষার ক্ষেত্রও।”

 

এই বিভাগের আরো খবর