কে এই স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ডা. খুরশীদ আলম?
আকিবুল ইসলাম হারেছঃ
প্রকাশিত : ০৪:৪৭ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২০ শুক্রবার

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সদ্যবিদায়ী মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার পর থেকে নতুন মহাপরিচালক কে হচ্ছেন তা নিয়ে স্বাস্থ্য সেক্টরে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছিল। সম্ভাব্য মহাপরিচালক হিসেবে যে পাঁচ-সাতজনের নাম উঠে আসে তাদের প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় তো দূরের কথা শেষজনের মধ্যেও নতুন মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ (এবিএম) খুরশীদ আলমের নামটি ছিল না!
বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি এক আদেশ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হলে মহাপরিচালক হিসেবে যার নামটি সর্বাধিক উচ্চারিত হয় তিনি হলেন অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। তাকে মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল!বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে তিনি নিয়োগ পাচ্ছেন মর্মে স্ক্রল প্রচারিত হতে থাকে।
কিন্তু শেষ বিকেলের চমক দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, তার নির্দেশেই শেষ মুহূর্তে এবিএম খুরশীদ আলমকে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি হয়।কুমিল্লা চান্দিনার মাইজখার ইউনিয়নের পানিপাড়া গ্রামের কৃতি সন্তান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক আদেশে ডা. খুরশীদ আলমকে অবিলম্বে নতুন দায়িত্বে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
★এক নজরে ডা. খুরশীদ আলম
জম্ম ও জম্মস্থানঃ
অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ১৯৬১ সালের ৩১ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের পানিপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা-মাতাঃ
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিযুক্ত হওয়া মহাপরিচালক অধ্যাপক খুরশীদ আলমের পিতার নাম আলহাজ্ব মো. মমিনুল হক।তাঁর মায়ের নাম মোসাম্মৎ জাহানারা বেগম।তাঁর বাবা মমিনুল হক পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।সম্প্রতি করোনাকাল সময়ে মমিনুল হক মৃত্যুবরণ করেন।
ডিগ্রি অর্জনঃ
২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) নির্বাচিত কাউন্সিলর হিসেবে যে ৮ জন চিকিৎসক বিজয়ী হন অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম তার মধ্যে অন্যতম। এই চিকিৎসক লন্ডন থেকে দুটি বিষয়ে এফআরসিএস করেছেন। এছাড়া সার্জারিতে তিনি এফসিপিএস এবং এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসক সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের আজীবন সদস্য।
দীর্ঘ কর্মজীবনঃ
তিনি ২২ নভেম্বর ১৯৮৪ ইন সার্ভিস ট্রেনিংয়ের আওতায় সহকারী সার্জন হিসেবে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন।১৯৮৬ সালের ৪ অক্টোবর মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহকারী সার্জন হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন সাব সেন্টার ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহকারী সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও তিনি সহকারী সার্জন হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান এ দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এর সার্জারী বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবেও তিনি কৃতিত্বের সাথে চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করেন। সার্জারি বিষয়ের জুনিয়র কন্সালটেন্ট হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে সিনিয়র কন্সালটেন্ট হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন। সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল এর দায়িত্ব পালন করে এই কৃতি শিক্ষক ও চিকিৎসা কর্মকর্তা অধ্যাপক হিসেবে ২০১৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন।
বর্তমান পেশাঃ
১০ম বিসিএস এর এ দক্ষ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বাস্থ্য অধিদফতরের ২৭তম মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন।তিনি সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় কর্মকর্তা।কর্মকর্তা।