শনিবার   ১০ মে ২০২৫   বৈশাখ ২৭ ১৪৩২   ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

পুরান ঢাকাকে পঞ্চায়েতের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তাপস

মোঃ শফিউল্লাহ

প্রকাশিত : ১০:১৭ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০২০ মঙ্গলবার

 

পুরান ঢাকার নবাবি আমলের ঐতিহ্য, সামাজিক আচার-বিচারের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র বিলুপ্তপ্রায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে শক্তিশালীভাবে ফিরিয়ে এনে সামাজিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি ও নতুন প্রজন্মের নৈতিক অবক্ষয় রোধে কাজ করতে চান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।  

প্রথমবারের মতো মেয়র পদে নির্বাচন করতে এসে নির্বাচনী এলাকা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও নন্দনতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো নিয়ে শুরু থেকেই নিজের ব্যক্তিগত পরিকল্পনার কথা বলে আসছিলেন তাপস।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেয়র পদপ্রার্থী তাপস পুরান ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে পুনরুজ্জীবিত করার অঙ্গীকার করেন। বলেন, ‘শুধু ঢাকাবাসীর কাছে নয়, সারাবিশ্বের কাছে ঢাকার ঐতিহ্য প্রস্ফূটিত করবো।’

পুরান ঢাকার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার আদিরূপ পঞ্চায়েত ব্যবস্থার গোড়াপত্তন সেই নবাবি আমলে। পঞ্চায়েতের প্রধান হলেন সরদার। মূলত এলাকার সবচেয়ে জ্ঞানী ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হতো এই পঞ্চায়েত। যাদের প্রধান কাজ ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং প্রশাসনের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলা।

কালের পরিক্রমায় পঞ্চায়েত তার সেই জৌলুস হারিয়েছে বটে। কিন্তু একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। বর্তমান পঞ্চায়েত কমিটিগুলো আগের মতো হয়তো মহল্লার সালিস-বিচারও করে না। কিন্তু বিভিন্ন উৎসব-পার্বণ বা সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে এর ভূমিকা থাকে। নিজেদের গ্রহণযোগ্যতার কারণেই পঞ্চায়েত নেতারা সামাজিকভাবে অনেক জটিল জটিল সমস্যা সমাধানে করেছেন- এমন বহু উদাহরণ এখনো পুরান ঢাকার মানুষেরা দিয়ে থাকেন।   

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তাপস সেই ঐতিহ্যকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘সুশাসিত ঢাকার আওতায় এতিহ্যবাহী ঢাকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কায়েম করে আমরা সামাজিকব্যাধি মাদককে চিরতরে নিধন করবো। এলাকার মুরব্বি, গুণীজন, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পঞ্চায়েত কমিটির মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক সমস্যা সমাধান করবে। আজকে যখন দেখি একটি বোন ধর্ষিত হয়েছে তখন আমাদের বুকে রক্তক্ষরণ হয়। আমরা নিরাপদ ব্যবস্থা তৈরি করবো। যাতে আমাদের মা-বোনেরা নিরাপদে চলতে পারে।’

এদিন ‘ঐতিহ্যের ঢাকা’, ‘সুন্দর ঢাকা’, ‘সচল ঢাকা’, ‘সুশাসিত ঢাকা’ এবং ‘উন্নত ঢাকা’- ঢাকার উন্নয়ন পরিকল্পনাকে এই পাঁচভাগে ভাগ করে এগোতে চান বলে জানান শেখ ফজলে নুর তাপস। এর বাইরে রয়েছে ঢাকা উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী।

ঢাকা-১০ আসনের তিনবারের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ঢাকার সব নাগরিক তাদের মৌলিক নাগরিক সুবিধা দোরগোড়ায় পাবে। দিনের ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহের সাতদিন, বছরের ৩৬৫ দিন জনগণের জন্য কাজ করবে সিটি করপোরেশন। ডেঙ্গু মশা মহামারি আকার ধারন করার পর কেউ ফগার মেশিন নিয়ে যাবে না। মশা নিধন আমরা দিনের প্রথম দিন থেকে শুরু করব।’

বৃহত্তর পরিসরে জনগণের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে মেয়র পদে লড়ছেন জানিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমাদের নেত্রী নিরলস পরিশ্রম করে অর্থনৈতিক মুক্তি লক্ষ্যে কাজ করছেন। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছেন। স্বপ্ন দেখিয়েছেন একটি উন্নত বাংলাদেশের। তাঁর নেতৃত্বে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বাংলাদেশে রূপান্তরিত হবো। সেই উন্নত বাংলাদেশের প্রয়োজন উন্নত রাজধানী।’

সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাঈনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন।