বরিশালে পুলিশ কমিশনার নির্দেশ অমান্য করে ফের দেহব্যবসা শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
প্রকাশিত : ০৯:০৮ পিএম, ৪ জুলাই ২০২০ শনিবার

সর্বনাশা কারোনাভাইরাসে সারাবিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলছে।বাংলাদেশে দিনের পর দিন আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে,বরিশাল লঞ্চঘাট, পোর্টরোড, বিউটি রোড সহ বেশ কিছু স্থানে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে অবাধে জমজমাট দেহব্যবসা।এই সব দেহব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহ বধূরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বরিশাল মহানগরীর ছোট বড় মিলে কয়েকটি আবাসিক হোটেলে এই ধরনের অনৈতিক কাজ চলছে। এসব আবাসিক হোটেলে প্রতিদিন যৌন কর্মী সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত এবং রাতের বেলায় আবারও অন্য গ্রুপ এসে পরের দিন সকাল পর্যন্ত দেহব্যবসা করে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবাসিক সকল হোটেলে অবৈধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করার ঘোষনা দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।মেট্রোপলিটন পুলিশের নাকের ডগায় এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছে গুটি কয়েকজন পতিতা ব্যবসায়ী।একটি সূত্র দাবি করছে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এই দেহ ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে
সরেজমিনে দেখা যায়, আজিজ ওরফে পতিতা আজিজের রয়েছে ৫টি হোটেল,তার ভিতর মহসিন মার্কেটের ভিতরে হোটেল ঝিঁনুক,হোটেল ভোলা, পোর্টরোড সি-প্যালেজ , হোটেল স্বাগতম ও হোটেল বরগুনা। এই ৫টি হোটেলে আবাসিক সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে আজিজ ওরফে পতিতা আজিজ।
অপরদিকে পোর্টরোডে হোটেল চিল নিয়ন্ত্রণ করে আল আমীন।
এদিকে বিউটি রোডে পতিতা ব্যবসায়ী মনিরের রয়েছে ৫টি হোটেল। প্রতিটি হোটেল মনির তার শ্যালক আল আমিনকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করায়। তার ভিতর বিউটি রোডের গলির ভিতর হোটেল পায়েল,হোটেল বন্ধুজন,হোটেল গালিব,হোটেল পাতাহাটসহ বেশ কিছু হোটেল রয়েছে পতিতা মনিরের।
জানা গেছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব হোটেল চলমান রেখেছে। তাছাড়া পতিতা আজিজ,পতিতা মনির, হোটেল চিলের ইয়াবা আল আমিন, ইসমাইলসহ একাধীক সহযোগী। শুধু পতিতাসহ না তারা ইয়াবাসহ প্রশাসনের হাতে আটক হয়ে একাধিক বার কারাভোগ করেছে।
একাধীক সূত্র জানায়, এসব আবাসিক হোটেলে অনেকেই আবার ভুয়া স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে পাঁচশ টাকায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে কয়েক ঘন্টা অবস্থান করে চলে যায়। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ রয়েছে বিভিন্ন পেশার নারীরা । এসব হোটেলে শুধু মেয়ে না পাওয়া যাচ্ছে হাত বাড়ালেই মাদক ।
অনেক হোটেলের রুম মাদক সেবন ও জুয়ার জন্যও ভাড়া দেয়া হয়ে থাকে। হোটেলের লোকজন মাদকসেবীদের চাহিদা অনুসারে ফেনসিডিল, ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য এনে দেয়।
প্রায়ই সময় প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করেন। তবে বর্তমানে প্রায় ৬/৭মাস যাবৎ কোন অভিযান পরিচালনা করেননি মেট্রোপলিটন পুলিশ।
কেউ কেউ আবার বলছে, করোনাকে পুজি বানিয়ে প্রশাসনের সাথে যোগসাজশ করে হোটেল ব্যবসায়ীরা তাদের অপকর্ম চালিয়ে আসছেন।
স্থানীয় একাধীক ব্যবসায়ী বলেন, করোনা ভাইরাস তো হোটেল থেকেই ছাড়াচ্ছে।কারণ হোটেল গুলোতে তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাছাড়া পতিতা হোটেলে যৌন কর্মী রেখে দেহব্যবসা চালছে। অবাধে চলছে এসব আবাসিক হোটেলে মাদক সেবন ।
এই সব প্রতিটি আবাসিক হোটেলে রয়েছে নানা বয়সের যৌন কর্মী। হোটেল মালিকরা ফ্লিম স্টাইলে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নির্ভয়ে চালাচ্ছে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ।
দেহব্যবসার সাথে জড়িত এক হোটেল মালিকের সঙ্গে আলাপ কালে তিনি জানান, পত্রিকায় নিউজ করলে আমাদের কিছুই হবে না। তার কারণ স্থানীয় প্রসাশন ম্যানেজ করেই সবকিছু চলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কতিপয় অসৎ সাংবাদিকরা এসব হোটেল থেকে নিয়মিত মাসোহারা পায় বলে এসব অপকর্ম গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে না।প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় এসব অনৈতিক ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ বিষয় স্টাফ অফিসার সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আবদুল হালিম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা ভাইরাসের মধ্যেও দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে সকল কিছু খুলে দেয়া হয়েছে।তার মানে এই নয় যে হোটেলগুলো অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকবে।অবৈধ সব সময়ই অবৈধ, সেটা করোনা থাকলেও না থাকলেও।
সহকারী পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে বিএমপি সব সময় জিরো টলারেন্স।সুতরাং এর পরেও যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয় ৫টি পতিতা হোটেলের মালিক আজিজ ওরফে নারীর দালাল আজিজ বলেন, আমরা সব নিয়ম মেনেই এসব ব্যবসা চলমান রেখেছি। তাছাড়া প্রশাসন, সাংবাদিকসহ স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে চলমান রেখেছি। আপনার ও চায়ের দাওয়াত রইলো। সবার মত আপনাকেও দেখবো।